শিরোনাম
বসন্ত বরণে রঙিন সাজ!
প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৯:২৪
বসন্ত বরণে রঙিন সাজ!
মডেল : আমির পারভেজ ও জাকিয়া ইমি, ছবি : নাফিস শাহরিয়ার
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

আহা আজি এ বসন্তে এত ফুল ফোটে, এত বাঁশি বাজে এত পাখি গায় আহা আজি এ বসন্তে। রবি ঠাকুর গানটি যখন লিখেছেলেন, তখন তিনিও হয়তো বসন্ত রাঙা ফাগুনে বসেই লিখেছিলেন।


চির অমলিন যৌবনের ঝাঁজে ভরা এই গান প্রতিটি তরুণ-তরুণীর হৃদয়ের কথা বলে। শীতের জড়তা কাটিয়ে প্রকৃতিও তার যৌবন নিয়ে ঠেকিয়েছে ফাগুনের দ্বারপ্রান্তে। কুঁড়িগুলো চোখ মেলে চাইছে, ডালে ডালে কুহু ডাকছে কোকিল। আবেগে আপ্লুত যৌবন মন অধীর আগ্রহে বসে আছে ফাগুন রাঙা দিনকে বরণ করে নিতে।


সাজ-সজ্জা, হাসি আর গানের মাধ্যমে বসন্ত বরণ যেন এখন প্রাণেরআবেদন হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলার সব তরুণ-তরুণীদের কাছে। বিশেষ এই দিনে সব তরুণীর চাওয়া, নিজেকে সময়োপযোগী সাজিয়ে নিতে। আসুন দেখে নেয়া যাক, কেমন হবে আপনার বসন্তের মন রাঙানো সাজ।


বসন্তের সাজ


প্রথমে ঠাণ্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে প্যান কেক বা কমপ্যাক্ট পাউডার দিয়ে মুখে বেইসকরে নিন। বসন্তের সকালে ও রাতে বাদামি, গাঢ় বাদামি বা পিচ রঙের ব্লাশনব্যবহার করতে পারেন। সাদা ও সোনালি রঙের মিশ্রণে আইশ্যাডো দিয়ে চোখসাজাতে পারেন। স্লিভলেস ব্লাউজ পরলে চোখকে স্মোকি করে সাজাতে হবে।ঠোঁটে হালকা রঙের লিপস্টিক ব্যবহার করতে হবে। তবে সাজে ভিন্ন মাত্রাআনতে চাইলে হালকা মেকআপের সঙ্গে ঠোঁটে চড়া লাল রঙ দিতে পারেন।কপালে দেয়া টিপ আপনার সাজকে আরও উৎসবমুখর করবে।


বসন্তের পোশাক


বসন্তে সব মেয়েরই পছন্দ শাড়ি। তবে বর্তমানে একরঙা শাড়ির ট্রেন্ডটাই বেশি।এর সঙ্গে হালকা সাজটা বেশ মানিয়ে যায়। শাড়ি এক রঙের পরলে ব্লাউজটাবাহারি ভালো লাগে। হালকা হলুদ জমিন ও কমলা পাড়ের শাড়ির সঙ্গে লালব্লাউজ মানানসই। কমলা রঙের ব্লাউজ পরতে পারেন হালকা সবুজ জমিন হলুদপাড়ের শাড়ির সঙ্গে। পয়লা ফাল্গুনে ঘটি হাতা, খাটো হাতার ব্লাউজের আবেদনতো আছেই। ব্লাউজে ছোট ঘণ্টা, কলকা ব্যবহার করা যেতে পারে। শাড়ির সঙ্গেকনট্রাস্ট করে ব্লাউজের রংটা বেছে নিন।ফাল্গুন মানেই ফুলে ফুলে প্রকৃতি ছেয়ে যাওয়া। সেই সঙ্গে নারীদের বাসন্তী শাড়িরসঙ্গে ফুলের সাজ। বাসন্তী তাঁতের শাড়ী পরে খোপা কিংবা এলো চুলে কয়েকটিফুল না হলে কি চলে? ফালুনের পুরো সাজটাই যেনও মাটি হয়ে যায় ফুল ছাড়া।


ফাল্গুনের সারাদিন প্রকৃতি যেমন ফুলে ফুলে বসন্তকে বরণ করে নেবে, তেমনিবাঙালী ললনারাও প্রকৃতির সাথে নিজেদের একাত্মতা ঘোষনা করবে। ফুলেফুলে সবার খোপা দুলে উঠুক এটাই কাম্য।


