রোহিঙ্গাদের জন্য ৮৭৬ মিলিয়ন ডলার চেয়েছে ইউএনএইচসিআর
প্রকাশ : ০৮ মার্চ ২০২৩, ১৮:৫০
রোহিঙ্গাদের জন্য ৮৭৬ মিলিয়ন ডলার চেয়েছে ইউএনএইচসিআর
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৮৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মানবিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর। সংস্থাটি বলছে, রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয় বাংলাদেশি মিলিয়ে মোট ১৪ লাখ ৭০ হাজার মানুষের জন্য এই অর্থ ব্যয় করা হবে।


৭ মার্চ, মঙ্গলবার জেনেভায় এক বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি ইয়োহানেস ভন ডার ক্লাউ এ সহযোগিতার আহ্বান জানান। ইউএনএইচসিআর এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।


ইউএনএইচসিআর বলছে, বাংলাদেশ সরকারের নেতৃত্বে ২০২৩ সালের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মানবিক কর্মকাণ্ডের যৌথ পরিকল্পনা বা জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান বাস্তবায়নে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয় বাংলাদেশি মিলিয়ে মোট ১৪ লাখ ৭০ হাজার মানুষের জন্য মোট ৮৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন। এই কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকবে মোট ১১৬টি সংস্থা, যার প্রায় অর্ধেক হচ্ছে বাংলাদেশি।
সংস্থাটি বলছে, প্রস্তাবিত এই পরিকল্পনাটির লক্ষ্য হচ্ছে- কক্সবাজার ও ভাসানচরে আশ্রিত ৯ লাখ ৭৮ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং তাদের আশ্রয় দেওয়া ৪ লাখ ৯৫ হাজার বাংলাদেশিকে খাদ্য, বাসস্থান, স্বাস্থ্যসেবা, সুপেয় পানি, সুরক্ষা, শিক্ষা, জীবিকার সুযোগ ও দক্ষতা উন্নয়নমূলক কাজের মাধ্যমে সহায়তা দেওয়া।


ইউএনএইচসিআর বলছে, অপর্যাপ্ত তহবিলের কারণে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ইতোমধ্যেই ক্যাম্পের সব রোহিঙ্গার জীবন রক্ষাকারী খাদ্য সহায়তা কমাতে বাধ্য হয়েছে। মানবিক সংস্থাগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টার পরও ৪৫ শতাংশ রোহিঙ্গা পরিবার সুষম খাবার খেতে পারছে না, আর অপুষ্টির হারও ব্যাপক। খাদ্যের বরাদ্দ কমানোর ফলস্বরূপ খুব স্বাভাবিকভাবেই সামনে দেখা যেতে পারে আরও অপুষ্টি, স্বাস্থ্য সমস্যা, পড়ালেখা থেকে শিশুদের ঝরে পড়া, বাল্যবিয়ের নতুন নতুন ঘটনা, শিশুশ্রম ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা।


এ কারণে জীবন রক্ষাকারী ও জীবন ধারণকারী সহায়তাগুলো চালু রাখতে আর্থিক সহায়তা জারি রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর সঙ্গে প্রয়োজন শিক্ষা, দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ ও জীবিকার সুযোগ; যেন শরণার্থীরা তাদের কিছু মৌলিক প্রয়োজন নিজেরাই মেটাতে পারে। ভাসানচরে স্থানান্তরিত প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গার জীবিকামূলক কাজ শুরুর জন্য প্রয়োজন উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ, যা চরের এই প্রকল্পকে টেকসই করার একটি পূর্বশর্ত।


সংস্থাটি আরও জানায়, গত বছর ৩ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী আন্দামান সাগর ও বঙ্গোপসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেছে এবং তাদের প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে কিংবা হারিয়ে গেছে।


ইউএনএইচসিআর বলছে, রোহিঙ্গা সংকটের চূড়ান্ত সমাধান মিয়ানমারেই নিহিত। অনেক রোহিঙ্গা শরণার্থীর কাছে আমরা শুনি প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নিজ দেশে ফিরতে চাওয়ার আকূলতা। কিন্তু নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা নিকট ভবিষ্যতে দেখা যাচ্ছে না। সেজন্যেই প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত মিয়ানমারকে দ্রুত সাহায্য করা, এবং রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরার অধিকার সমুন্নত রাখতে কাজ করে যাওয়া।


বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি ইয়োহানেস ভন ডার ক্লাউ বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের ষষ্ঠ বছরে শরণার্থীদের ও তাদের আশ্রয় দেওয়া স্থানীয় বাংলাদেশিদের জন্য টেকসই অর্থনৈতিক সহায়তা ও সমাধানের লক্ষ্যে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর ও সহযোগী সংস্থাগুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে পুনরায় আহ্বান জানাচ্ছে।


বিবার্তা/রিয়াদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com