গরুর মাংস ৭৫০ টাকা দরে বিক্রির ঘোষণা
প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০২৩, ১৮:০৫
গরুর মাংস ৭৫০ টাকা দরে বিক্রির ঘোষণা
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ইমরান হোসেন বলেছেন, বাজারে অনেক ধরনের মাংস বিক্রি হয়। আগে যখন সিটি কর্পোরেশন দাম নির্ধারণ করত তখন শুধুমাত্র গরুর মাংসের দাম নির্ধারণ করত না। কারণ মাংস এক রকমের না, অনেক রকমের আছে। আজকে বাজারে সবচেয়ে ভালোমানের গরুর মাংস যে দামে বিক্রি হচ্ছে সেটি আগামীকাল থেকে ৫০ টাকা কম দামে বিক্রি হবে। ভোক্তার ডিজির এই দাবির সঙ্গে আমরা একাত্মতা ঘোষণা করলাম এবং এই বিষয়টি আগামীকাল থেকে অবশ্যই প্রতিপালন করব।


জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেছেন, গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করবে ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন। এটি আগামীকাল থেকেই বাস্তবায়ন হবে।


৩০ জুলাই, রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর আয়োজিত মাংসের মূল্য হ্রাস করে ভোক্তাদের ক্রয়সীমার মধ্যে আনয়নের লক্ষ্যে অংশীজনের অংশগ্রহণে এক কর্মশালায় এই ঘোষণা দেয়া হয়। কর্মশালাটি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন।


ইমরান হোসেন বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এখানকার গ্রামীণ অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি ও ভেড়াসহ অন্যান্য গৃহপালিত প্রাণী। তাই গ্রামীণ অর্থনীতির চালিকা শক্তিকে আরও শক্তিশালী করার জন্য সংশ্লিষ্ট এই খাতের কিছু টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর দেশীয় জাতের গরু কৃত্রিম প্রজননের জন্য ৪ ধরনের সিমেন প্রস্তুত করে। যা হলো- আরসিসি, নর্থ বেঙ্গল গ্রে, শাহীওয়াল ও মুন্সিগঞ্জের। আর এসব জাতের একটা গরু থেকে দুধ উৎপাদন করা সম্ভব নয়। শুধু মাংস উৎপাদনের কাজে ব্যবহার এই জাতের একটা ২ বছরের গরু থেকে ১২০ থেকে ১৫০ কেজি ওজনের মাংস পাওয়া সম্ভব। অপরদিকে দেশীয় গরুর সঙ্গে এসব জাত সংকরায়ণ না করে আমরা যদি ব্রামানের মতো উন্নত জাতের সংকরায়ণ করি তাহলে সমপরিমাণ শ্রম ও ব্যয়ের পরিবর্তে আমরা ২ বছরের একটা গরু থেকে ২৫০ থেকে ৩০০ কেজি মাংস পেতে পারি। এই একটা মাত্র পদক্ষেপেই মাংসের উৎপাদন খরচ অনেকাংশে কমানো সম্ভব। যা সরাসরি মাংসের মূল্য হ্রাসে সাহায্য করবে।


তিনি বলেন, কৃষকের মার্কেট গড়ে তুলতে হবে। কারণ খামারে উৎপাদিত দুধ ও মাংসসহ অন্যান্য পণ্য উৎপাদনের পর একজন ভোক্তার হাতে পৌঁছাতে তা ৩-৪ হাত বদলি হয়। আর এসব পণ্য সরাসরি খামারিদের হাত থেকে ভোক্তার হাতে পৌঁছাতে পারলে মাঝখানের ২-৩ জন মধ্যস্বত্বভোগীকে অপসারণ করা সম্ভব। আর তাতে পণ্যের মূল্য হ্রাস পাবে এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের বিভিন্ন রকম দৌরাত্ম্য কমে আসবে। এতে করে খামারিরা উপকৃত হবে।


এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন হাত ঘুরে পশুর মাংস যখন ভোক্তার কাছে আসে, তখন এই কয়েকটি ধাপের জন্য মাংসের দাম বেড়ে যায়। তাই মাঝখানের লোকদের সরাতে হবে। উন্নত জাতের বীজ দিতে পারলে গরুর উৎপাদন বাড়বে এবং মাংসের উৎপাদনও বাড়বে। এছাড়া কোরবানি এবং অন্যান্য সময় পশু জবাইয়ের পর রক্তগুলো বাইপ্রোডাক্ট হিসেবে রপ্তানি করা যাবে। এ বিষয়ে একটি কার্যকরী উদ্যোগ থাকা দরকার।


চামড়াকে যথাযথভাবে প্রক্রিয়াজাত এবং সংরক্ষণ করা গেলে তৈরি পোশাকের মতো এ খাত থেকে বিশাল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। তাই সাভারে চামড়া শিল্প নগরীতে সিইটিপি নির্মাণ না থাকায় এখন চামড়ার উপযুক্ত দাম পাওয়া যাচ্ছে না বলেও জানান তিনি।


জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারের সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরও অংশ নেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক আনন্দ কুমার অধিকারী মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।


বিবার্তা/রিয়াদ/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com