'ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদান' শীর্ষক মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের আলোচনা সভা
প্রকাশ : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২০:১১
'ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদান' শীর্ষক মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের আলোচনা সভা
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

"ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদান" শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।


১৫ ফেব্রুয়ারি, বুধবার বিকাল ৩টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল অডিটোরিয়ামে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। 


সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুনের সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খাঁন এমপি, বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দীন আহমেদ, একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট সাংবাদিক অজয় দাশ গুপ্ত, ভাস্কর্য শিল্পী রাশা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মজুমদারসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।


আলোচনা সভার বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা  শাজাহান খাঁন এমপি বলেন, "ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার বীজ রোপণ করেছিলেন। কবির ভাষায়, আজও আশা করে আছি পরিত্রাণ কর্তা আসবে সভ্যতার দৈববাণী নিয়ে, চরম আশ্বাসের কথা শোনাবে পূর্ব দিগন্ত থেকেই।’ বাঙালির ভাগ্যাকাশে সেই ত্রাণকর্তা হয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টির পর পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী সচেতনভাবে বাঙালির কাছ থেকে ভাষার অধিকার হরণ করতে চেয়েছিল। তারা চেয়েছিল সংখ্যালঘু জনগণের ভাষা উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দিতে। কিন্তু তাদের সেই অপতৎপরতার বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন বাঙালির ত্রাণকর্তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। আজীবন মাতৃভাষাপ্রেমী এই মহান নেতা ১৯৪৭ সালে ভাষা আন্দোলনের সূচনা পর্বে, ১৯৪৮ সালে রাজপথে আন্দোলন ও কারাবরণ, পরে আইনসভার সদস্য হিসেবে রাষ্ট্রভাষার সংগ্রাম ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় অতুলনীয় ভূমিকা রাখেন। স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি বাংলা ভাষাকে তুলে ধরেছেন বিশ্ববাসীর কাছে। এক কথায় রাষ্ট্রভাষা বাংলার আন্দোলন ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর সক্রিয় অংশগ্রহণ ইতিহাসের অনন্য দৃষ্টান্ত।"


একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, "ভাষা শহীদ রফিক, সালাম, বরকত, শফিউরসহ নাম না জানা অসংখ্য শহিদের রক্তস্নাত এই অর্জন বিশ্বে বাঙালিকে অমর করে রেখেছে। যতদিন লাল সবুজের পতাকা খচিত এই বাংলাদেশ থাকবে, বাঙালি থাকবে, বঙ্গবন্ধু থাকবে ততদিন পৃথিবীর বুকে বাংলা ভাষা আপন মহিমায় চির জাগরুক থাকবে। 


বিশিষ্ট ভাস্কর্য শিল্পী রাশা বলেন, "আজীবন মাতৃভাষাপ্রেমী মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৭ সালে ভাষা আন্দোলনের সূচনা পর্বে, ১৯৪৮ সালে রাজপথে আন্দোলন ও কারাবরণ, পরে আইনসভার সদস্য হিসেবে রাষ্ট্রভাষার সংগ্রাম ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় অতুলনীয় ভূমিকা রাখেন। 


বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মজুমদার বলেন, "১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ পাকিস্তানের একচ্ছত্র অধিপতি হন। এ সময় নবগঠিত দুটি প্রদেশের মধ্যে পূর্ববাংলার প্রতি তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী ভাষাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক আচরণ শুরু করে। ফলে শুরু হয় রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের জন্মের পরপর কলকাতার সিরাজউদ্দৌলা হোটেলে পূর্ব পাকিস্তানের পরবর্তী কর্তব্য নির্ধারণে সমবেত হয়েছিলেন কিছুসংখ্যক রাজনৈতিক কর্মী। সেখানে পাকিস্তানে একটি অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আন্দোলন ও সংগঠন করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সে প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান।" 


সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, "১৯৪৭ সালের ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তানের কর্মী সম্মেলনে গণতান্ত্রিক যুবলীগ গঠিত হয়। ওই সম্মেলনে ভাষাবিষয়ক কিছু প্রস্তাব গৃহীত হয়। সেই প্রস্তাবে বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষা স্বীকৃতি প্রদানের দাবি জানানো হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে এদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন।"


সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, "ভাষা আন্দোলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বিশেষ অবদান রয়েছে। আজন্ম মাতৃভাষাপ্রেমী এই মহান নেতা ১৯৪৭ সালে ভাষা আন্দোলনের সূচনা পর্ব এবং পরবর্তী সময় আইন সভার সদস্য হিসেবে এবং রাষ্ট্রপতি হিসেবে বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করেন। তিনি মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত বাংলা ভাষার উন্নয়ন ও বিকাশে কাজ করে গেছেন এবং বাংলা ভাষা ও বাংলাভাষীদের দাবির কথা বলে গেছেন। অদ্যবধি ভাষা- আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদান নিয়ে প্রকাশিত প্রবন্ধ, নিবন্ধ ও বইপত্রে অনেক তথ্যকে বাদ দেয়া হয়েছে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে খাটো করে দেখা হয়েছে। এসব দিক বিবেচনা করে আলোচ্য প্রবন্ধে সংক্ষিপ্ত আকারে ভাষা-আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের যথাযথ ভূমিকা উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হয়েছে। ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে এ আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদানের সত্যতা প্রমাণিত হয়। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ পাকিস্তানের একচ্ছত্র অধিপতি হলেন। এ সময় নবগঠিত দুটি প্রদেশের মধ্যে পূর্ব বাংলার প্রতি তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী ভাষাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক আচরণ শুরু করলেন। ফলে শুরু হয় ভাষা আন্দোলন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই কলকাতার সিরাজউদ্দৌলা হোটেলে পূর্ব পাকিস্তানের পরবর্তী কর্তব্য নির্ধারণে সমবেত হয়েছিলেন কিছু সংখ্যক রাজনৈতিক কর্মী। সেখানে পাকিস্তানে একটি অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আন্দোলন ও সংগঠন করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। সে প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।"


বিবার্তা/রাসেল/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com