চুক্তি ছাড়াই শেষ হয়েছে জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৮
প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯:৪৪
চুক্তি ছাড়াই শেষ হয়েছে জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৮
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

পরিবেশ বা জলবায়ু নিয়ে কোনো চুক্তি ছাড়াই শেষ হয়েছে এবারের জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৮। দুবাইয়ে ১৩ দিন ধরে চলা এবারের সম্মেলন মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্তি টানা হয়েছে।


মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় সম্মেলন শেষ হওয়ার পূর্ব নির্ধারিত সময়সীমা চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য বাড়ানো হয়, তবে সেই বর্ধিত সময়সীমাও পেরিয়ে যায় কোনো চুক্তি ছাড়াই।


তেল, গ্যাস ও কয়লাসহ সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন দেশগুলোর উৎপাদিত অপরিশোধিত জ্বালানির ব্যবহার ক্রমান্বয়ে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল; তা থেকে উত্তরণে শেষ মুহূর্তের উদ্যোগ হিসেবে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার থেকে বেরিয়ে আসতে একটি খসড়া প্রস্তাব অনুমোদন করেছে প্রায় ২০০ দেশের প্রতিনিধিরা।


রাতভর দর কষাকষির পর দুবাইয়ে আরব আমিরাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানরত কপ-২৮ সম্মেলনে গ্রহণ করা এই খসড়া প্রস্তাবটি হলো আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলনের ২৮ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জীবাশ্ম জ্বালানি কমিয়ে আনার বিষয়ে অনুমোদন পাওয়া প্রথম প্রস্তাব। খবর এএফপির।


এ বিষয়ে কোনো সরকার তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেনি তবে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে জড়িত পরিবেশবাদীদের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। কেউ কেউ বলেছেন এটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, আবার কেউ সময়সীমার প্রশ্নে হতাশা প্রকাশ করেছেন।


বিবিসির প্রতিবেদনে থেকে জানা যায়, সম্মেলনে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পায় জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধের বিষয়টি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঐকমত্যে আসতে পারেননি সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা।


কপ-২৮ আলোচনায় অংশ নেয়া দেশগুলোর মধ্যে মতবিরোধের কারণে চুক্তি হওয়ার বিষয়ে জটিলতা তৈরি হয়। সম্মেলনে অংশ নেয়া বেশ কয়েকটি দেশ এবারের জীবাশ্ম জ্বালানি-সম্পর্কিত খসড়া চুক্তিটিকে ‘দুর্বল’ বলে আখ্যা দিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে।


আয়ারল্যান্ডের পরিবেশমন্ত্রী এবং ইইউর পক্ষে মধ্যস্থতাকারী এমন রায়ান বলেছেন, আমরা খসড়া প্রস্তাবটি সমর্থন করি না। তবে তিনি এটাও বলেছেন, এই আলোচনায় সফল হতে না পারা ‘বিশ্বের কাছে কাঙ্ক্ষিত নয়’।


সম্মেলনে কোনো চুক্তি হতে হলে অংশগ্রহণকারী ১৯৮টি দেশের প্রত্যেককেই এ বিষয়ে অবশ্যই একমত হতে হতো।


ইতিমধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার কমাতে না পারায় বিশ্বের তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে কিন্তু কখন বা কীভাবে এই জ্বালানি ব্যবহার কমানো হবে, সে বিষয়ে কোনো দেশের সরকার কখনোই একমত হয়নি।


এর আগে এবারের সম্মেলনের সভাপতি সুলতান আহমেদ আল-জাবের নিজেই বলেছিলেন, এমন কোনো বিজ্ঞান নেই যা নির্দেশ করে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হলে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ করা প্রয়োজন।


খসড়া প্রস্তাবের পাঠ্যটিতে বলা হয়েছে, শক্তি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার থেকে সরে আসার জন্য এই গুরুত্বপূর্ণ দশকে একটি ন্যায্য, ধারাবাহিক ও ন্যায়সঙ্গত পন্থা অবলম্বন করতে হবে যাতে বিজ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে ২০৫০ সালের মধ্যে এর ব্যবহার শূন্যে নামিয়ে আনা যায়।


জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার ক্রমশ বন্ধ করতে পশ্চিমা দেশগুলো এবং সাগরের বুকে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়াসহ ঝড়ঝাপটার হুমকির মুখে থাকা ভুক্তভোগী দেশগুলোর দাবির প্রশ্নে এই খসড়ার ভাষা আগের বাতিল হয়ে যাওয়া প্রস্তাবনাগুলোর চাইতে অনেক শক্তিশালী। প্রায় ২০০ দেশের ঐকমত্যের ভিত্তিতে আজকের প্লেনারি সেশনে এটি অনুমোদন পায়।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com