বাজার খরচে সাশ্রয় করবেন যেভাবে
প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৩, ০৯:১৩
বাজার খরচে সাশ্রয় করবেন যেভাবে
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্নবিত্ত, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট যেন সবাইকেই অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন করেছে। এমন একটা অবস্থায় দৈনন্দিন জীবনে কীভাবে আরেকটু অর্থনৈতিক সাশ্রয় ঘটানো যায়, সেদিকেই এখন নজর দেওয়ার প্রবণতা গড়ে উঠেছে।


আপনিও সাশ্রয় করতে পারেন, কমাতে পারেন বাজারের খরচ। কিন্তু কীভাবে? জানুন। 


ঘরোয়া বাজেট তৈরি ও হিসাবরক্ষণ


বাড়িতে সাপ্তাহিক, মাসিক এবং বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব মতো একটি বাজেট তৈরি করার আসলে কোনো বিকল্প নেই। একেবারে সেই বাজেট হয়তো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মেনে চলা সম্ভব হয় না, কিন্তু পরিকল্পনামাফিক খরচগুলো সাজিয়ে নেওয়ায় বাড়তি খরচ খুব সহজেই চোখে ধরা পড়ে। তবে এর জন্য প্রতি সপ্তাহে সময় করে একবার সাপ্তাহিক খরচাপাতি হালনাগাদ করে নেওয়া দরকার। এর জন্য একেবারে দিন–তারিখসহ আলাদা একটি ডায়েরি রাখা খুবই সুবিধাজনক। গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী মিলে বসে মাসিক বাজেটে কী কী গরমিল হলো, তা মাস শেষে দেখে রাখা যেতে পারে।


দরকারি জিনিসগুলির তালিকা বানান


কোন জিনিসগুলি কেনা জরুরি, তার একটি তালিকা তৈরি করে নিন প্রথমে। একটা কাগজে সব জিনিস পরিমাণ-সহ মনে করে লিখে ফেলুন। তার পর সেই তালিকাটি সঙ্গে নিয়ে দোকানে যান। তালিকা মিলিয়ে প্রতিটি জিনিস কিনলে ভুল হওয়ার কথা নয়। পরিকল্পনা করে কেনাকাটা করে বাড়তি খরচ হওয়ারও আশঙ্কা কম।


দ্রুত নষ্ট হয়ে যায় এমন খাবার কিনবেন না


দোকান থেকে কিনে আনার দু’-তিন দিন পর ব্যবহার করলে নষ্ট হয়ে যাবে, এমন খাবার একসঙ্গে বেশি করে কিনবেন না। তাতে টাকা ব্যয় হবে। দুধ, দই, পনির— এই ধরনের খাবার খুব বেশি দিন সংরক্ষণ করে খাওয়া যায় না। অল্প দিনেই এই খাবারগুলির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। পাউরুটি, কেকও এই তালিকায় পড়ে।


কিছু জিনিস একসঙ্গে কিনলে বেশি লাভ


দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়, এমন খাবার একসঙ্গে কিনলে যেমন অর্থ বেশি ব্যয় হয়। তেমন কিছু জিনিস রয়েছে, যেগুলি একসঙ্গে অনেক কিনে নিলে সাশ্রয় হয়। এই তালিকায় পড়ে হ্যান্ডওয়াশ, ডিটারজেন্ট, শ্যাম্পু, বডি লোশন, চিনি, ডালের মতো খাবার। এগুলি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সব সময়ে দরকার পড়ে। একেবারে অনেক পরিমাণে কিনে রাখলে বার বার কেনার প্রয়োজন পড়ে না।


