ভারত পাকিস্তানের বিতর্কিত অংশ জম্মু কাশ্মীর নিয়ে পুনরায় বৈঠকে বসতে যাচ্ছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) নিরাপত্তা পরিষদ রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
চীনের অনুরোধে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে এ আলোচনায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বসেছে বলে জানা যায়।
কয়েক দশকের পুরানো কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন সংক্রান্ত ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ নরেন্দ্র মোদির সরকার বাতিল করার পর প্রতিবেশী পাকিস্তানের সঙ্গে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে ওই সময় কাশ্মীর পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে বৈঠকে বসার অনুরোধ জানায় পাকিস্তানের অন্যতম মিত্র চীন। এবারো চীনের অনুরোধেই নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসছে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা।
এর আগে গত (৫ আগস্ট) ভারতের ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করার পর সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মীরে অচলাবস্থা তৈরি হয়। স্থানীয় প্রশাসন মোবাইল ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ায় কার্যত বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় কাশ্মীর।
গত (১২ ডিসেম্বর) নিরাপত্তা পরিষদের কাছে লেখা এক চিঠিতে কাশ্মীর নিয়ে আবারো উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। পাকিস্তান এই চিঠি দেয়ার জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনা মিশন নিরাপত্তা পরিষদের একটি বিশেষ নোট লিখেছে।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স চীনের সেই নোট দেখে এক প্রতিবেদনে বলেছে, আবারো উত্তেজনা বৃদ্ধির ঝুঁকি এবং গুরুত্ব বিবেচনায় চীন জম্মু-কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে পাকিস্তানের অনুরোধের পুনরাবৃত্তি করে নিরাপত্তা পরিষদকে একটি ব্রিফিংয়ে বসার অনুরোধ করছি।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) নিরাপত্তা পরিষদ এই বৈঠকে বসছে বলে জানা যায়।
ভারতের সাবেক কূটনীতিক কেসি সিং বলেছেন, আমরা আসলেই জানি না, এই বৈঠক কিসের। বৈঠকে বসা পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
তিনি বলেন, কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে গত আগস্টের বৈঠকটিও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আলোচ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত ছিল না এবং সম্ভবত এটিও সেরকম।
১৯৪৭ সালে ব্রিটেনের কাছে থেকে স্বাধীনতা লাভের পর এ পর্যন্ত তিনবার যুদ্ধে জড়িয়েছে ভারত-পাকিস্তান; এর মধ্যে দুটি যুদ্ধ হয়েছে কাশ্মীরের মালিকানা কেন্দ্র করে। উভয় দেশই কাশ্মীরকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে। ভারতের পার্লামেন্টে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল হয়ে যাওয়ার পর গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নিয়ে বিশ্ব নেতাদের ব্যাপক সমালোচনা করেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
কাশ্মীর নিয়ে প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু হতে পারে বলে বিশ্ব নেতাদের সতর্ক করে দেন ইমরান খান।
তিনি বলেন, এই যুদ্ধ শুরু হলে এর প্রভাব শুধুমাত্র এশিয়ার দুটি দেশের মাঝে সীমিত থাকবে না।
১৯৫৪ সাল থেকে ভারতীয় সংবিধানে কাশ্মীর বিশেষ মর্যাদা পেয়ে আসছিল। পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা এবং যোগাযোগ ছাড়া কেন্দ্রীয় সরকার কাশ্মীরের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারতো না। কিন্তু এ বিশেষ মর্যাদা বাতিল হওয়ায় কাশ্মীর এখনো আলাদা একটি অঞ্চলে পরিণত হবে। একই সঙ্গে কাশ্মীর ভেঙে লাদাখ নামে কেন্দ্রশাসিত একটি অঞ্চল গঠন করা হবে; যার নিয়ন্ত্রণ থাকবে ফেডারেল সরকারের হাতে।
কেন্দ্রীয় শাসনের আওতায় আসার ফলে এখন ভারতীয়রা কাশ্মীরে জমি কিনতে ও সরকারি চাকরিতে যোগ দিতে পারবেন।
বিবার্তা/শহিদুল/জহির
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]