ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ার কারণ
প্রকাশ : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:৫২
ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ার কারণ
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ব্রেস্ট ক্যানসার (স্তন ক্যানসার) একটি জটিল রোগ। নারীদের কাছে এ রোগ একটি আতঙ্কের নাম। পুরুষের চেয়ে নারীদের স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে শতভাগ বেশি। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে রোগী ভালো হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশেই বেড়ে যায়। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এখন নারীদের স্তন ক্যানসার মধ্যে শীর্ষস্থান দখল করে আছে। যদিও এর আগে জরায়ুর ক্যানসার শীর্ষস্থানে অবস্থান করছিল। নারীরা তাদের নিজেদের এই গোপন অঙ্গের রোগগুলো সহজে কারও কাছে বলতে চান না। ফলে তারা এ ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।


চিকিৎসকরা বলছেন, ‘সেলফ ডিটেকশন’ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে প্রশ্ন কোন লক্ষণ দেখলে সতর্ক হতে হবে? কী কারণেই বা এই জটিল রোগ বাড়ছে? ভারতীয় এক চিকিৎসেকের মতে, বয়স ২৫ পার হলেই চিকিৎসকদের কাছে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে হবে। স্তনে মাংসপিণ্ড (লাম্প) বা টিউমার হওয়া মানেই কিন্তু ক্যানসারের ঝুঁকি আছে, এমনটা নয়। বরং ১০-১৫ শতাংশ টিউমারেই এই ভয় থাকে, কিন্তু সেই চিকিৎসা দ্রুত শুরু করা দরকার।


এর কিছু নির্দিষ্ট ঝুঁকির কারণ রয়েছে, যেগুলোর জন্য এই ক্যানসারের সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে। নিচে স্তন ক্যানসারের কিছু সাধারণ কারণ ও ঝুঁকির ফ্যাক্টরগুলো দেখে নেয়া যাক-


১. পারিবারিক ইতিহাস: যদি আপনার মা, বোন বা অন্য কোন ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের স্তন ক্যানসার থাকে, তবে আপনার এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।


২. জেনেটিক মিউটেশন: বিআরসিএ১ এবং বিআরসিএ২ জিনের মিউটেশন স্তন ক্যানসারের সম্ভাবনা অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া টিপি৫৩ এবং পিটিইএন এর মতো অন্যান্য জেনেটিক মিউটেশনও স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।


৩. হরমোনাল ফ্যাক্টর: দীর্ঘদিন ধরে ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্টেরন হরমোনের বেশি মাত্রায় প্রভাব থাকার ফলে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। যেমন, অল্প বয়সে মাসিক শুরু হওয়া এবং দেরিতে মেনোপোজ হওয়া।


৪. প্রজনন ও মাসিকের কারণ: সন্তান ধারণ না করা বা প্রথম সন্তানের জন্ম দেরিতে দেয়া (৩০ বছর বা তার পরে) স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।


৫. হরমোন থেরাপি: মেনোপোজ পরবর্তী হরমোন থেরাপি (যেমন ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন সমন্বিত থেরাপি) নেয়া হলে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়তে পারে।


৬. জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাস: অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত ওজন, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা এবং মদ্যপান ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।


৭. রেডিয়েশন থেরাপি: যদি পূর্বে বুকে রেডিয়েশন থেরাপি নেয়া হয়ে থাকে, তবে ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।


৮. ডেনস ব্রেস্ট টিস্যু: স্তনের টিস্যু যদি বেশি ঘন হয়, তবে ক্যানসারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে এবং ম্যামোগ্রামে ক্যানসার নির্ণয় করাও কঠিন হয়ে পড়ে।


৯. বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ: কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ, বিশেষ করে পলিউশন এবং ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে আসা ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।


১০. অ্যালকোহল ও ধূমপান: নিয়মিত অ্যালকোহল সেবন ও ধূমপান স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।


এগুলো ছাড়াও, কিছু কারণে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়তে পারে যা এখনো পুরোপুরি প্রমাণিত নয়। এই রোগের ঝুঁকি কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা বজায় রাখা, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা, এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনার পরিবারে স্তন ক্যানসারের ইতিহাস থাকে, তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।


বিবার্তা/জেএইচ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com