নীল কণ্ঠদার বিয়ে
প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৩, ১২:২৬
নীল কণ্ঠদার বিয়ে
দেবদাস হালদার
প্রিন্ট অ-অ+

খেলা শেষে আমাদের প্রিয়
নীল কণ্ঠদা
বললো
এসে,"করবো এবার বিয়ে;
বর যাত্রী হবি কিন্তু সবাই-ই
তোরা
যে যার
মতো বাইসাইকেল নিয়ে।"


"পরবি সবাই একই রঙের
পাঞ্জাবি
আর ঘিয়া
রঙের চিপাচাপা চোষ;
এক লাইনে চালাবি কিন্তু
বাইসাইকেল
দেখতে
তোদের লাগবে কিযে জোস্!"


বিয়ের নিমন্ত্রণ পেয়ে সবাই
খুশির
দোলায় দোল
খেয়ে তাই পাগলা নাচন নাচি;
তিন-চারদিন আগেই বিয়ের
পাঁচশো সত্তর
সাবান
দিয়ে ধোঁয়া কাপড় সব কাঁচি।


কাপড়চোপড় শুকানোর পর
কাঁসার
বাটি
গরম করি চুলার আগুনে ধরে;
তারপর তা ডলি কিন্তু আপন
মনে
ধোপার চেয়েও বেশি যত্ন করে।


ফিনিক্স সাইকেল থাকলেও আমার
অন্য কোনো
বন্ধুর কিন্তু মোটেও তা নাই;
গোটা বারো সাইকেল লাগে
বিয়েতে যেতে
বলো তো
দেখি এ-সব কোথায় পাই?


মহাফাঁপরে পড়লাম সবাই
কী
করি তাই কাকে এখন ধরি;
অনেক ভেবে রৈশা ভাইয়ের
দোকানে
গিয়ে সাইকেল ভাড়া করি।


ভাঙ্গাচোড়া সাইকেল পেলাম
গোটা
বারো তিন টাকা রোজ ভাড়া;
তা নিয়ে তাই ছুটলো সবাই
যে যার মতো
শুধু
আমি আর ভেন্দু কাকু ছাড়া।


রাত্রে আবার বসলো বৈঠক
ধানের ঘরে
সাইকেল
রেখে তা পাহারা দিবে কে;
গুড্ডু নামের এক বুদ্ধু বন্ধু
চেঁচিয়ে
বললো "নো চিন্তা
ডু ফুর্তি" এই দায়িত্ব
আমার উপর এক্টু ছেড়ে দে।


হাফ ছেড়ে তাই বাঁচলাম সবাই
কাল দুপুরে
কনের
বাড়ি
করবো যাত্রা বরের আগে আগে;
এমন কথা ভাবতেই যেন মনটা
আমার
উদাস হয়
আর নিজকে
তখন জামাই জামাই লাগে।


পরদিন ঠিক ভরদুপুরে এলো
সবাই ঠাম্মির
বাড়ী
নির্ধারিত পাঞ্জাবি চোষ পড়ে;
আগে ভাগেই সাইকেল-টাতে
চড়তে
গিয়ে আমিও
মাগার চোষ ফেললাম ছিঁড়ে।


একে একে ছিঁড়লো আমার
সবে মাত্র
নতুন
পুরান গোটা তিনেক চোষ;
বিয়েয় যদি আজ না যেতে
পারি
তবে হালায়
ওই দর্জি বেটার সব দোষ।


অবশেষে লুজ পায়জামা ধার
করে এক
সযতনে কোমরের নীচে পড়ি;
সাইকেল আমার হলেও নতুন
কোথায়
পাবো এখন বড়সড় হাত ঘড়ি?


বড় ভাইয়ের "কেভালরি" ঘড়ি
ছিলো
তার ওই
টেবিলে উপর
নিলাম তা একটু পলিসি করে ;
মনে হলো আমিই যেন আজ
এই বিয়েটার
মধ্য মণি
নতুন
"বর" ঘড়িটা হাতে পড়ার পরে।


বিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে লাউ জাংলার
ওই তল
দিয়ে সাইকেল চালাতে গিয়ে;
লাউয়ের ধাক্কায় বন্ধু গোপাল
পড়লো
খাদে
হুড়মুড়িয়ে সাইকেল তার নিয়ে।


"উহ্ বাবারে গেলাম মরে পাইছি
ব্যাথা কানে"
এমনতর
আর্ত
চিৎকার হঠাৎ শোনার পরে;
বন্ধুরা সব থমকে দাঁড়াই ব্রেক
কষে
তারপর
উঠাই তারে
সড়কের উপর ধরাধরি করে।


তবুও তার থামে না চিৎকার
সবাই
মিলে শলাপরামর্শ এবার করি;
কি ঢুকলো ওর কানের ভিতর
দেখার তরে
কয়েক বন্ধু কানটা টেনে ধরি।


কান ধরে তার টানাটানি করার
পরে
কাটলো
রাস্তায় তাইতো অনেকক্ষণ ;
বিয়ের লগ্ন পেড়িয়ে যাবে ওই
বাড়িতে
পৌঁছার আগেই
এমন চিন্তায় অস্থির হলো মন।


কি হবে আজ বর যাত্রীদের
লগ্ন
শেষে বিয়ে বাড়িতে গেলে;
না-কি এখান থেকেই পড়বো
কেটে
বিয়ের উপকরণ সব ফেলে?


এমন কথা শুনে গোপাল বলে
এবার
নীচু গলায়
ফিসফিসিয়ে
সোনা বন্ধুরা সবাই তোরা যা;
কাছেই আমার মামার বাড়ি
থাকবো সেথায়
কেউ তোরা
আর
আমার জন্য চিন্তা করিস না।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com