শিরোনাম
বাড়ির আসবাবপত্রে ধুলো-বালির সমস্যা হলে...
প্রকাশ : ২৪ মার্চ ২০১৮, ১৫:৫৭
বাড়ির আসবাবপত্রে ধুলো-বালির সমস্যা হলে...
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

এইতো কদিন আগে ফাল্গুনের বাতাস দিয়ে বিদায় হলো শীতের প্রকোপ। আসি আসি যাই যাই করে চলেও গেলো ফাল্গুন। এবার চলে এলো চৈত্র। কাঠ-ফাটারোদ হলেও বাতাস বইছে চারিদিকে সঙ্গে আছে ধুলো-বালির সংমিশ্রণ। আবহাওয়া অনুকূলে হলেও ধুলার প্রভাব অবশ্য এখনই প্রকট। দরজা, জানালা বন্ধ রেখেও খুব একটা লাভ হচ্ছে না। বাড়ির আসবাবের ওপর সুযোগ পেলেই আসন গেড়ে বসসে এই ধুলো-বালি।


আমাদের প্রয়োজনে এবং ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে আমরা নানা ধরণের আসবাবপত্র ব্যবহার করি। পছন্দ এবং ঘরের সাথে মিলিয়েই মূলত কেনা হয়ে থাকে আসবাবপত্র। কাঠ, ষ্টীল, বেত ইত্যাদি নানা জিনিসের তৈরি আসবাবপত্র আমরা আমাদের ঘর সাজাতে ব্যবহার করি। আসবাবপত্র দীর্ঘদিন টিকিয়ে রাখতে এবং ভালো রাখতে নিয়মিত যত্ন নেয়া উচিৎ।


কিন্তু একেক ধরণের আসবাবপত্র একেকভাবে যত্ন নিতে হয়। এই কাজে ভুল হলে আসবাবটি যে জিনিস দিয়ে তৈরি তার ক্ষতি হয় এবং পরবর্তীতে পুরো ফার্নিচারটি নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। তাই জানতে হবে কোন ফার্নিচার কীভাবে পরিষ্কার করতে হয়।


সমস্যা হয় যখন সাজানোর উপকরণ বা আসবাবে থাকে খাঁজকাটা নকশা। কারুকাজের ভেতরে ধুলা জমে যায়। প্রতিদিন হয়তো এইগুলোর ওপর দিয়ে মোছা হয়, কিন্তু ভেতরে-ভেতরে ময়লা জমতে থাকে। কিছুদিন পরপরই পরিষ্কার করে ফেলতে পারলে ভালো।


প্রতিদিন স্বাভাবিক নিয়মে কাপড় দিয়ে আসবাব পরিষ্কার করার সময় খাঁজকাটা নকশার জায়গাগুলো ব্রাশের সাহায্যে পরিষ্কার করে ফেলুন। কয়েক দিন বিরতি দিলেই এসব খাঁজে ধুলা-ময়লা জমে যায়। জমে যাওয়া ধুলা-ময়লা পরিষ্কার করতে গেলে ঝক্কি বাড়ে।


জমে থাকা ময়লার কারণে ঘরের সৌন্দর্যহানি ঘটে, আবার তা স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণও বটে। বড় বড় খাঁজের নকশা করা আসবাবের জন্য বড় ব্রাশ আর খুদে নকশার জন্য ছোট ব্রাশ প্রয়োজন। ছোট ব্রাশ হিসেবে পুরোনো টুথব্রাশও কাজে লাগাতে পারেন।


কাঠ-বাঁশ-বেত
কাঠের আসবাব পরিষ্কারের সময় পানি লাগাবেন না। এতে বার্নিশ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। নিয়মিত শুকনা কাপড় ও ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করলে বার্নিশের চকচকে ভাবটা দীর্ঘদিন পর্যন্ত থাকে। অন্যথায় সহজেই ধুলা জমে যায় কাঠের খাঁজে। ধুলা জমে গেলে তা পরিষ্কার করার জন্য ব্রাশ পানিতে ভিজিয়ে নেওয়ার পর পানি ঝেড়ে নিতে পারেন। এরপর ভেজা ব্রাশ দিয়ে ময়লা পরিষ্কার করে ফেলুন। পানির কারণে কাঠের সামগ্রী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে ধুলা জমে থাকাটা স্বাস্থ্যকর নয়। তাই কাঠের খাঁজে যদি ধুলা জমেই যায় তাহলে বাঁশ-বেতের খাঁজ পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে ব্রাশ ব্যবহার করুন, এ ক্ষেত্রে অন্য কোনো পরিষ্কারক দ্রব্য ব্যবহার করবেন না।


