শিরোনাম
ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৮১
প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২১, ১১:২১
ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৮১
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ইন্দোনেশিয়ার সুলায়েসি দ্বীপে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮১ জনে দাঁড়িয়েছে। সোমবার (১৭ জানুয়ারি) দিনভর অভিযানে আরো ২৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ধসে পড়া একটি ভবন থেকে একই পরিবারের পাঁচ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও অনেক মানুষ চাপা পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তাদের জীবিত উদ্ধারের আশা নেই বলছেন উদ্ধারকর্মীরা।


সোমবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল থেকে আবারো অভিযানে নেমেছে উদ্ধার কর্মীরা। তবে রোববার (১৭ জানুয়ারি) ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। উদ্ধারকর্মীরা বলছেন- বৃষ্টির কারণে ধসে পড়া ভবন আরও ভারী হয়ে যাচ্ছে। এখন হালকা মাত্রায় পরাঘাত (আফটার শক) অনুভূত হলেও ভবন আরো ধসে যেতে পারে। যা উদ্ধার কাজে বড় ধরনের বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।


ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া, জলবায়ু এবং ভূ-প্রকৃতির এজেন্সি প্রধান দ্বিকোরিতা কর্নাবতী বলেন, রোববার সুলায়েসি দ্বীপ অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। যেসব ভবন ভূমিকম্পে ধসে পড়েছে, বৃষ্টির পানিতে সেগুলো আরও ধসে পড়তে পারে। এতে উদ্ধারকর্মীরা ঝুঁকির মুখে পড়বে। তবে সাবধানতা অবলম্বন করে উদ্ধার কাজ অব্যাহত রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।


তিনি আরো বলেন, ধসে পড়া মিত্রা মানাকর হাসপাতাল থেকে রবিবার ৮ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন এলাকা থেকে আরো ১৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এনিয়ে ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮১ জন। ধারণা করা হচ্ছে আরও অনেক মানুষ ভবন ধসে চাপা পড়ে থাকতে পারেন। তাদেরকে উদ্ধারে কাজ চলছে।


এদিকে ভূমিকম্পে হতাহতের ঘটনায় শোক জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জকো উইদোদো। এক শোক বার্তায় তিনি হতাহতের পরিবার ও শুভাকাঙ্খীদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান।


ইন্দোনেশিয়ার রেড ক্রস বলছে- ভূমিকম্পের আঘাতে অন্তত সাড়ে ৮শ' মানুষ আহত হয়েছেন। গৃহহারা হয়েছেন কমপক্ষে ১৫ হাজার মানুষ। তারা ঘটনাস্থলে ওষুধ এবং ত্রাণ সরবরাহ করতে গিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তাদের বেশ কয়েকটি টিম ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়া লোকজনকে খুঁজে বের করতে কাজ করে যাচ্ছেন।


শুক্রবার স্থানীয় সময় ভোরে মামুজু থেকে ৩৬ কিলোমিটার দক্ষিণে সুলায়েসি দ্বীরে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ২। এর গভীরতা ছিল প্রায় ১৮ কিলোমিটার। ভূমিকম্পের পর কয়েক হাজার মানুষকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেয়া হয় । ভূমিকম্পের পর বেশ কয়েকবার পরাঘাত (আফটার শক) অনুভূত হয়েছে ।


ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ প্রশমন সংস্থা জানিয়েছে, ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পের একদিন পর পশ্চিম সুলায়েসি জেলা এবং মামুজু ও মাজিনে এলাকায় ৫ মাত্রার পরাঘাত অনুভূত হয়েছে। তবে এ থেকে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।


শুক্রবারের ওই শক্তিশালী ভূমিকম্পে লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রায় ১৫ হাজার বাসিন্দা নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে। ভূমিকম্পে মামুজু শহরের বিমানবন্দরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।


প্রশান্ত মহাসাগরীয় রিং অব ফায়ারে অবস্থানের কারণে ইন্দোনেশিয়ায় প্রায়ই ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে থাকে। এর আগে ২০১৮ সালে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প ও এরপর সুনামির আঘাতে ৪ হাজার তিনশো জনের মৃত্যু হয় বলে ধারণা করা হয়। এর মধ্যে অনেকেরই কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ৯ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প ও সুনামির আঘাতে ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।


বিবার্তা/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com