
এমন অনেকগুলো খাবার আছে যা স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ হিসেবে পরিচিত। আপনাকে ক্রমাগত বলা হচ্ছে যে, এই খাবারগুলো কখনোই খাওয়া উচিত নয়। তবে অনেক সময়, এই দাবিগুলো সঠিক নয়। এধরণের খাবারের অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা থাকে যা আমরা বেশিরভাগ সময়েই উপেক্ষা করি।
যে খাবারগুলো স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ মনে হলেও আসলে তা শরীরের জন্য উপকারী
১) আলু
রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ভয়ে অনেকেই আলু খেতে চান না। কিন্তু চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, পরিমিত পরিমাণ আলু রোজ খেলে শরীরের কোনও ক্ষতি তো হয়ই না, উল্টে আলুতে থাকা ফাইবার এবং পটাশিয়াম অন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা করে। তবে সেই আলু ভাজা বা সেদ্ধ করে না খেলেই ভাল।
২) চিজ়
প্রোটিন এবং ক্যালশিয়ামে ভরপুর চিজ় হাড়ের স্বাস্থ্য মজবুত করে। তবে এতে ক্যালোরির পরিমাণ অনেকটাই বেশি তাই উপকারী ভেবে প্রতিটি খাবারে চিজ় ছড়িয়ে কিন্তু দেওয়া যাবে না। পুষ্টিবিদদের মতে, ভাল মানের পরিমিত পরিমাণ চিজ় প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতেও সাহায্য করে।
৩) পিনাট বাটার
সাধারণ মাখনের মতো বাদাম দিয়ে তৈরি মাখনের মধ্যে বাইরে থেকে নুন, চিনি বা উদ্ভিজ্জ তেল থাকে না। ‘আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন’-এর তথ্য বলছে, মাখনে থাকা পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। ফলে হৃদ্রোগে আত্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
৪) ডার্ক চকোলেট
অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর ডার্ক চকোলেট মন-মেজাজ চাঙ্গা করে দিতে পারে। শরীরে কর্টিজ়ল হরমোনের ক্ষরণ কমিয়ে দিতে পারে। যার ফলে মন থাকে ফুরফুরে।
৫) মাখন
গরম ভাতে এক চামচ মাখন দিলে তার স্বাদই আলাদা। কিন্তু শরীরের কথা ভেবে মাখন খেতে পারেন না অনেকে। অথচ পুষ্টিবিদরা বলছেন, ভিটামিন এ এবং ক্যালশিয়ামে ভরপুর মাখন ত্বকের স্বাস্থ্য ভাল রাখে। পাশাপাশি, ভিটামিন ই চোখের জন্যও উপকারী।
৬) ডিম
ডিম অন্যতম স্বাস্থ্যকর খাবার। অনেক সময়, কুসুম বেশি কোলেস্টেরলযুক্ত হওয়ায় পুরো ডিম না খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। এটি বিশ্বাস করা হয়েছিল যে, ডিমের কুসুম হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তবে নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে, উচ্চ কোলেস্টেরল জাতীয় খাবার খেলে তা লিভারকে কম কোলেস্টেরল তৈরি করতে বাধ্য করে এবং এই স্তরগুলো স্থিতিশীল থাকে। আস্ত ডিম খারাপ কোলেস্টেরল পরিবর্তন করতে এবং রক্তে ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে বলেও মনে করা হয়।
৭) ফুল ফ্যাট দুধ
এটি সত্য যে পনির, মাখন এবং ক্রিমের মতো পূর্ণ ফ্যাটযুক্ত দুধে ফ্যাট এবং কোলেস্টেরল বেশি থাকে। তবে পনির কোলেস্টেরল বা হৃদরোগের অন্যান্য কারণগুলোকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে না। মাখন খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে। লো-ফ্যাটযুক্ত দুগ্ধে এমন কিছু পুষ্টিকর গুণাবলী নেই যা উচ্চ ফ্যাটযুক্ত দুগ্ধ ধারণ করে। ফুল ফ্যাটযুক্ত দুধ ভিটামিন কে ২ সমৃদ্ধ, যা হাড় এবং হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তবে এগুলো পরিমিতভাবে গ্রহণ করা উচিত।
৮) কফি
কফিতে রয়েছে ক্যাফেইন যা একটি উত্তেজক এবং বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। তবে পরিমিত কফি খাওয়ার বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য সুবিধা রয়েছে বলে জানা যায়। এটি আপনার মেজাজ এবং পারফরম্যান্সকে উন্নত করতে সহায়তা করতে পারে। এটি আপনার বিপাক বাড়াতেও পরিচিত। ক্যাফেইনে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে বলে জানা যায়। কফি ডিপ্রেশন, আলঝাইমার এবং পার্কিনসন রোগের জন্যও উপকারী হিসাবে পরিচিত। এটি লিভারের স্বাস্থ্যেরও সুরক্ষা দেয়। এটি দীর্ঘস্থায়ী হেপাটাইটিস সি হ্রাস এবং লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করতে পরিচিত।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]