ডেঙ্গু মোকাবিলা : প্রাদুর্ভাব বাড়লেই বাড়ে দুই সিটির তৎপরতা
প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০২৩, ১৩:১৪
ডেঙ্গু মোকাবিলা : প্রাদুর্ভাব বাড়লেই বাড়ে দুই সিটির তৎপরতা
সানজিদা আক্তার
প্রিন্ট অ-অ+

ডেঙ্গু মোকাবিলায় সারা বছরব্যাপী উদ্যোগ না দেখা গেলেও প্রাদুর্ভাব বাড়লেই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বাড়িয়ে দেয় তৎপরতা। সারা বছর নিয়মিত তদারকি কার্যক্রম চালানো হয় না বলেই পরিস্থিতি খারাপের দিকে। অন্যদিকে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্রেফ আগাম সতর্কতা জানিয়ে দায়িত্ব সারে।


বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৪ হাজার ২২০ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন। এ বছর মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৭ হাজার ৮৩১ জন। ডেঙ্গুতে মারা গেছেন মোট ২০০ জন। (গত ১৫ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী)। ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২৮১ জন এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার ৩৮২ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বাইরের ছিলেন ২৩ হাজার ১৬২ জন


সিটি করপোরেশন বা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় আগাম সতর্কতা পাওয়ার পরও এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয় না। যখন ডেঙ্গু রোগী বাড়তে শুরু করে তখনো কিছু অনিয়মিত অভিযান ছাড়া আর তেমন কোনো উদ্যোগ নেয়ার তাগিদ বোধ করে না।



বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে সাময়িক উদ্যোগ ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবেলায় কোন কাজে আসছে না, বরং অপচয় হচ্ছে। বছরব্যাপী সমন্বিত উদ্যোগ হতে পারে একটি কার্যকরী সমাধান।



স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রাক-বর্ষা জরিপে ঢাকার দুই সিটির ৯৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫৫টিতেই মশার ঘনত্ব পরিমাপক সূচক ‘ব্রুটো ইনডেক্স’ ২০-এর বেশি পাওয়া গেছে। অর্থাৎ, এসব এলাকার ১০০টির মধ্যে ২০টির বেশি পাত্রে মশা বা লার্ভা পাওয়া গেছে। অথচ গত বছর ৯৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র ৩টিতে ব্রুটো ইনডেক্স ২০-এর বেশি ছিল। একইভাবে ৯৮টি ওয়ার্ডের ৮০টি ওয়ার্ডেই এডিস মশা পাওয়া গেছে এমন বাড়ির শতকরা হার বা হাউস ইনডেক্স ১০-এর বেশি পাওয়া গেছে। অথচ গত বছর হাউস ইনডেক্স ১০-এর বেশি ছিল ১৯টি ওয়ার্ডে।


স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন এই ছয় মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮৯ এবং মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১। কিন্তু এ বছর প্রথম ছয় মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭ হাজার ৯৭৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৪৭ জনের।



এই পরিসংখ্যান শুধু এডিস মশার ঘনত্ব বা প্রজননস্থলের সংখ্যাই নয়, হাসপাতালে ভর্তি রোগী ও মৃতের সংখ্যাগত বিবেচনা থেকেও ডেঙ্গু পরিস্থিতির গুরুতর অবনতির কথা বলছে। আগামী আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়তে পারে।



বাংলাদেশে ১৯৬৪ সালে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ঘটে। তখন এটিকে ‘ঢাকা ফিভার’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বেশি হয় ২০০০ সালে। ওই বছর সরকারি হিসাব মতে, ৫ হাজার ৫০০ জন মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন এবং ৯৩ জন মারা যান। বাংলাদেশে ডেঙ্গু সবচেয়ে বড় আঘাত হানে ২০১৯ সালে। ওই বছর ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন এবং সারা বাংলাদেশের ৬৩টি জেলায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ে।



শাহাদাত হোসেন। তিনি তার ফেসবুকে গত ১৪ জুলাই জানান, সর্বশেষ আপডেট হচ্ছে, বোন অসুস্থ...ডেঙ্গু পজিটিভ। গতবার আঙ্কেলের ডেঙ্গু ধরা পরে, রীতিমতো দু জনের কাধে ভর করে চলতে হইছিল। তারপর সিএমএইচএ টানা সপ্তাহ খানেক চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরছে। গত দুই দিন আগে বোনের জ্বর আসে। গতকাল রিপোর্ট আসছে পজিটিভ। তবে শারীরিক অবস্থা বেশ ভালোই ছিল। আই ইউ ১১৫০০০ সাথে ব্লাডের অবস্থা স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু হুটকরেই অবনতি হয় অবস্থা সেই ভয়াবহ; হসপিটালে আনতে হইছে রীতিমতো কোলেকাঁখে করে।