ধাতব সামগ্রী
নকশাদার ধাতব সামগ্রী ঐতিহ্যের পরিচায়ক। খাঁজকাটা এসব ধাতব জিনিসের জন্য একটু বাড়তি যত্ন প্রয়োজন। দুই সপ্তাহ অন্তর কিংবা মাসে একবার আলাদাভাবে একটু সময় দিন এসব ধাতব সামগ্রীর যত্নে। উপাদানভেদে যত্নের ধরনটা অবশ্য খানিকটা আলাদা।


লোহার সামগ্রী
লোহার সামগ্রীর নকশাকাটা অংশ তেল ও ব্রাশের সাহায্যে পরিষ্কার করুন। নারকেল তেল কিংবা সর্ষের তেল ব্যবহার করা যায়। পরিষ্কার করা হয়ে গেলে শুকনা কাপড় বা টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে ফেলুন। খাঁজের অংশগুলোতে তেল লেগে থাকতে পারে। এগুলো ভালোভাবে মুছতে হবে। এসবে কখনো পানি লাগাবেন না।


পিতল, তামা বা কাঁসার সামগ্রী
পিতল, তামা বা কাঁসার সামগ্রী পরিষ্কার করতে লেবু বা তেঁতুলের রস ও পানির মিশ্রণে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। ব্রাশের সাহায্যে খাঁজের অংশগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এ সময়টাতেও খাঁজের অংশগুলোর দিকে বাড়তি খেয়াল রাখা প্রয়োজন। ধোয়ার পর কাপড় দিয়ে মুছে নিন। ভালোভাবে শুকিয়ে গেলে উঠিয়ে রাখুন। নকশাদার রুপার সামগ্রী পরিষ্কার করতে পারেন ব্রাশ ও ট্যালকম পাউডার দিয়ে।


কাচ-পাথরের যত্ন
কাচের নকশাদার সামগ্রী দুই সপ্তাহ পর পর ডিটারজেন্টের সাহায্যে পরিষ্কার করুন। না পারলে মাসে অন্তত একবার সময় বের করতে চেষ্টা করুন। কাচের জিনিসটি ডিটারজেন্ট পানিতে পরিষ্কার করার পর পানি দিয়ে আবার পরিষ্কার করুন। ছোট আকারের জিনিস হলে ডিটারজেন্ট মেশানো পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে পারেন। এরপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কাচ পরিষ্কারের জন্য বিশেষ ধরনের স্প্রে কিনতে পাওয়া যায়। ডিটারজেন্টের পরিবর্তে এ ধরনের স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন। তবে খাঁজের অংশগুলো পরিষ্কার করতে সঙ্গে ব্রাশও চাই।


পাথরের নকশা করা জিনিস পরিষ্কার করার সময় বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। এমন সামগ্রী পরিষ্কার করার সময় তেল বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার না করাই ভালো; বরং শুকনা ব্রাশের সাহায্যে সাবধানে পরিষ্কার করুন।


মনে রাখবেন
যে কোনো কিছু পরিষ্কার করার পর খেয়াল রাখুন, যেন পরিষ্কারক দ্রব্যটি লেগে না থাকে। বিশেষ করে খাঁজকাটা অংশগুলোর ব্যাপারে সচেতনতা প্রয়োজন। আসবাবের নকশাদার অংশগুলো পরিষ্কার করার সময় এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের দিকে কাপড় বা ব্রাশ টেনে নেবার সময় খেয়াল করুন, শেষ প্রান্তে সব ময়লা যেন আটকে না থাকে। খাঁজের এক প্রান্তে ময়লা জমে থাকলে আবার ব্রাশের সাহায্যে পরিষ্কার করে নিন।


পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো (যেমন ব্রাশ, কাপড় প্রভৃতি) একসঙ্গে সংরক্ষণ করুন। এতে পরিষ্কার করার সময় এসব জিনিস খুঁজতে বাড়তি সময় ব্যয় হবে না।


বিবার্তা/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com