
ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) একটি ব্যাটালিয়নের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র প্রথমবারের মতো এমন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজের প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আইডিএফের নেতজাহ ইয়েহুদা ব্যাটালিয়নের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার প্রস্তুতির তথ্য নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা। এই ব্যাটালিয়নের বিরুদ্ধে পশ্চিম তীরে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে যাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কোনো ইউনিট।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বড় ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর অন্যান্য ইউনিট ও পুলিশের বিরুদ্ধেও মার্কিন প্রশাসন একই ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে। নেতজাহ ইয়েহুদার ওপর এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলে ব্যাটালিয়নটি মার্কিন বাহিনীর কোনো সহায়তা পাবে না। ব্যাটালিয়নটির সদস্যরা মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে কোনো প্রশিক্ষণে অংশ নিতে পারবেন না। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সহায়তায় চলা প্রশিক্ষণ কার্যক্রম থেকেও তাদের বিরত রাখা হবে।
ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর এ ব্যাটালিয়ন বেশ কয়েকটি বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ঘটানোর অভিযোগ রয়েছে ব্যাটালিয়নটির বিরুদ্ধে। ২০২২ সালে ওমর আসাদ নামে ৭৮ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি-আমেরিকানের মৃত্যুর ঘটনা এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য। সৈন্যরা তাকে আটক করে হাত-চোখ বেঁধে ফেলে ঠান্ডায় ফেলে রাখলে তার মৃত্যু হয়।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে পশ্চিম তীর থেকে আইডিএফের ব্যাটালিয়নটিকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এটি অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এরপর থেকে ইসরায়েলের উত্তর দিকে ব্যাটালিয়নটি কাজ করছে। গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধেও এ ব্যাটালিয়নকে মোতায়েন করা হয়।
নেতজাহ ইয়েহুদা ব্যাটালিয়নের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনার যে খবর সামনে এসেছে, তাতে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক্সে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, আইডিএফের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া উচিত হবে না। ইসরায়েলি নাগরিকদের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিরুদ্ধে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কাজ করছি। আমাদের সৈন্যরা এখন সন্ত্রাসী দানবদের সঙ্গে লড়ছে। আইডিএফের একটি ইউনিটের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করার উদ্দেশ্য অযৌক্তিক ও নৈতিক ক্ষয়।
যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার মন্ত্রী বেনি গান্তজও এই সমালোচনায় যুক্ত হয়েছেন। তিনি বলছেন, ইসরায়েলের শক্তিশালী ও স্বাধীন আদালত রয়েছে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের বিচার করতে পারে। আমেরিকান বন্ধুদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা রয়েছে। একটি ইউনিটের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বিপজ্জনক উদাহরণ, এর মাধ্যমে যুদ্ধের সময়ে আমাদের শত্রুদের কাছে ভুল বার্তা যেতে পারে।
ইসরায়েলি মন্ত্রী ইতামার বেন গভির ও বেজালেল স্মোট্রিচও মার্কিন পরিকল্পনার নিন্দা করেছেন। গভির বলেন, আমাদের সেনাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করা।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]