প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হলে এখন যে সাজা স্থগিত করে তাকে বাসায় থাকার অনুমতি দিয়েছি, তা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। আবার তাকে জেলে যেতে হবে, আদালতে যেতে হবে। আদালতের কাছ থেকে তাকে অনুমতি নিতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকাকে স্থানীয় সময় বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। ওই সাক্ষাৎকারের ভিডিও ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
ভয়েস অব আমেরিকার সাংবাদিক শতরূপা বড়ুয়ার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রশ্ন ছিল, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতির খবর আমরা পাচ্ছি। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি আপনারা কি পুনর্বিবেচনা করবেন?’
জবাবে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়েন শেখ হাসিনা, ‘আমি জিজ্ঞেস করি, পৃথিবীর কোন দেশ সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে পেরেছে? পৃথিবীর কোনো দেশ দেবে? তাদের যদি চাইতে হয়, আদালতে যেতে হবে। আদালতের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। এখানে আমাদের কোনো আদালতের কাজের ওপর কোনো হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগ নেই।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তবে হ্যাঁ যেটুকু করতে পেরেছি তার জন্য, সেটা হচ্ছে, আমার যেটুকু সরকার হিসেবে ক্ষমতা আছে, সেখানে তার সাজাটা স্থগিত করে তাকে বাড়িতে থাকার পারমিশনটা দেওয়া হয়েছে এবং তার চিকিৎসার ব্যবস্থা...। সে নিজেই চিকিৎসা নিচ্ছে এখন। বাংলাদেশের সবচেয়ে দামি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। আর যদি তাদের যেতে হয় বাহিরে, তাহলে এখন যে তাকে আমি বাসায় থাকার পারমিশনটা দিয়েছি, এটা উইথড্রো (প্রত্যাহার) করতে হবে। তাকে আবার জেলে যেতে হবে। এবং কোর্টে যেতে হবে। কোর্টের কাছে আবেদন করতে হবে। কোর্ট যদি রায় দেন, তখন সে যেতে পারবে। এটা হলো বাস্তবতা।’
দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন তিনি। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাবেক খালেদা জিয়াকে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিল। এরপর ছয় মাস পরপর তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার। গত মার্চ মাসে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানো হয়।
সর্বশেষ ১২ সেপ্টেম্বর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এদিকে গত ৯ আগস্ট থেকে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়া। এরই মধ্যে গত দুই সপ্তাহে তাকে শ্বাসকষ্টের কারণে দুই দফায় সিসিইউতে নেওয়া হয়েছিল। গত বছরের জুনে এনজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়।
সবশেষ শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে হঠাৎ করে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে কেবিন থেকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। পরে শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে সন্ধ্যা ৭টা ৫৫ মিনিটে আবার কেবিনে নেয়া হয়।
বিবার্তা/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]