ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ গেল আরও ৭৪ ফিলিস্তিনির
যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ১০ বন্দিকে মুক্তি দিতে সম্মত হামাস
প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪৯
ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ গেল আরও ৭৪ ফিলিস্তিনির
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসন চলছেই। দখলদার বাহিনীর এ হামলায় প্রতিদিনই প্রাণ হারাচ্ছে উপত্যকাটির নারী, শিশুসহ অসংখ্য ফিলিস্তিনি। এসব হামলার ধারাবাহিকতায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও কমপক্ষে ৭৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৮ জন খাদ্য সহায়তা পেতে গিয়ে প্রাণ হারান। অন্যদিকে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ১০ বন্দিকে মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছে হামাস।


বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।


সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসন চলছে এবং বুধবারও কমপক্ষে ৭৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যেই ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস জানিয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ১০ জন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছে।


তবে হামাস জানায়, যুদ্ধবিরতির আলোচনা এখনো “কঠিন” পর্যায়ে রয়েছে, কারণ ইসরায়েল “একগুঁয়েমি” দেখাচ্ছে। কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এই আলোচনা এগিয়ে চলেছে।


হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা তাহের আল-নুনু বলেন, “আমরা সর্বশেষ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ করেছি এবং আমাদের জনগণের সুরক্ষা, গণহত্যা বন্ধ এবং সম্মানজনকভাবে ত্রাণ প্রবাহ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় নমনীয়তা দেখিয়েছি।”


তিনি আরও বলেন, যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ে ইসরায়েলি বাহিনী যেসব এলাকায় অবস্থান করবে তা এমনভাবে নির্ধারণ করতে হবে যাতে ফিলিস্তিনি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত না হয় এবং পরবর্তী পর্যায়ের আলোচনার পথ সুগম হয়।


অন্যদিকে ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি হওয়ার “ভালো সম্ভাবনা” রয়েছে। তবে তিনি আরও বলেন, “এই সপ্তাহ বা পরের সপ্তাহে একটা চুক্তি হতে পারে, নিশ্চিত কিছু নয়। যুদ্ধ ও গাজার মতো ইস্যুতে কিছুই চূড়ান্ত নয়।”


ইসরায়েলি সেনাপ্রধান এয়াল জামির বলেন, এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যেখানে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ১০ জন জীবিত বন্দি এবং ৯ জনের মরদেহ হস্তান্তরের সম্ভাবনা রয়েছে।


তবে এরই মধ্যে গাজার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। বুধবার হামলায় ৭৪ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৮ জন গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) বিতরণ পয়েন্টে খাদ্য সহায়তা পেতে গিয়ে নিহত হন।


গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, এখন পর্যন্ত সহায়তা কেন্দ্রগুলোতে নিহতের সংখ্যা ৭৭০ ছাড়িয়েছে। আর ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের লাগাতার হামলায় প্রাণ হারানো ফিলিস্তিনির সংখ্যা প্রায় ৫৭ হাজার ৬০০ জনে পৌঁছেছে।


আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, “মানুষ এখন খাবারের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে গুলিতে মারা যাচ্ছে। এটা যেন এক নিত্যদিনের ভয়াবহ বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”


গাজার দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান হাসপাতাল নাসের হাসপাতাল জানায়, তারা জ্বালানি সংকটে চরম সঙ্কটময় অবস্থায় রয়েছে। হাসপাতালের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “জ্বালানি প্রায় শেষ, চিকিৎসকেরা সময়ের সঙ্গে লড়ছেন। তাপ, ক্লান্তি, ক্ষুধা সত্ত্বেও তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।”


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, ২০২৩ সালে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় ৬০০টিরও বেশি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হামলার ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে ৩৬টি সাধারণ হাসপাতালের মধ্যে কেবল ১৮টি আংশিকভাবে চালু রয়েছে।


বিবার্তা/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com