বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে শোকাবহ আগস্ট উপলক্ষে মাসব্যাপী আয়োজন ‘শোক থেকে শক্তির অভ্যুদয়, স্বপ্নপূরণের দৃঢ়প্রত্যয়’ এর অংশ হিসেবে ‘শিল্পের আলোয় শ্রদ্ধাঞ্জলি: নজরুল ও বঙ্গবন্ধু’ র্শীষক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠিান আয়োজিত হয়েছে।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ২৯ আগস্ট ( মঙ্গলবার) সন্ধ্যা ৭.০0টায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক জনাব অনুপম হায়াত । আলোচনায় তিনি বলেন, ‘নজরুল এক অপরিমেয় সত্তার অধিকারী, তিনি শোষিত, লাঞ্ছিত মানুষের পক্ষে কথা বলেছেন। নজরুল ও বঙ্গবন্ধু পারস্পরিকভাবে বাঙালির সাথে মিশে আছে। নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা ও গল্পে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, বাঙালি থাকবে, বাংলা ভাষা থাকবে ততদিন এই দুই মহান নেতা নজরুল ও বঙ্গবন্ধু একইসূত্রে বেঁচে থাকবেন।‘ নজরুলের চেতনায় ও বঙ্গবন্ধুর বাস্তবায়নে অসাম্প্রদায়িক ও উন্নয়নমুখী বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান আলোচক।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য উপস্থাপন করেন একাডেমির সম্মানিত সচিব জনাব সালাহউদ্দিন আহাম্মদ। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘কাজী নজরুল কবিতা, গান, সাহিত্যের মাধ্যমে বাঙালির জন্য প্রতিবাদ করেছেন। আর বঙ্গবন্ধু রাজনীতির মাধ্যমে জনগণের পক্ষে কাজ করেছেন। বঙ্গবন্ধু রাজনীতির কবি। বাংলাদেশে কবিকে জাতীয় কবির মর্যাদা দিয়ে তাকেঁ দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যেগ নেন বঙ্গবন্ধু।‘ তিনি আরো বলেন- ‘বঙ্গবন্ধু কবি নজরুলের সাহিত্য দ্বারা উজ্জীবিত হতেন। ‘বাংলা বাঙালির হোক, বাঙালির জয় হোক, ‘ নজরুলের এই বক্তব্য থেকে বঙ্গবন্ধু ‘জয় বাংলা’ বাঙালির মুক্তির শ্লোগান উচ্চারণ করেছিলেন বলে যুক্ত করেন তিনি।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পক্ষ থেকে আমরা সার্বিকভাবে এই গুণী মানুষদের স্মরণ করি। এবং আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম তাদেঁর দেশপ্রেম ও চিন্তা চেতনা দ্বারা উদ্বুদ্ধ হবে বলেও প্রত্যাশার কথা জানান তিনি ।
পরে আলোচনা পর্বের শেষে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় পরিবেশিত হয় সমবেত সংগীত ‘ একক সংগীত, সমবেত শিশু সংগীত, সমবেত নৃত্য ও কবিতা পাঠে স্মরণ করা হয় আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ‘একি অপরুপ রুমে মা তোমায়’ সমবেত সংগীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিশু-কিশোর সংগীতদল। বিধান মিত্রের ‘কিছুই হতে পারিনি(বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা)’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন গোলাম সারোয়ার। ‘জাতির পিতা সারাটি জীবন তুমি, মাটি আর মানুষকে ভালোবেসে ভরেছো হৃদয়’ গানটি পরিবেশিত হয় ইউসুফি আহমেদ খানের কন্ঠে।
খাইরুল আনাম শাকিলের কন্ঠে পরিবেশিত হয় একক সংগীত ‘এ নহে বিলাস বন্ধু’। হৈমন্তী রক্ষিত এর কন্ঠে পরিবেশিত হয় ‘বঙ্গবন্ধু ফিরে এলে।’ ‘পরান প্রিয় কেন এলে অবেলায়/শাওন আসিল ফিরে’ একক সংগীত পরিবেশন করেন প্রিয়াংকা গোপ। কিশোর দাস পরিবেশন করেন ‘হে বন্ধু বঙ্গবন্ধু’।
এছাড়াও ইয়াসমীন মুশতারীর পরিবেশন করেন একক সংগীত। নৃত্য পরিচালক মেহরাজ হক তুষার এর পরিচালনায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতায় নৃত্য পরিবেশন করেন একাডেমির নৃত্যশিল্পী বৃন্দ এবং একাডেমির সমবেত নৃত্য ‘মনের রং লেগেছে’ পরিবেশন করেন একাডেমির শিশু কিশোর নৃত্যদল। সবশেষে ‘দাও ধৈর্য, দাও শৌর্য’ সমবেত সংগীত পরিবেশন করেন একাডেমির শিশু কিশোর সংগীত দল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মাশকূর-এ-সাত্তার কল্লোল।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]