মেয়েগুলো এতো গাধা! নেই কোনো সম্মানবোধ?...
এতোদিন পরে এসে সবকিছু ফাঁস করে এইভাবে নিতে হয় শোধ!
একান্তে ঘটে যাওয়া ঘটনাটা চেপে গেলে ভালো।
তা না করে প্রকাশ্যে সবকিছু বলে দিলে সমাজের মুখ হয় কালো।
ভেঙে পড়ে সবকিছু, সামাজিক রীতি-নীতি, ভ্যালুজ-মূল্যবোধ-বন্ধন নড়েচড়ে ওঠে,
দ্বিধা থরোথরো হয়ে লজ্জিত কম্পিত সকালের ফুলগুলো ফোটে!
বুঝি না কেনো যে হয় মেয়েগুলো এতো হাঁদা এতো উজবুক!
সবকিছু বলে দেয়! ইদানিং ভয়াবহ রূপ নিয়ে প্রতিদিন আসে ফেসবুক...
আমি তোর শিক্ষক, কাকু-দাদু-নানা হই, আমি তোর শ্রদ্ধেয়জন
মেসো হই মামা হই আমি তোর বড় ভাই, মজবুত সেই বন্ধন...
না হয় ছুঁয়েছি তোকে, জড়িয়ে ধরেছি তোকে, না হয় খেয়েছি চুমু তাতে তোর গেলো বুঝি মান?
সামান্য অপরাধে আমার মূর্তিখানি ভেঙে তুই দিবি খান খান!
এটা কি নতুন কিছু? এরকম ঘটে নাই আগে?
বিভ্রম প্রেম অনুরাগে?
তোর বোন তোর খালা কিংবা জননী তোর অথবা পৌঢ় কোনো নারী
সকলের ক্ষেত্রেই এরকম ঘটেছিলো চোখ বুজে বলে দিতে পারি।
তাঁরা কেউ চিৎকার করে নাই কোনোদিন, মুখ ফুটে বলেনি সে কথা
পালন করেছে নিরবতা।
এরকম ঘটবেই, ঘরের বাহির হলে, অথবা আপন গৃহকোণে
চিরকাল মেয়েগুলো এভাবেই সয়ে যায়। মেনে নেয় বিধিলিপি। আর স্বপ্নের দিন গোণে...
পুরুষেরা ওরকম একটু আধটু ছোঁবে, ওটা তাঁর অধিকার মেনে
জীবনকে নিয়ে যাবি টেনে।
বাসে ট্রামে-মার্কেটে উৎসবে পার্বনে অথবা জমাট কোনো ভিড়ে
স্পর্শকাতর স্থানে কনুইয়ের গুঁতো খেলে লোমশ স্পর্শ পেলে নির্দোষ সে মানুষটিরে--
ক্ষমা করে দিতে হবে, আর মেনে নিতে হবে ঘটনাটা বিধির বিধান
তা না হলে তোর অপমান।
আমি তোর দাদা হই, আমি সহকর্মী রে, আমি তোর সরাসরি বস
আমি যদি চেপে ধরি, আচমকা কিছু করি, চেপে যাবি, তা না হলে লস...
বদনাম রটে যাবে তোলপাড় ঘটে যাবে প্রমোশন-ভাতা যাবে কমে
একঘরে হবি ক্রমে ক্রমে...।
মেয়ে তুই ঠুনকো না, টোকা দিলে ভেঙে যাবি, তুই নোস ভঙ্গুর কাচ
আমার এ স্পর্শ বা টাচ--
তোকে মেরে ফেলবে না। কোনো দাগ পড়বে না গায়।
অতীতের পানে দ্যাখ্ কোনো নারী তোর মতো করে নাই এতো হায় হায়!
সুতরাং চুপ থাক, করিস না হইচই, আমারও তো আছে সংসার!
সংসারে বউ আছে পুত্র-কন্যা আছে হাসিখুশি প্রীতি সম্ভার--
ভালো স্বামী। ভালো পিতা। সজ্জন। বৎসল। শ্রদ্ধেয়জন। জ্ঞানীগুণী।
আমাকে মারতে চাস? নিঠুর হন্তারক! সামান্য মেয়ে তুই, খুনি!
ফেসবুকে এসে সেই অতীতের গল্পটা লিখে তোর লাভটা কি বল্!
আমরা পুরুষ জাতি হাঁসের পালকে গড়া লাগে না শরীরে কোনো কাদামাখা জল।
কী প্রমাণ আছে তোর? সাক্ষী কি দেবে কেউ? কেউ তো দেখেনি ওটা। শুধু তুই আমি।
তোর তড়পানি দেখে অই দ্যাখ্ হাসছেন স্বয়ং বিধাতা তোর, অন্তর্যামী...
বিচার পাবি না তুই, তোর পাশে দাঁড়াবে না এমন কি পরিচিত সহপাঠীগণ
আমি এক শ্রদ্ধেয়জন...।
সমাজে প্রতিষ্ঠিত, বাড়িগাড়ি টাকাকড়ি পদ ও পদবী আছে। আর আছে একদল ভয়ানক রোগী
আচরণে সন্ন্যাসী চলনে মহান সাধু বলনে সন্ত যেনো যোগী...
যাঁদের মগজে শুধু পুরুষতন্ত্র আর মনোজগতে তাঁদের নাচে ধর্ষক
প্রত্যেকে মনে মনে পটেনশিয়াল এক নারী নিপীড়ক।
পঙ্গপালের মতো ঝাঁপিয়ে পড়বে ওঁরা হনন করতে তোর দীপ্তি ও দ্যুতি
হবি ফের লাঞ্ছিত হিংস্র শ্বাপদগুলো ভোঁতা করে দেবে তোর সব অনুভূতি।
অতীতে ট্রমায় ছিলি আবার নতুন ট্রমা পাবি উপহার
আমার হবে না কিছু, আমি ঠিকই ফিরে পাবো হারানো বনস্পতি প্রিয় সংসার।
যাবতীয় ক্ষতি সবই তোর।
ঘুচবে না তোর ট্রমাঘোর...
সুতরাং ফেসবুকে লিখিস না কিছু আর। ভুলে গিয়ে অতীতের গ্লানি
স্বামী সন্তান নিয়ে সুখে থাক, ভুলে থাক। ইশ্বর দিতেছেন বাণী...
(অতঃপর লেখকের ভাষ্য--
প্রকৃত পুরুষ মানে প্রেমিক-পুত্র-ভ্রাতা প্রকৃত পুরুষ মানে পিতা
ফেসবুকই হোক তবে নিপীড়ক পুরুষের আরাম হারাম করা চিতা...)
অটোয়া ১৬ নভেম্বর ২০১৮
বিবার্তা/হুমায়ুন/মৌসুমী
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]