শিরোনাম
ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা দূর করতে ঘরোয়া কিছু টিপস
প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ২০:৫৫
ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা দূর করতে ঘরোয়া কিছু টিপস
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

চিকিৎসকদের ভাষায়, নাক ডাকার সঙ্গে হার্টের স্বাস্থ্যের সম্পর্ক রয়েছে। সম্প্রতি মিউনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এক পরীক্ষায় দেখেছেন যে, দীর্ঘ দিন ধরে নাক ডাকার সমস্যা থাকলে হার্টের লেফ্ট এবং রাইট ভেন্ট্রিকুলারের এত মাত্রায় ক্ষতি হয় যে নানাবিধ হার্টের রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার সম্ভবনা বেড়ে যায়।


ঘরোয়া কিছু চিকিৎসা আছে যেগুলো খুব অল্প সময়েই নাক ডাকার সমস্যা কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। সেগুলো হল-


আদা চা


বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে, নিয়মিত আদা চা খাওয়া শুরু করলে দেহের ভিতরে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যার প্রভাবে ন্যাজাল ক্যাভিটি খুলতে শুরু করে। ফলে নাক ডাকার প্রকোপ কমতে সময় লাগে না।


ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার


কোনও কারণে নাকের ভিতরে মিউকাস জমতে শুরু করলে বায়ু চলাচল ঠিক মতো হতে পারে না। ফলে নাক দিয়ে বিকট আওয়াজ বেরতে শুরু করে। এমন পরিস্থিতিতে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল খেতে হবে, যেমন ধরুন- পাতি লেবু, কমলা লেবু, মুসাম্বি লেবু প্রভৃতি। আসলে শরীরে এই বিশেষ ধরনের ভিটামিনটির মাত্রা বাড়তে থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রোগ ভোগের আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি নাকে সর্দি বা মিফকাস জমে নাক ডাকার প্রবণতাকেও কমায়।


হলুদ


অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টিবায়োটিক উপাদানে পরিপূর্ণ এই প্রকৃতিক উপাদানটি গ্রহণ করলে শরীরের ভিতরে ইনফ্লেমেশন বা প্রদাহ কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে কমে নাক ডাকার প্রবণতাও। এ ক্ষেত্রে প্রতিদিন শুতে যাওয়ার ৩০ মিনিট আগে এক গ্লাস গরম দুধে ২ চামচ হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে পান করার অভ্যাস করতে হবে। এমনটা করলেই দেখবেন রাতের ঘুমে কেউ ব্যাঘাত ঘটাতে পারবে না।


মধু


রাতে শুতে যাওয়ার আগে নিয়ম করে যদি এক গ্লাস গরম পানিতে ১ চামচ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন, তাহলে নাকা ডাকার সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার সুযোগই পায় না। কারণ মধুর ভিতরে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি উপাদান গলার প্রদাহ কমায়। সেই সঙ্গে শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক করে তোলে। ফলে নাক ডাকার সম্ভাবনা কমে।


ঘি


নাক ডাকার সমস্যা কমাতে ঘিয়ের কোনো বিকল্প নেই। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, অল্প পরিমাণ ঘি গরম করে তার থেকে ২-৩ ড্রপ করে নিয়ে যদি নিয়মিত নাকে দেওয়া যায়, তাহলে নাসিকা গর্জ থামতে একেবারেই সময় লাগে না। আসলে ঘিয়ে উপস্থিত বেশ কিছু উপকারি উপাদান নাকের ভিতরে বায়ু-চলাচলের পথকে খোলা রাখতে সাহায্য করে। ফলে নাক ডাকার প্রবণতা একেবারে কমে যায়।


অলিভ অয়েল


রাতে শুতে য়াওয়ার আগে মনে করে দুই চামচ অলিভ অয়েল খেলে শরীরে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে রেসপিরেটরি প্যাসেজ খুলতে শুরু করে। আর একবার এমনটা হয়ে গেলে বাতাস চলাচলে কোনও বাঁধার সৃষ্টি হয় না। ফলে নাক ডাকার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।


রসুন


নাকের ভিতরে মিউকাস জমতে বাঁধা দেয় এই প্রকৃতিক উপাদানটি। সেই সঙ্গে রেসপিরেটারি সিস্টেমের উন্নতি ঘটায়। ফলে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক হতে শুরু করে, কমতে শুরু করে নাক ডাকার সমস্যা। এ ক্ষেত্রে নিয়মিত ১-২ টো রসুনের কোয়া চিবিয়ে, এক গ্লাস পানি খেয়ে শুতে যেতে হবে। তাহলেই দেখবেন নাসিকা গর্জন আর আপনাকে বা আপনার প্রিয়জনকে বিপদে ফেলতে পারবে না।


এলাচ


অনেক সময় নাকের ভিতরে কোনও বাঁধা থাকার কারণেও নাক ডাকার মতো সমস্যা দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রে নিয়মিত ঘুমনোর আগে এলাচ চা খেলে কিন্তু দারুন উপকার মেলে। কারণ এই প্রকৃতিক উপাদানটি ভিতরে উপস্থিত একাধিক উপাকারি উপাদান নাকের ভিতরের বাঁধা সরিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক করতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। আর একবার শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিক মতো হতে থাকলে নাক ডাকার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।


ক্যামোমিল চা


এক কাপ পানিতে ১ চামচ ক্যামোমিল ফুলের গুঁড়া ফেলে পানিটা ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিতে হবে প্রথমে। তারপর ছেঁকে নিয়ে সেই পানিটা পান করতে হবে। এভাবে প্রতিদিন ক্যামোমিল চা খাওয়া শুরু করলে শরীরে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করবে, যার প্রভাবে নাক ডাকার প্রবণতা তো কমবেই, সেই সঙ্গে কোনও ধরনের অ্যালার্জির প্রকোপ কমতেও দেখবেন সময় লাগবে না।


মেথি


অনেক সময় নানাবিধ পেটের রোগের কারণেও কিন্তু নাক ডাকার মতো সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে। তাই নাক ডাকা বন্ধ করতে পেটের দিকে খেয়াল রাখারও প্রয়োজন রয়েছে। আর ঠিক এই কারণে প্রতিদিন মেথি খাওয়া জরুরি। আসলে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি খাওয়া শুরু করলে গ্যাস-অম্বলের প্রকোপ তো কমেই। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতারও উন্নতি ঘটে চোখে পরার মতো। ফলে নাক ডাকার সমস্যা কমতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, এ ক্ষেত্রে পরিমাণ মতো মেথি বীজ নিয়ে আধ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সময় হয়ে গেলে পানীয়টা পান করে শুয়ে পরতে হবে। এমনটা নিয়মিত করলে দেখবেন শরীর চাঙ্গা হয়ে উঠতে সময় লাগবে না।


স্টিম


অনেক সময় সর্দি-কাশির কারণেও নাক দিয়ে বায়ু চলাচল ঠিক মতো হতে পারে। ফলে ঘুমানোর সময় নাক দিয়ে ওয়াজ বেরুতে শুরু করে। এ ক্ষেত্রে কিছু সময় অন্তর অন্তর গরম ভাব নিলে দারুন উপকার পাওয়া যায়। তাই এবার থেকে সর্দি-কাশি হলেই এই ঘরোয়া পদ্ধতিটির সাহায্য নেবেন। দেখবেন ঘুমনোর সময় কোনও সমস্যাই হবে না।


সূত্র: একুশে ইটিভি।


বিবার্তা/কামরুল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com