মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তের দিকে রওয়ানা দিয়েছে প্রায় ৮ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী। এদের বেশিরভাগই ভেনেজুয়েলা, কিউবা ও মেক্সিকোর নাগরিক।
মার্কিন গোয়েন্দাদের দাবি, ২০২২ সালের জুনের পর মেক্সিকো সীমান্তে সবচেয়ে বেশি মানুষ জড়ো হয়েছেন। প্রায় ছয় হাজার মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে আমেরিকায় ঢুকতে চাইছেন বলে অভিযোগ। মেক্সিকোর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই মানুষের দল সীমান্তে এসে পৌঁছেছেন। ক্রিসমাস ইভে তারা সীমান্তেই বড়দিন পালন করেছেন।
‘পোভারটি এক্সোডাস’ (দারিদ্র্যের কারণে বহির্গমন) লেখা একটি ব্যানার নিয়ে মিছিল করে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তারা। বড়দিনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে রওয়ানা দেয়া অভিবাসন প্রত্যাশীদের মিছিলটি যাত্রা শুরু করেছিল মেক্সিকোর তাপাচুলা শহর থেকে।
জানা গেছে, এই অভিবাসনপ্রত্যাশীরা মূলত সেন্ট্রাল আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান দেশগুলি থেকে এসেছেন বলে। মেক্সিকোর সীমান্ত শহর তাপাচুলা থেকে ১৫ কিলোমিটার হেঁটে তারা সীমান্তে পৌঁছেছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে আছেন হনডুরাসের ক্রিশ্চিয়ান রিভেরা। সংবাদসংস্থা এপি-কে তিনি জানিয়েছেন, প্রায় তিন-চার মাস ধরে আমরা সীমান্ত পার করার চেষ্টা করছি। কিন্তু কেউ আমাদের কথা শুনছিল না। তাই আমরা মিছিল করে সীমান্ত পারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বাড়ির সকলকে হন্ডুরাসে রেখে একাই সীমান্ত পার করার চেষ্টা করছেন রিভেরা। আমেরিকায় গিয়ে কাজ জুটিয়ে বাকি সকলকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন তিনি।
মেক্সিকো-আমেরিকা সীমান্তের এই বিশাল মিছিল বাইডেনের অভিবাসননীতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপর দীর্ঘদিন ধরেই অভিবাসননীতি নিয়ে চাপ তৈরি করছিলেন রিপাবলিকানরা। ইউক্রেন যুদ্ধের বাজেট কমিয়ে সেই অর্থ অভিবাসননীতিতে ব্যবহারের দাবি তুলেছে রিপাবলিকানরা। সীমান্তে পাঁচিল তোলার কথাও বলা হয়েছে।
অন্যদিকে গত মে মাসে জো বাইডেনের প্রশাসন মেক্সিকোর সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে। ভেনেজুয়েলা, নিকারাগুয়া, কিউবা থেকে আসা যে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অ্যামেরিকা ঢুকতে দেয়নি, মেক্সিকোকে তাদের জায়গা দিতে হবে। মেক্সিকো এই চুক্তি মেনে নিয়েছে। কিন্তু বিরাট এই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মিছিলের কী ব্যবস্থা করবে মেক্সিকো? তৈরি হয়েছে বিরাট প্রশ্ন চিহ্ন।
কয়েকদিন পর মেক্সিকো সফরে যাচ্ছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। সফরের সময় অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে দুদেশের মধ্যে নতুন চুক্তির চেষ্টা করবেন তিনি। তার আগেই দলবেঁধে যুক্তরাষ্ট্রের পথে রওয়ানা দিয়েছেন এসব অভিবাসনপ্রত্যাশী।
গত শুক্রবার মেক্সিকান প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর বলেছেন, অভিবাসন নিয়ে উদ্বেগ মোকাবিলায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আবার কাজ করতে রাজি। আগামী বুধবার তার সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
হোয়াইট হাউজের এক বিবৃতিতে, মেক্সিকো সফরে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন পশ্চিম গোলার্ধে ‘অভূতপূর্ব অনিয়মিত অভিবাসন’ নিয়ে আলোচনা করবেন। দুই দেশ কীভাবে একসঙ্গে সীমান্ত নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারে, তার উপায় চিহ্নিত করবেন।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]