গোপন আলোচনা ও হামাস প্রধানের মিসর সফরে আসায় নতুন করে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময় চুক্তি হতে পারে ধারণা করা হচ্ছে।
২০ ডিসেম্বর, বুধবার হামাস প্রধানের এই সফরেই গাজায় আরেক দফায় যুদ্ধবিরতি ও পণবন্দি মুক্তির বিষয়ে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে।
হানিয়া কাতার ছাড়ার আগে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানের সঙ্গে দেখা করেছেন। কিন্তু তাদের বৈঠকের বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করা হয়নি।
এক প্রতিবেদনে ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি জানায়, কাতারভিত্তিক হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া মিসরে গেছেন। সশস্ত্র সংগঠনটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় আগ্রাসনসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনার জন্য কায়রোতে গিয়েছেন তিনি।
হামাসের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র এএফপিকে বলেছে, মিসরের গোয়েন্দা প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে ইসমাইল হানিয়ার। বৈঠকে যুদ্ধবিরতি ও পণবন্দিদের মুক্তির চুক্তির বিষয়ে কথা হবে।
ওই সূত্র জানায়, মিসরে আসার আগে কাতারে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন হামাস প্রধান। এরপরেই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের জন্য প্রতিনিধি দল নিয়ে ইসমেইল মিসরে যান। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে মধ্যস্ততাকারী হিসেবে কাজ করছে মিসর।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মঙ্গলবার গভীর রাতে গাজায় ৭ অক্টোবরের হামলার পর থেকে বন্দী থাকা বাকি ১২৯ জিম্মির আত্মীয়দের জানিয়েছেন, মোসাদের প্রধান জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য কাজ করছেন।
নেতানিয়াহু তাদের বলেন, ‘জিম্মিদের মুক্ত করার প্রক্রিয়া প্রচার করতে আমি মোসাদের প্রধানকে দুবার ইউরোপে পাঠিয়েছি। আমি এই বিষয়ে কোন প্রচেষ্টায় ছাড় দেব না। আমাদের দায়িত্ব তাদের সবাইকে ফিরিয়ে আনা।’
মোসাদের পরিচালক ডেভিড বার্নিয়া চলতি সপ্তাহে ওয়ারশতে সিআইএ প্রধান বিল বার্নস ও কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানির সঙ্গে ইতিবাচক বৈঠক করেছেন। এই আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছে।
যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে গাজায় অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি ও ইসরায়েলি কারাগারে বন্দী ফিলিস্তিনিদের সম্ভাব্য মুক্তির বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর লক্ষ্যে আলোচনা চলমান ছিল।
ইসমাইল হানিয়াহ গোয়েন্দা প্রধান আব্বাস কামালের সঙ্গে আলোচনার জন্য বুধবার মিসর সফর করেছেন। কায়রো ঐতিহাসিকভাবে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী।
হামাসের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রও নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছে, আলোচনায় যুদ্ধবিরতি ও গাজা উপত্যকায় আরোপিত অবরোধের অবসানের জন্য বন্দীদের মুক্তির একটি চুক্তি প্রস্তুত করার বিষয়ে আলোকপাত করা হবে।
গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে ১৯ হাজার ৬৬৭ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। অধিকাংশ বাসিন্দা পানি, খাদ্য ও বিদ্যুতের অভাবে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে।
গত মাসে কাতারের মধ্যস্থতায় এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি হয়েছিল। সেসময় ২৪০ ফিলিস্তিনি বন্দীর বিনিময়ে ৮০ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয়া হয়েছিল।
হামাসের ঘনিষ্ঠ সূত্রটি বলেছে, মিসর আলোচনায় এক সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতি এবং নারী, শিশু ও বেসামরিক পুরুসহ ৪০ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হবে।
হামাসের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, মিসরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আলোচনায় এক সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতি ও পণবন্দিদের মুক্তিসহ চুক্তির বিভিন্ন শর্তের ওপর দৃষ্টি রাখা হবে। যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবনাটিতে কী কী শর্ত আছে তা ইতোমধ্যে কাতার ও ইসরায়েলকে জানানো হয়েছে। বিষয়টি জানানো হয়েছে মার্কিন প্রশাসনকেও।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]