তিনি বলেন, সরকার যে পরিমাণ আক্রান্ত দেখাচ্ছে তার থেকেও কয়েকগুণ বেশি আক্রান্ত হয়ে গেছে। নিজেদের অবস্থান থেকে সতর্ক হোন এবং আক্রান্ত হলে দ্রুত চিকিৎসা নেয়ার চেষ্টা করুন।


কীটতত্ত্ববিদ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বিবার্তাকে বলেন, শুধু ঢাকায় নয়, বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা ও পৌরসভায় সবারই প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। জনগণ, সিটি করপোরেশন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও গণমাধ্যম সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করতে পারলে হয়ত আমরা এ সমস্যাটাকে মোকাবিলা করতে পারব।


ডেঙ্গু প্রতিরোধ এবং এডিস মশার বিস্তার নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) বিশেষ কন্ট্রোল রুম স্থাপন করেছে।ডিএসসিসির মুখপাত্র আবু নাছের বলেন, এডিস মশার প্রজননস্থল বা লার্ভা দেখা গেলে হটলাইন নম্বর +8801709900888 এ কল করতে বলা হচ্ছে। এই উদ্যোগের লক্ষ্য মশার প্রজননক্ষেত্র শনাক্ত করা এবং ডেঙ্গু মোকাবিলায় সবার সম্পৃক্ততা বাড়ানো।



ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস বিবার্তাকে বলেন, গত বছর দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে আশ্বিন মাস এবং শীতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গু ছড়িয়েছে। এ জন্য ডেঙ্গু প্রতিরোধে বছরব্যাপী কর্মপরিকল্পনা করা হয়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধ কার্যক্রমের সময় বাড়ানো হয়েছে। আগে যেমন করা হতো আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র পর্যন্ত। এখন আশ্বিন মাস পর্যন্ত করা হয়েছে।


মাসব্যাপী বিশেষ মশক নিধন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)।


ডেঙ্গু রোগের বাহক এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে গত ৮ জুলাই থেকে ডিএনসিসির প্রতিটি ওয়ার্ডে একযোগে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।


প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বিবার্তাকে বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশন থেকে নিয়মিত লার্ভিসাইডিং করার পাশাপাশি নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিএনসিসি ও বাংলাদেশ স্কাউট সদস্যদের যুক্ত করে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। মসজিদ-মাদ্রাসার ইমাম ও খতিবগণ এবং স্কুল কলেজের প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষের সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছি। ইতিমধ্যে ডিএনসিসির সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আমরা আন্তরিকতার সাথে চেষ্টা করছি। তবে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতা সবচেয়ে জরুরী। ছাদে ও বারান্দায় কোথাও পানি জমতে দেয়া যাবে না।


স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, আগে মৌসুমি পরিকল্পনা নেয়া হতো; কিন্তু এখন বছরজুড়ে পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। আগে কয়েক মাস, এপ্রিল, মে, জুন ও জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু প্রতিরোধ কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো। এখন করা হচ্ছে ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ সময়গুলোতে পিক সিজন ও লিন সিজন ভাগ করা হয়েছে। অর্থাৎ এডিসের জন্য একটি উর্বর সময়, অন্যটি অনুর্বর মৌসুম। সেই অনুসারে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।



বিজ্ঞানী ও গবেষকরা ১৪ মাস আগে বলেছিলেন, মশার ওষুধ কার্যকারিতা হারিয়েছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ছিটানো ওষুধে মশা মরছে না। সব জেনেও কর্তৃপক্ষ মশা মারার ওষুধ পরিবর্তনে পদক্ষেপ নেয়নি।


দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতা, যথাযথ পরিকল্পনা, পূর্বপ্রস্তুতি ও কার্যকর বাস্তবায়নের ঘাটতির কারণেই ঢাকাসহ প্রায় সারা দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে বলে মনে করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। তারা গত ৫ জুলাই বিবৃতি এ কথা জানান গণমাধ্যমকে।


এতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও বড় সিটি করপোরেশনগুলোর কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব, অনিয়ম, দুর্নীতি এবং বিক্ষিপ্তভাবে অকার্যকর কার্যক্রম গ্রহণ করার ফলে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। ২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত 'ঢাকা শহরে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়' শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে প্রণীত ১৫ দফা সুপারিশ ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের কাছে পুনরায় পাঠিয়ে টিআইবি বর্তমান পরিস্থিতিকে জনস্বাস্থ্য সংকট ঘোষণা করে জরুরি ভিত্তিতে সমন্বিত রোডম্যাপ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানাচ্ছে।


বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে, এ জাতীয় সতর্কবার্তা ছিল, তথাপি রাজধানীতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে দুই সিটি করপোরেশনের উদ্যোগ হতাশাজনক। উল্লিখিত গবেষণাপ্রসূত পলিসি ব্রিফকে যথাযথ গুরুত্ব প্রদানসহ সংশ্লিষ্ট খাতে বিশেষজ্ঞজনকে সম্পৃক্ত করে ডেঙ্গু প্রতিরোধে দীর্ঘমেয়াদি কোনো পরিকল্পনা ও সমন্বিত প্রচেষ্টা যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ছিল না, তা বলাই বাহুল্য। আর যেটুকু উদ্যোগ দেখা গেছে, তা পরিস্থিতি বিবেচনায় যে অপ্রতুল কিংবা লোক দেখানো প্রচারণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, তা-ও না বললেই চলে। রাজধানীতে ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতি রোধ করার যে সম্ভাবনা ছিল, সেদিকে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি বাস্তবে কতটুকু ছিল, তা প্রশ্নবিদ্ধ।


মশা নিয়ন্ত্রণে মুনাফাভিত্তিক কীটনাশক নির্ভরতার ঊর্ধ্বে গিয়ে অন্যান্য সকল প্রকার পদ্ধতির ব্যবহার নিশ্চিত করে দুই সিটি করপোরেশনকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। কোভিড সংকটের অভিজ্ঞতার আলোকে সংশ্লিষ্ট খাতের বিশেষজ্ঞজনকে সম্পৃক্ত করে পরামর্শক প্যানেল গঠন ও যথাযথ গুরুত্বসহকারে নিয়মিতভাবে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। মশক নিধনে পরিবেশবান্ধব পদ্ধতির ব্যবহার বৃদ্ধিসহ বছরব্যাপী এ কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সম্ভাব্য সব মাধ্যমে এডিস মশা ও এর লার্ভা, ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণ ও দ্রুত চিকিৎসার বিষয়ে জনসচেতনতা ও সতর্কতামূলক বার্তার কার্যকর প্রচার বাড়ানো জরুরি। তা ছাড়া মশা নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে জনসম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে এলাকাভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করাসহ যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে জরুরিভিত্তিতে। এক্ষেত্রে রেডক্রিসেন্ট স্বেচ্ছাসেবীসহ আগ্রহী অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে সম্পৃক্ত করার সুযোগ নিতে হবে।


স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, সারা দেশেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরে ১২ হাজারের বেশি লোক ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। দেশের ৫৭টি জেলায় ১০০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। দেশে যত লোক ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছে তারমধ্যে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি। মোট আক্রান্তের শতকরা ৬০ ভাগই ঢাকার বাসিন্দা।


পথ দেখাতে পারে কলকাতা আর সিঙ্গাপুর


কলকাতা সিটি করপোরেশন এডিস মশা দমনের জন্য ১৪৪টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতেই সিটি করপোরেশনের ২০ থেকে ২৫ জন করে কর্মী থাকেন, যাদের মধ্যে একদল প্রচারের কাজ চালায়, আর অন্য দল কোথাও পানি জমছে কি না, সেটার ওপরে নজর রাখে। ১৬টি বরোর (borough) প্রতিটির জন্য থাকে একটি করে র‍্যাপিড অ্যাকশন টিম। তাতে সব ধরনের সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত থাকেন ৮ থেকে ১০ ব্যক্তি, গাড়িও থাকে তাদের কাছে। কোনো জায়গায় ডেঙ্গুর খবর পাওয়া গেলে অতি দ্রুত তারা সেখানে পৌঁছে এডিস মশার লার্ভা নিয়ন্ত্রণের কাজ করেন।


অন্যদিকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগের দুর্দান্ত দৃষ্টান্ত হলো সিঙ্গাপুর। সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্ট এজেন্সি (এনইএ) এর কর্মীরা নিয়মিত মানুষের ঘরে ঘরে ও এলাকায় এলাকায় গিয়ে পাবলিক স্পেস, কনস্ট্রাকশন সাইট এবং হাউজিং এস্টেটে ডেঙ্গু মশার জন্মস্থল খুঁজে ধ্বংস করে থাকে। পরিদর্শন কার্যক্রমের ক্ষেত্রে কনস্ট্রাকশন সাইটের মতো সম্ভাব্য বিপজ্জনক স্থানের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হয়।


সিঙ্গাপুরের আইন অনুসারে নির্মাণকাজের সময় কন্ট্রাক্টরদের পেস্ট কন্ট্রোল অফিসার ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগ দিতে হয় যাদের কাজ হলো প্রতিদিন সকালে মেঝে পরিষ্কার করা এবং দুই সপ্তাহে একবার মশকরোধী তেল প্রয়োগ করা যেন এসব সাইটে জমা পানিতে মশা জন্মাতে না পারে। বায়ু চলাচল বন্ধ হয়ে মশার লার্ভা মারা যায়। এনইএ প্রতি মাসে অন্তত একবার কনস্ট্রাকশন সাইটগুলো পরিদর্শন করে, আইন ভঙ্গ করলে জরিমানা করা হয় এমনকি সাময়িক ভাবে কাজ বন্ধ করেও দেওয়া হয়।


বিবার্তা/সানজিদা/রোমেল/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com