ফুলের রিং
আগে নারীরা ফাল্গুনে যেমন খোপার এক পাশে একটি বা দুটি ফুল গুঁজে দিতোএখন সেই স্টাইল অনেকটাই চলে গিয়েছে। ফুলের গহনা ও ফুল লাগানোরধরণে এসেছে অনেক পরিবর্তন। খুব ছিম ছাম গহনা পরে মাথায় একটি বড়ফুলের রিং পরার প্রচলনটাই বেশি এখন। গত কয়েক বছর ধরেই এই প্রচলনটাবেশি দেখা যাচ্ছে।


তরুণীরা শাড়ি, সেলোয়ার কামিজ কিংবা ফতুয়ার সঙ্গে মাথায় এই ফুলের রিং গুলো পরতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে। সব ধরণের সাজের সঙ্গেই মানিয়ে যায় এই ফুলের রিং গুলো। একটি বোহেমিয়ান ধাঁচের এই ফুলের রিং গুলো সাজে আনে ভিন্নতা ও আভিজাত্য।


খোলা চুলে ফুল
চুলে ফুল পরতে হলেই চুল বাধতে হবে এমন ধারণায় এসেছে পরিবর্তন। এখনতরুণীরা খোলা চুলেই পরছে নানান রকমের ফুল তবে গোলাপ ফুল পরার প্রচলনএকেবারেই কমে গিয়েছে। ফ্যাশন সচেতন নারীরা এখন জারবেরা কিংবা অর্কিডলাগাতেই বেশি পছন্দ করে।


বেনীতে ফুল
ইদানিং বেনির মাঝে মাঝে একটি একটি করে ছোট ফুল গুঁজে দেয়ার চলএসেছে। এই ফাল্গুনে আপনিও বেনির মাঝে ছোট ছোট ফুল গুঁজে নিতে পারেন।


কৃত্রিম ফুল
তাজা ফুলের পাশাপাশি কৃত্রিম ফুলও চলচে সমান তালে। গতবারের মতএইবারের ফাল্গুনেও নারীদেরকে চুলে কৃত্রিম ফুল কিংবা ফুলের ক্লিপ পরতে দেখাযাবে।


গহনা
ফাল্গুনে ফুলের গহনাটাই বেশি চলে। গাদা ফুল কিংবা রজনীগন্ধা দিয়ে তৈরী করা তাজা ফুলের গহনা গুলো শাড়ির সঙ্গে বেশ মানিয়ে যায়। ইদানিং কৃত্রিম ফুলের গহনাও খুব চলছে। এবারের ফাল্গুনে কৃত্রিম ফুলের গহনার বেশ চাহিদা রয়েছে। এছাড়াও বরাবরের মতই লম্বা মালার চলও থাকবে। সেই সঙ্গে হাত ভরে পরে নিন রংবেরঙের কাঁচের চুড়ি।


মেকআপ
দিনের বেলা বাইরে গেলে মুখে হালকা করে ফেসপাউডার লাগিয়ে নিন। কন্সিলার দিয়ে মুখের ছোটখাটো দাগ ঢেকে দিতে পারেন। মুখে হালকা ব্লাশন দিন। এই বছর লালের চাইতে কমলা লিপস্টিক চলছে বেশি। তাই সাজের সঙ্গে মানিয়ে গেলে কমলা লিপস্টিক দিয়ে ঠোট জোড়াকে রাঙিয়ে নিতে পারেন। চোখে হালকা আই শ্যাডো দিন। এক্ষেত্রে ন্যুড, ব্রাউন, গোল্ডেন, কপার ইত্যাদি রঙ গুলো বেশি ভালো লাগবে।


ছেলেদের সাজ


পোশাক
পাঞ্জাবী, ফতুয়া, টি-শার্ট যাই পড়ুন না কেন তাতে রাখুন ফাল্গুনের ছোঁয়া। পছন্দ করুন লাল, হলুদ, সবুজ রঙের অথবা এগুলোর চেক মিশেলের কাপড়। বেশ মানিয়ে যাবে।


আনুসাঙ্গিক
ছেলেদের তো গহনা বা মেকআপের প্রয়োজন হয় না। তবে একটু টুকিটাকি আনুসাঙ্গিক যেমন- হাতঘড়ি, সানগ্লাস, রুমাল প্রভৃতি সঙ্গে রাখতে পারেন। দারুণ মানিয়ে যাবে।


উল্লেখ্য, বাংলাদেশে বঙ্গাব্দ ১৪০১ সাল থেকে প্রথম ‘বসন্ত উৎসব’ উদযাপন করার রীতি চালু হয়। সেই থেকে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদ বসন্ত উৎসব আয়োজন করে আসছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় আজ দিনভর চলবে তরুণ-তরুণীদের বসন্তের উচ্ছ্বাস প্রকাশ। ফোন, ফেসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলবে শুভেচ্ছা বিনিময়। আজ নানা আয়োজনে বসন্তকে বরণ করবে বাঙালি।


বিবার্তা/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com