চুলার গ্যাস লিকেজ হলে যেভাবে বুঝবেন
প্রকাশ : ০৪ মার্চ ২০২৪, ২২:৫৪
চুলার গ্যাস লিকেজ হলে যেভাবে বুঝবেন
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

প্রাত্যহিক জীবনে গ্যাস একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। গ্যাস ছাড়া রান্না থেকে শুরু করে ইন্ডাস্ট্রিয়াল উন্নতির কথা চিন্তা করা যায় না। বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকায় এখন এলপিজি বা সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করে রান্নার কাজ করে থাকে। কিন্তু একটু অসাবধান হলেই ঘটতে পারে নানা দুর্ঘটনা। সে জন্য বাসা বা বাড়িতে গ্যাস লিকেজ হয়েছে কিনা, সেটি জানা জরুরি। সমস্যা শনাক্ত করতে পারলে ঝুঁকি রোধ করা সম্ভব হয়। এ জন্য গ্যাস লিকেজ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।


মনে রাখবেন, আবদ্ধ জায়গায় গ্যাস লিকেজ হলে জমে থাকা গ্যাস থেকে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে। তাই বাড়িতে, কারখানায় কিংবা রেস্টুরেন্টে যেখানে গ্যাসের লাইন ব্যবহার করা হয় সেসব জায়গায় লিকেজ থাকলে তা দ্রুত সারিয়ে নিতে হবে। কীভাবে গ্যাসের লিকেজ বোঝা যাবে আর কী করা যেতে পারে তা নিয়ে কিছু পরামর্শ জেনে নিন।


# গ্যাস লিকেজের গন্ধ তীব্র হতে পারে। ঘরে পচা ডিমের মতো অস্বাভাবিক গন্ধ হতে পারে। প্রাকৃতিক গ্যাস মূলত কয়েক ধরনের হাইড্রোকার্বনের মিশ্রণ। এটি গন্ধহীন হয়। তবে মার্কেপ্টেন নামক একপ্রকার গান্ধব পদার্থ এতে যুক্ত হলে এর গন্ধ তীব্র হয়। তাই গ্যাস লিকেজ হলে ওই তীব্র গন্ধ পাওয়া যায়। যা থেকে আপনি বুঝে নিতে পারেন কোথাও গ্যাসের লিকেজ রয়েছে।


# গ্যাস লিকেজ থাকলে হিস হিস শব্দ হতে পারে। ব্যবহৃত সিলিন্ডারে বা পাইপের মধ্যে উচ্চ চাপে গ্যাস আবদ্ধ থাকে। গ্যাস লিকেজ হলে ওই স্থান থেকে গ্যাস বের হয়ে আসে। সেসময় তীক্ষ্ণ হিস হিস শব্দ হয়। তাই আগুন জ্বালানোর আগে সতর্ক হোন। কোথাও তীক্ষ্ণ শব্দ শোনা যায় কিনা খেয়াল রাখুন।


# গ্যাস লিকেজ হলে ছোট গাছগুলো অক্সিজেনের অভাবে নিস্তেজ হয়ে যায়। তাই ঘরের বা আশপাশের বাগানের গাছগুলোর দিকে নজর দিন। যদি গাছগুলো নিস্তেজ মনে হয় বা মরে যায় তবে বাড়ির গ্যাসের লাইন চেক করুন। কোথাও গ্যাস লিকেজ হয়েছে কি না তা দেখে নিন।


# গ্যাস লিকেজের কারণে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়। এতে শরীরে চাহিদা অনুযায়ী অক্সিজেন প্রবেশ করতে পারে না। তাই মাথা ঘুরতে পারে, মাথাব্যথা হতে পারে, এমনকি বমি বমি ভাবও হতে পারে। তাই ওষুধ খাওয়ার আগে বাড়ির গ্যাসের লাইন লিকেজ কিনা তা চেক করে নিন।


গ্যাস লিকেজ হলে করণীয়:


বাড়িতে গ্যাস লিকেজ হওয়ার বিষয়টি বুঝতে বা শনাক্ত করতে পারলে তাৎক্ষণিক ওই জায়গা ত্যাগ করে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে হবে। ঘর থেকে দূরত্বে ফাঁকা জায়গায় আশ্রয় নিতে পারেন।


# আবদ্ধ ঘরে যদি কখনো গ্যাস লিকেজ হয় তাহলে তা ঘরে বা রুমে জমে থাকে। এ অবস্থায় ছোট্ট একটি আগুনের ফুলকি বা শিখা থেকেও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হতে পারে। এ জন্য লিকেজ শনাক্ত হলে কখনোই আগুন জ্বালাবেন না এবং বৈদ্যুতিক কোনো যন্ত্র চালু করবেন না।


# আবদ্ধ জায়গায় জমে থাকা গ্যাস থেকেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়। এ জন্য ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ থাকলে তা খুলে রাখুন। গ্যাস উন্মুক্ত হয়ে যাবে। বাইরে থেকে বাতাস প্রবেশ করবে ভেতরে। বিপদের কোনো ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যাবে।


# পাইপলাইন বা সিলিন্ডার থেকে গ্যাস লিকেজ যদি শনাক্ত করা সম্ভব হয়, তাহলে গ্যাসের যে মূল সরবরাহ রয়েছে সেটি বন্ধ করুন।


# গ্যাস লিকেজে শনাক্ত করতে পারলে কালক্ষেপণ না করে নিকটস্থ ফায়ার সার্ভিস বাহিনীকে বিষয়টি অবহিত করতে হবে। প্রয়োজনে তারা ওই স্থানে আসবে এবং এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা মোকাবিলা রোধ করা সম্ভব হবে।


# এ ছাড়া দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নিয়মিত গ্যাসলাইন রক্ষণাবেক্ষণ করা, অপ্রয়োজনে গ্যাস লাইন ব্যবহার না করা, গ্যাস সরবরাহের লাইন বন্ধ রাখার সুইচ হাতের কাছে রাখা, বাসা-বাড়িতে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র রাখা ও সম্ভব হলে কার্বন মনোক্সাইড শনাক্তকারী যন্ত্র রাখতে পারেন।


বিবার্তা/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com