
ভারতে কুখ্যাত মাফিয়া থেকে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা মুখতার আনসারি উত্তরপ্রদেশের বান্দা কারাগারে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) স্থানীয় সময় রাত পৌনে ৯টায় কারাগারে অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে উত্তরপ্রদেশের রানী দুর্গাবতী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
পরিবারের অভিযোগ, কারাগারে খাবারের সঙ্গে বিষ প্রয়োগ করে তাকে মেরে ফেলা হয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যমে বলা হয়, জেলের মধ্যেই স্বাস্থ্যের অবনতি হয় আনসারির। পরে তাকে গাজিপুরের বান্দা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তার। গত মঙ্গলবারও পেটের যন্ত্রণায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
জেল সূত্রে খবর, ইফতারের পরেই মুখতারের স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। বান্দা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুনীল কৌশল জানান, পেটের যন্ত্রণা নিয়ে প্রায় ১৪ ঘণ্টা হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর সেখানেই হৃদ্রোগে মৃত্যু হয়েছে মুখতারের। যদিও মুখতারের ভাই গাজিপুরের সংসদ সদস্য আফজল আনসারি অভিযোগ তুলেছেন, তার ভাইকে জেলের মধ্যেই বিষ প্রয়োগ করে মেরে ফেলা হয়েছে।
৬০ বছর বয়সী মুখতার উত্তরপ্রদেশের মৌ জেলার বিধানসভার পাঁচবারের প্রাক্তন বিধায়ক ছিলেন। প্রাক্তন এই বিধায়কের বিরুদ্ধে ১৫টি খুনের অভিযোগ রয়েছে। তার নামে ৬১টি ফৌজদারি মামলা ছিল। ১৯৮০-এর দশকে তিনি একটি গ্যাংয়ে যোগ দেন। পরে ১৯৯০-এর দশকে নিজেই দল গঠন করেন। এই চক্রটি মৌ, গাজিপুর, বারাণসী ও জৌনপুর জেলায় চাঁদাবাজি ও অপহরণে জড়িত ছিল। ২০০৫ সাল থেকে তিনি পাঞ্জাব ও উত্তর প্রদেশের কারাগারে ছিলেন। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন আদালতে আটটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে তিনি কারাবন্দি ছিলেন। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ গত বছর যে ৬৬ জন গ্যাংস্টারের তালিকা প্রকাশ করেছিল তাতেও নাম ছিল মুখতারের। সম্প্রতি ৩৬ বছর পুরনো এক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন তিনি। সেই মামলায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন আদালত।
তার মৃত্যুর পর হাসপাতালের বাইরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে রাজ্যজুড়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কর্মকর্তারা জানান, পূর্ব উত্তর প্রদেশের বান্দা, মাউ, গাজিপুর এবং বারাণসী জেলাতেও বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে, যেখানে মুখতার তার অপরাধমূলক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করতেন।
মুখতার আনসারির ভাই আফজাল আনসারি পিটিআইকে বলেন, গত ১৯ মার্চ কারাগারে খাবারের সঙ্গে আমার ভাইকে বিষ দেওয়া হয়েছিল। এ কারণে তার শারীরিক অবস্থা খারাপ ছিল। এর ৪০ দিন আগেও তাকে বিষ দেওয়া হয়েছিল। আমার ভাই এসব জানিয়েছিলেন।
মুখতারের ছেলে উমর এ বিষয়ে আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ১৯ মার্চ বাবাকে রাতের খাবারের সঙ্গে বিষ দেয়া হয়েছিল। আমরা বিচার বিভাগের কাছে যাব, ন্যায়বিচার পাব বলে আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে।
কারা বিভাগ জানিয়েছে, মুখতার রোজা রেখেছিলেন। এ কারণে তার স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছিল এবং তিনি ওয়াশরুমে পড়েছিলেন। আজ শুক্রবার বান্দা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হবে।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]