ড. ইউনূসকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় দুদক
প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৩, ২২:১৮
ড. ইউনূসকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় দুদক
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকমের দুর্নীতির অনুসন্ধান কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এরই মধ্যে অভিযোগসংশ্লিষ্ট অনেক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান কর্মকর্তারা। 


কমিশনে অনুসন্ধান প্রতিবেদন জমার আগেই গ্রামীণের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় অনুসন্ধান দল।


এ বিষয়ে রবিবার (১২ মার্চ) সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. মো. মোজাম্মেল হক খান। তিনি বলেন, ‘দুদক একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। আমাদের কাজ হচ্ছে দুর্নীতি দমন করা। এ ক্ষেত্রে আমরা বিভিন্নভাবে যে অভিযোগগুলো পাই, প্রাথমিকভাবে যদি আমাদের কাছে মনে হয় যে এসব অভিযোগের যথেষ্ট উপাদান আছে, তখন আমরা অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করি। গ্রামীণ টেলিকমের ক্ষেত্রেও তা-ই ঘটেছে। আমরা সেসব অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য বাছাই করেছি এবং সেগুলোর অনুসন্ধানকাজ চলছে। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কে জড়িত বা জড়িত না, এগুলো আমাদের কাছে মুখ্য নয়। আমরা বস্তুনিষ্ঠভাবেই অভিযোগগুলোকে বিবেচনা করার চেষ্টা করছি।’


কমিশনার আরও বলেন, ‘কোনও অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত অনুসন্ধানের অগ্রগতি জানাননি। অর্থাৎ এ নিয়ে কোনও প্রতিবেদন এখনও দাখিল করা হয়নি। দ্রুতই এ কাজটি শেষ হবে। অনুসন্ধান শেষে আমরা যেই প্রতিবেদন পাবো, সেটা কমিশনে পর্যালোচনা করা হবে। যদি মনে হয় এ নিয়ে আরও অগ্রসর হওয়া দরকার, তাহলে আমরা সেটি তদন্তের জন্য বিবেচনা করবো এবং সেটা অবশ্যই মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হবে। আর যদি মনে হয়, অনুসন্ধানে প্রাথমিক যে তথ্য পাওয়া গেছে, সেগুলোর কোনও গুরুত্ব বহন করে না, তাহলে সেটা হয়তো সেখানেই শেষ হয়ে যাবে। তবে এটা এখনই বলা যাবে না, এর পরিণতি কোন পর্যায়ে গিয়ে শেষ হবে।’


ড. মোজাম্মেল বলেন, ‘সবকিছু নির্ভর করে অনুসন্ধান কর্মকর্তার ওপর। কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ করার পর তিনি যদি না-ও আসেন, তাহলেও আমাদের অনুসন্ধান কাজ বিঘ্নিত হয় না। অনেককে পাওয়াও যায় না। তারপরও অনুসন্ধান প্রতিবেদন দেওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা সিদ্ধান্ত নেবেন আপনারা যার নাম বলেছেন, তার (ড. ইউনূস) সাক্ষাৎকার নেওয়ার প্রয়োজন আছে কিনা। যদি প্রয়োজন হয়, অবশ্যই তিনি নেবেন। যদি কেউ সামাজিকভাবে খুবই প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি হন, তাহলে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা কমিশনের কাছে পরামর্শ চাইতে পারেন, কীভাবে কোন প্রক্রিয়ায় তারা অগ্রসর হবেন। এর বেশি কমিশনের হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই। এটি অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার নিজস্ব ব্যাপার। তিনি শুনবেন কিনা। যদি এমন হয়, এমন সব তথ্য ও রেকর্ডপত্র অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তাদের হাতে এসেছে, যেখানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন নেই, তাহলে জিজ্ঞাসাবাদ না করলেও আপত্তির কোনও কারণ নেই।’


‘গ্রামীণ টেলিকমের ব্যাপারে যে অনুসন্ধান চলছে এটা আপনাদের দৃষ্টিতে অনেক দিন ধরে হতে পারে, এতে কোনও সন্দেহ নেই। আমাদের অভিজ্ঞতা হচ্ছে, কোনও অভিযোগই অতি দ্রুত শেষ করতে পারি না। আমাদের আইনের বিষয়গুলো দেখতে হয়। যারা অভিযুক্ত তাদের কথা শুনতে হয়। তাদের বক্তব্যের সঙ্গে যদি রেকর্ডপত্রের দেখার প্রয়োজন হয়, সেগুলো যাচাই-বাছাই করতে হয়। সে জন্য অনেক সময় লাগে। আমি মনে করি সময় অনেক লেগেছে এটাও সত্য। কিন্তু আমাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য এতটুকু সময়ের প্রয়োজন হবে’, বলেন তিনি।


কমিশনার বলেন, ‘অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা এ বিষয়গুলো দেখছেন। এগুলো দেখতে গিয়ে যেসব ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নেওয়া দরকার, কথা বলা দরকার, সে কাজগুলো পর্যায়ক্রমে নেওয়া হচ্ছে। আমি আশা করি অস্বাভাবিক কোনও বিলম্ব হবে না। এ ব্যাপারে অনুসন্ধান রিপোর্ট পাওয়ার পরে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেটা বলা যাবে। তবে অনুসন্ধান কাজে কোনও টাইমলাইন দিতে পারবো না।’


ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, ‘প্রত্যেক অনুসন্ধান কর্মকর্তার ওপর চাপ আছে দ্রুত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য। তারা তাদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এটি দিয়ে থাকেন। কিন্তু আমরা বলতে পারবো না যে এটা এত দিনের মধ্যে দিয়ে দিতে হবে। আইনে বলা আছে কত দিনের মধ্যে করবে। কিন্তু নির্দিষ্ট কোনও টাইমলাইন বলার সুযোগ নেই। আশা করছি দ্রুততার সঙ্গে তারা তাদের কাজ শেষ করবেন।’


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com