
যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় বিমান থেকে মানবিক সাহায্যপণ্যসহ ত্রাণ সামগ্রী ফেলতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেন, এটি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম দফার জরুরি মানবিক সহায়তা। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সি-১শ’ ৩০ মালবাহী বিমানে করে ত্রাণের বাক্সগুলো ফেলা হয়।
হোয়াইট হাউস বলেছে, বিমানে করে সহায়তা ফেলার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি, ইসরাইল এই উদ্যোগকে সমর্থন করেছে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ।
গাজায় দুর্ভিক্ষের বিষয়ে আগে থেকেই হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে জাতিসংঘ। এ সপ্তাহেই সেখানে মানবিক সহায়তাপণ্যবাহী ট্রাক বহর থেকে ত্রাণসামগ্রী নেওয়ার সময় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়।
তিনটি সামরিক বিমানে করে গাজার উপকূলীয় এলাকায় ৩৮ হাজার খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। আর প্রথমবারের মতো এই কাজটি করেছে ইসরায়েলের বন্ধু প্রতিম ক্ষমতাধর দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
তিনটি সি–১৩০ পরিবহন বিমান খাবারের এই প্যাকটেগুলো গাজায় ফেলেছে। জর্ডানের বিমানবাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে এই অভিযান পরিচালনা করেছে মার্কিন বাহিনী। এক বিবৃতিতে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড জানিয়েছে, স্থল করিডোর ও রুটের মাধ্যমে গাজায় ত্রাণের প্রবাহ বাড়াতে টেকসই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বিমানে করে এসব খাবার দেয়া হয়েছে।
তবে ত্রান পেয়েও খুশি নয় গাজাবাসী। যে আমেরিকা গাজার নৃশংসতার সাথে জড়িত সেই আমেরিকার ত্রাণ শুধুই তাদের জীবন বাঁচানোর উপকরণ। এই ত্রাণ তাদের কাছে মোটেও বন্ধুত্বের কোনো বার্তা দিচ্ছে না।
আবু তালাত নামের একজন গাজাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, গাজার সাথে যে অবিচার হয়েছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা রয়েছে। আর আজ এই আমেরিকাই আমাদের সাহায্য পাঠাচ্ছে। তারা আসলে এই সাহায্য দিয়ে আমাদের কিনে নিতে চাচ্ছে। আমেরিকার সাহায্য পাওয়ার চেয়ে এই যুদ্ধে বেঁচে থাকা দরকার।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গাজার মানুষদের জন্য বেশ কিছু সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন। বিমান থেকে খাবারের প্যাকেট দেয়া তার প্রথম পদক্ষেপ। এর আগে গত শুক্রবার (১ মার্চ) বিমানে করে গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের খাবার সরবরাহের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ত্রাণসহায়তা নিতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার পরই তিনি এমন ঘোষণা দেন।
এদিকে, গতকাল শনিবারের বিমান থেকে ফেলা ত্রাণ সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় কমান্ড জানায়, সংঘাতের কারণে দুর্দশায় পড়া বেসামরিক লোকজনের জন্য ফেলা ওই পণ্যের ভেতর ৩৮ হাজার জনের জন্য খাবার ছিল। কেন্দ্রীয় কমান্ড আরও জানায়, ওইসব খাদ্য সামগ্রী যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর তৈরি এবং তাতে কোনো শুকরের মাংস ছিল না।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস সীমান্ত ডিঙিয়ে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামলা চালিয়ে ২৫০ জন ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে আসে। পরে আলোচনার পর দুপক্ষের মধ্যে বন্দি বিনিময় হলেও এখনো হামাসের হাতে ১৩০ জন পণবন্দি রয়েছে। তবে এদের মধ্যে কয়জন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে তা জানা যায়নি।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]