শিরোনাম
তালেবানকে বিশ্বের সময় দেয়া উচিত : ইমরান খান
প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২২:৪২
তালেবানকে বিশ্বের সময় দেয়া উচিত : ইমরান খান
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, চল্লিশ বছর পর শান্তি ফিরেছে আফগানিস্তানে। এখন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে, তালেবানদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া এবং নারীদের অধিকার আর অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের মতো ইস্যুতে তাদের উৎসাহিত করা। এ জন্য তালেবানকে বিশ্বের সময় দেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।


বুধবার ইসলামাবাদের বানি গালায় তার ব্যক্তিগত বাসভবনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ইমরান খান যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পাকিস্তানের বর্তমান সম্পর্ককে পাকিস্তানের জন্য বিপর্যয়কর অভিহিত তা টেকসই করার ইচ্ছার কথা জানিয়ে বলেন, আফগানিস্তানের নতুন নেতৃত্বের সম্পৃক্ত হতে আরও বাস্তববাদী পন্থা খুঁজছেন তিনি।


যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করে নেয়ার পর গত ১৫ আগস্ট কাবুল দখলের মধ্য দিয়ে গোটা আফগানিস্তানে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে তালেবান। এরপর থেকে এই প্রথমবারের কোনো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম হিসেবে সিএনএনকে সাক্ষাৎকার দিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।


সাক্ষাৎকারে ইমরান খান আরো বলেন, ‘চল্লিশ বছর পর শান্তি ফিরেছে আফগানিস্তানে। সব পক্ষকে নিয়ে একটি অন্তর্ভূক্তিমূলক সরকার গঠনে কাজ করছে তালেবান। এটা না হলে তা হবে সত্যিকার অর্থে উদ্বেগের। পরিস্থিতি হবে আরও বিশৃঙ্খল। আমরা এটা চাই না কিন্তু হলে সর্ববৃহৎ মানবিক বিপর্যয় আর শরণার্থী সমস্যা দেখা দেবে।’


ইমরান খান আরও বলেন, ‘সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহায়তার দিকে তাকিয়ে আছে তালেবান। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির সঠিক পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এটা তাদের বাধ্য করবে। তবে তিনি একইসঙ্গে আবার সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ যেন ফের কোনো বহিরাগত শক্তির হাতে চলে না যায়।’


পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আফগানিস্তানে কোনো পুতুল সরকার মানুষ মেনে নেবে না। তাই এখানে বসে তাদের নিয়ন্ত্রণের কথা না ভেবে আমাদের উচিত তাদের উৎসাহিত করা। কারণ আফগানিস্তানের বর্তমান সরকার ভালোভাবেই জানে, আন্তর্জাতিক সাহায্য ও সহায়তা ছাড়া তারা এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবে না।’


তবে জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থাগুলোর দেয়া তথ্য অনুযায়ী তালেবানের দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় ফিরে আসার আগে থেকেই যুদ্ধ-সংঘাত, দারিদ্র্য, একের পর এক খরা, অর্থনৈতিক নিম্নগতি এবং করোনাভাইরাস মহামারির কারণে আফগানিস্তানের অর্ধেক জনগোষ্ঠী ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। তাদের এখন সহায়তা প্রয়োজন।


তবে সমালোচকরা বলে আসছেন, তালেবান আফগানিস্তানকে অস্থিতিশীল করে তুলবে। তবে ১৯৮৯ সালে আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত বাহিনীর বিদায়ের পর দেশটিতে গৃহযুদ্ধ ও রক্তবন্যা বয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে ইমরান খান বলেছেন, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনার বিদায়ের পর এমন রক্তপাতের শঙ্কায় ছিলেন তিনি।


তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আমাদের জানিয়েছিল, তালেবান গোটা আফগানিস্তান দখলে নিতে সক্ষম হবে না। আর তারা যদি সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে এই চেষ্টা করে তাহলে দেশটিতে আবারও গৃহযুদ্ধ শুরু হতে পারে। আমরা এটা নিয়ে সবচেয়ে ভয়ে ছিলাম, কারণ আমরা এর সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী।’


ইমরান খান জানিয়েছেন, তিনি বারবার যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, আফগানিস্তানে সামরিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র তার লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না। সেখানে আটকে থাকতে হবে তাদের। তাই তালেবানের দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো রক্ষা এবং স্বীকৃত সরকার গঠনের জন্য তালেবানকে সময় দেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।


বিবার্তা/ইমরান

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com