হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে কেনিয়ায় ১০ জন সামরিক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দেশটির সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল ফ্রান্সিস ওমন্ডি ওগোল্লাও রয়েছেন।
দেশের পশ্চিমাঞ্চলে সামরিক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পর প্রাণ হারান তারা। এছাড়া এই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুজন। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেনিয়ার সামরিক প্রধান জেনারেল ফ্রান্সিস ওমন্ডি ওগোল্লা দেশের পশ্চিমাঞ্চলে সামরিক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পর মারা গেছেন বলে পূর্ব আফ্রিকার এই দেশটির প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন।
ওগোল্লা ছিলেন কেনিয়ার সর্বোচ্চ পদমর্যাদার সামরিক কর্মকর্তা এবং হেলিকপ্টারটিতে অন্য আরও ১১ জন সামরিক সদস্যের সাথে ছিলেন তিনি। এই দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যান মাত্র দুইজন।
এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো বলেন, এটি দেশের জন্য ‘বড় দুঃখের মুহূর্ত’। এর আগে তিনি নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডাকেন।
রুটো বলেন, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ২০ মিনিটে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। কেনিয়ার বিমান বাহিনী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ উদঘাটনে তদন্ত দল পাঠিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট রুটো আরও বলেন, সামরিক প্রধান জেনারেল ফ্রান্সিস ওমন্ডি ওগোল্লাকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি রাজধানী নাইরোবির উত্তর-পশ্চিমে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার (২৫০ মাইল) দূরে এলজিও মারাকওয়েট কাউন্টিতে বিধ্বস্ত হয়।
বিবিসি বলছে, জেনারেল ওগোল্লা বিমান বাহিনীর কমান্ডার এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর গত বছরের এপ্রিলে সামরিক বাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়োগ পান। প্রেসিডেন্ট রুটো তার প্রধান সামরিক উপদেষ্টাকে একজন সাহসী অফিসার হিসাবে বর্ণনা করেছেন, যিনি দায়িত্ব পালনের সময় মারা গেছেন।
রুটো আরও বলেন, ‘আমাদের মাতৃভূমি তার সবচেয়ে বীর সেনাপতি, বীর অফিসার, বীর সেনানিদের একজনকে হারিয়েছে।’
এদিকে কেনিয়া শুক্রবার থেকে তিন দিনের শোক পালন করবে। এসময় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখবে পূর্ব আফ্রিকার এই দেশটি।
কেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট অনুসারে, ১৯৮৪ সালের ২৪ এপ্রিল ওগোল্লা প্রথম কেনিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনীতে যোগদান করেন। আগামী সপ্তাহে সামরিক বাহিনীতে ৪০ বছর পূর্ণ করার কথা ছিল তার।
তিনি পূর্ব আফ্রিকার এই দেশটির বিমানবাহিনীতে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন, পরে তিনি মার্কিন বিমান বাহিনীর সাথে ফাইটার পাইলট হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন বলেও মন্ত্রণালয় বলছে। এরপর ২০১৮ সালে তিনি বিমান বাহিনীর কমান্ডার হন।
দুর্ঘটনায় নিহত অন্য নয়জন হলেন- ব্রিগেডিয়ার সোয়াল সাইদি, কর্নেল ডানকান কিটানি, লেফটেন্যান্ট কর্নেল ডেভিড সাওয়ে, মেজর জর্জ বেনসন মাগোন্ডু, ক্যাপ্টেন সোরা মোহাম্মদ, ক্যাপ্টেন হিলারি লিটালি, এসএনআর সার্জেন্ট জন কিনুয়া মুরেথি, সার্জেন্ট ক্লিফন্স ওমন্ডি এবং সার্জেন্ট রোজ ন্যাভিরা।
অন্যদিকে বেঁচে যাওয়া দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং তাদের চিকিৎসা চলছে। হতাহত এই সামরিক কর্মকর্তারা কেনিয়ার নর্থ রিফ্ট অঞ্চলে গিয়েছিলেন। কেনিয়ার এই অঞ্চলটি দস্যুতায় জর্জরিত।
বিবার্তা/মাসুম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]