পূর্ণিমা প্ররোচিত করে
বিপন্ন মেঘের মাধুর্য হারায় আকাশে
পাখির পালকে লাগে না রংধনুর রঙ
আকাশের দিক নেই, আছে অসীমতা
তবুও আমি আকাশের কাছে চাই শান্তি
পরাজিত হতে হতে পারিজাত চিনি না এখন
শঙ্খ নিনাদ চলে মেঘের গর্জনে জৈষ্ঠ্যে
কই বৃষ্টি এসে ধুয়ে দেয়নি এখনো আমলকি
যেন বাদুড়ের বিষণ্ণ সন্ধ্যা কাটে না আর
কোলে নিয়ে বসে থাকা পাহাড়ি ঝর্ণা
এঁকেবেঁকে চলে যায় হতাশায় হাহাকারে
যদিও পূর্ণিমা প্ররোচিত করে জোয়ারের
কী কীর্তন চলেছিল নাগেশ্বরী তলে যুগ জন্মে
বাতাসে নেই তার স্বরলিপি; নেই ছাড়পত্র
শ্বেতপদ্ম—শ্বেতপাথরে মুখ দেখে আয়না ভেবে!
কিছুই দাওনি
এই তো পুরাণ, পথের পুঁথি; প্রমত্তা পদ্মা
ছাপ খুঁজে পাবে মাটিতে পাহাড়ে—
পাবে না খুঁজে— পা!
পাথুরে জোছনা; পালকের ঘুম
প্রজাপতি নেই ফুলে,
ঘাসের ওপর সূর্য হাসে
শিশিরের সাথে দুলে!
পেছনে পেছনে পিঁপড়ার হাড়
শরীরে ভীষণ চিনি!
কিছুই দাওনি তবুও আমি
হয়ে আছি ঋণী!
পর্যটন স্বভাব
শিশিরের ভারে ন্যুব্জ হয় না ফুল। ধুয়ে যায় না রং। অটুট থাকে ঘ্রাণ। এই তো প্রাণ; এই তো প্রেরণা— আমিই তার প্রমাণ। লাশের গায়ে আতর মেখে দিলে গন্ধ কি আর দূর হয়? যা কিছু নিজস্ব তার ভাগ নিজেকে করতে হয়। সময় এমন যে, ঘড়ির কাটায় লেগে গেছে আলস্যের ছায়া। ছায়া তো আমারও ছিল। ছায়া ফেলে গেছে শরীর লাশ করে। পরজীবি সূর্যের তাপ, আলো আর অহংকার দেখে বাকরুদ্ধ! মৌমাছির গুঞ্জন গান ভেবে সুন্দরবন যাই, কাঠবিড়ালি আর কাকড়ার কান্না দেখে কিওকারাডং যাই, পর্যটন স্বভাব নিয়ে মানুষের সাথে কী করে জীবন কাটাবো?
দোয়া
আমি যেনো আমার দেশে মরতে পারি
আমার শরীর এই মাটিতে মেশে যেনো
হঠাৎ করে দেউলিয়া; না হয় যেনো আমার বাংলা
না হয় যেনো অন্য দেশের একটি প্রদেশ
না হয় যেনো ভিন্ন কোন পতাকার রং
আমার ভীষণ সন্দেহ হয় তোমাদের ঢং!
আমার কবর জুড়ে থাকুক ফুলের বাগান
দোয়েল, কোয়েল, মোরগ ডাকে— ভোরের আযান
উলুধ্বনির সাথে বাজুক কাসার ঘন্টা
সব শিশুদের সাথে থাকুক আমার প্রাণটা
আমার দেশের আকাশ নদী মানুষ এবং বন প্রকৃতি
ধারণ করুক, লালন করুক আমার যতো কৃতি–স্মৃতি।
তবুও যেন বাঁচতে চাই
একটি মাছের কান্না দেখে—চোখ মুছাতে নেমেছি জলে। জানি না সাঁতার এখনও আমি; সেই কথাটি নেই আঁকলে! জলের ভেতর শ্যাওলা, শামুক—জলের ভেতর ঢেউ, এতোই গোপনে নেমেছি আমি দেখতে পায়নি কেউ! আহারে আমার জোছনা রাত, ঘুমহীন সুরভি কুসুম, আহারে আমার চড়ুই দুপুর—আতা পাকা মৌসুম! এক নজরে লাজুক মুখ, কাজলে সাজানো আঁখি, আহারে— তাহারে ছোঁয়ার আশায়—কোকিল ডাকাডাকি! স্রোতস্বিনী দিক কুলহীন—আমার জীবন ভাসান! তবুও যেন বাঁচতে চাই, এ জলে নেভাতে—তোমার শ্মশান!
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]