গরমে কী খাবে শিশুরা
প্রকাশ : ২২ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:২২
গরমে কী খাবে শিশুরা
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

দেশজুড়ে চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এ অবস্থায় বিপর্যস্ত হয়ে পরেছে জনজীবন। গরমের এই তীব্রতায় খাওয়া-দাওয়ার প্রতি আগ্রহ নেই কারও। খেতেই যেন ইচ্ছে করে না। বড়দের যখন এই অবস্থা তখন আমাদের শিশুদের অবস্থাটা কী দাঁড়ায় গ্রীষ্মের এই সময়ে?


গ্রীষ্মে শিশু কী খাবে, খাবারের ধরনটা কেমন হবে এমব বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের শিশু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শরীফুন নাহার।


তিনি জানান, শীতকালে শিশুর রুচি নিয়ে তেমন সমস্যা না হলেও, গরমের সময়ে কিছুটা বিপত্তি তো হয়ই। খুব গরমে সাধারণত শিশু কিছু খেতে চায় না। এতে শিশু প্রয়োজনীয় পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হয়, মা-বাবাও দুশ্চিন্তায় পড়েন। এই গরমে শিশুর খাদ্যতালিকায় হালকা, পুষ্টিকর, টাটকা এবং সহজপ্রাপ্য খাবার রাখতে হবে। সেটা হতে পারে নরম খিচুড়ি বা সবজির স্যুপ। তবে মাছ-মাংসও থাকতে পারে পরিমিতভাবে।


শিশুর খাবার ঘরেই তৈরি করা ভালো। বাইরের কেনা খাবার স্বাস্থ্যসম্মত নয়। এ সময় ডায়রিয়ার প্রকোপ হতে পারে। ঘরে তৈরি টাটকা খাবার শিশুকে এ ধরনের ঝুঁকির হাত থেকে রক্ষা করবে। সেই সঙ্গে নজর দিতে হবে শিশু যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান করছে কিনা। পানি যেন অবশ্যই বিশুদ্ধ হয় তা লক্ষ রাখতে হবে। খুব ঠান্ডা বা গরম পানি দুটোই শিশুর জন্য ক্ষতিকর।


শিশুকে মৌসুমি ফল বেশি খাওয়াতে হবে। বিভিন্ন ধরনের ফলের রসও দেওয়া যেতে পারে, তবে তা বাসায় তৈরি করা হতে হবে। বাজারের প্যাকেটজাত ফলের রস শিশুর দাঁতের ক্ষতি করে। এ ছাড়া এগুলো সংরক্ষণের জন্য যেসব রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় তা শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই বাইরের খাবার, কোমল পানীয় এমনকি ফলের রস ইত্যাদি থেকে শিশুকে দূরে রাখাই শ্রেয়।


সন্তানকে যে তরল দুধ খাওয়াচ্ছেন তা তার খাওয়ার সময়টাতেই বানিয়ে দিতে হবে। খুব বেশিক্ষণ আগে থেকে বানিয়ে রাখা উচিত না। এতে পুষ্টিগুণ নষ্ট হওয়ার ভয় থাকে। অন্যান্য খাবার তৈরিতেও এ বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। বেশি আগে বানিয়ে রাখা খাবার শিশুর জন্য ভালো নয়। বাইরে যাওয়ার সময় শিশুর খাবার তৈরি করে নিয়ে যাওয়া ভালো। সে ক্ষেত্রে খাবার এবং পানি বহন করার জন্য ভালো মানের ফুড গ্রেড প্লাস্টিকের পাত্র ব্যবহার করতে হবে, যাতে খাবারের মান অক্ষুণ্ন থাকে।


গরমের এই সময়টায় খাবার নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা খুব বেশি থাকে। তাই শিশুকে খাবার দেওয়ার আগে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে নিতে ভুলবেন না, খাবার আদৌ ঠিক আছে কি না।
শিশুর বয়স যদি ছয় মাসের কম হয় তাহলে তাকে শুধু বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। মনে রাখবেন, ছয় মাসের কম বয়সের শিশুকে এ সময় আর কোনো খাবার দেওয়ার দরকার নেই, এমনকি পানিও না। শিশুকে বারবার বুকের দুধ দিতে হবে। এর মাধ্যমে শিশু তার সব প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেয়ে যাবে।


আর খেয়াল রাখতে হবে, গরমের সময়ে মশা, মাছি, পিঁপড়া প্রভৃতি পোকামাকড়ের প্রকোপ দেখা দেয়। এগুলো আপনার শিশুর অসুস্থতার কারণ হতে পারে। ঘরকে এসব পোকামাকড় থেকে মুক্ত রাখতে কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন শিশু কোনোভাবেই এসব কীটনাশকের নাগাল না পায়। পোকামাকড় থেকে মুক্ত রাখার জন্য ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ফুলের টব বা অন্য কোথাও এমনকি বালতিতেও পানি জমতে দেওয়া যাবে না। কারণ এগুলো ডেঙ্গু রোগবাহী মশার বংশবৃদ্ধিতে সহায়ক। ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি ব্যবহার করতে হবে। শিশুর বিছানা পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।


গরমের এই দিনগুলোতে শিশুর সুস্থতার দিকে সব সময় নজর দিতে হবে। শিশুর যেকোনো শারীরিক সমস্যায় দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।


বিবার্তা/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com