খাদ্যে অপচয় রোধ করুন


সাপ্তাহিক একটা মোটামুটি খাদ্যতালিকা বা মেন্যু থাকলে খাদ্য অপচয় অনেকটা কমে আসতে পারে। খাবার রান্না করার পর খেয়ে বেঁচে গেলে তা কীভাবে সদ্ব্যবহার করা যায়, তা নিয়ে ভাবা উচিত আমাদের। আগের দিনের ভাত দিয়ে মজাদার ভাতভাজি তো ঘরে ঘরেই হয়। কিন্তু রয়ে যাওয়া দুই টুকরো মাছ, একটু সবজি, এক টুকরো মুরগির মাংস—এমন সবকিছুর সঙ্গেই সেদ্ধ সবজি চটকে, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ কুচি মেখে বল বানিয়ে, ডিমে ডুবিয়ে ডুবো তেলে ভেজে বিকেলের নাশতায় বানিয়ে নেওয়া যায় মজাদার চপ। সবজির ফেলনা অংশ, যেমন: খোসা, বীজ ইত্যাদি দিয়ে মজার চচ্চড়ি, ভাজি ও ভর্তা বানানো সম্ভব। আর ঘরের বাগানের জন্য সবজির ফেলে দেওয়া অংশ কম্পোস্ট বানানোর কাজেও ব্যবহার করা যায়। সবচেয়ে বড় কথা, বাইরের খাবার না খেয়ে ঘরেই শিশুদের আবদারের পিৎজা, বার্গার, ফ্রাইড চিকেন বানিয়ে নিলে এগুলো স্বাস্থ্যসম্মত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সাশ্রয়ীও হয়ে থাকে।


ছাদ বা বারান্দায় বাগান করুন


লেবু, কাঁচামরিচ, ধনেপাতা, পুদিনাপাতা, কারিপাতা, অরেগানোপাতা ইত্যাদি নিজেদের বারান্দার বা জানালার কার্নিশের টব থেকে ছিঁড়ে এনে খেতে সে যে কী এক আত্মতৃপ্তি, তা বলে বোঝানোর নয়। আর সামান্য কয়েকটি টাকা হলেও রোজই এ থেকে সাশ্রয় করা যায়। সময়, সুযোগ ও জায়গা থাকলে বিভিন্ন শাকসবজি, ফলমূল নিজেরাই ছাদে, উঠোনে বা বারান্দার বাগানে উৎপাদন করে খাওয়া সম্ভব। এতে বাগানের পরিচর্যা করে অবসর সময়টাও সুন্দরভাবে কাটানো যায়।


ঘরের সামগ্রী পাইকারি দরে বা বিশেষ ছাড়ে কিনুন


বেশির ভাগ মুদিসামগ্রী, শুকনো বাজার, ফল, সবজি, মাছ, মাংস বেশি পরিমাণে কিনলে পাইকারি দরে পাওয়া যায়। তাই শুকনো ও মুদি বাজার মাসে একবার এবং কাঁচাবাজার সপ্তাহে একবার বেশি পরিমাণে করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। দেখেশুনে সুযোগমতো একটা বিদ্যুৎ–সাশ্রয়ী একটি ডিপফ্রিজ কিনে নিলে প্রথমে একটু বড় খরচ হলেও আখেরে লাভই হবে বলা যায়। সিজনে সস্তার ইলিশ আর আম কিনে ফ্রোজেন করে সারা বছরই খাওয়া যাবে। আবার সব অনলাইন স্টোর এবং সুপার মার্কেটেই ঘুরেফিরে প্রায় প্রতিদিন বেশ কিছু বিশেষ ছাড় পাওয়া যায় কেনাকাটায়। তাদের এই অফারগুলো মোবাইলে টেক্সট মেসেজে পাওয়ার ব্যবস্থা করলে সুযোগ বুঝে অনেক সাশ্রয় করা যায় দৈনন্দিন জীবনে। এ ছাড়া, একেবারে ছুটির দিনে সকালে থলে হাতে বাজারে গিয়ে মাছের বাজারের আগুন নিজের মাথায় করে ঘরে না ফিরে বুদ্ধি করে কার্যদিবসগুলোয় বা সন্ধ্যায় বাজার করতে গেলে একই জিনিস অনেক কম দামে কেনা যায়।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com