শিরোনাম
যে জেলখানা উদ্বোধনে ছিলেন, সেখানেই রাত কাটল চিদম্বরমের
প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০১৯, ০৯:৩৭
যে জেলখানা উদ্বোধনে ছিলেন, সেখানেই রাত কাটল চিদম্বরমের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

আট বছর আগে (২০১১ সালের ৩০ জুন) পি চিদম্বরমকে নতুন সদর দফতর ঘুরিয়ে দেখানোর সময় সিবিআই কর্তারা বলেছিলেন স্যর, একেবারে আন্তর্জাতিক মানের জেলকানা তৈরি করা হয়েছে।


লোদী রোডে নয়া দফতরের উদ্বোধনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে হাজির ছিলেন চিদম্বরমও। তবে বুধবার সেই জেলখানাই রাত কাটাতে হয়েছে চিদম্বরমকে।


সিবিআই আন্তর্জাতিক মানের জেলখানা দাবি করলেও সেখানে ঢোকার আগে তিনি প্রশ্ন করলেন, ইঁদুর নেই তো?’ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঠিক হয়ে গেল, আরো অন্তত চার দিন ওই জেলখানাই থাকতে হবে চিদম্বরমকে।


আইএনএক্স মিডিয়া আর্থিক কেলেঙ্কারি মামলায় গ্রেফতারের পর চিদম্বরমকে বৃহস্পতিবার বিশেষ সিবিআই আদালতে পেশ করে পাঁচ দিনের জন্য হেফাজতে চেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। চার দিন হেফাজত মঞ্জুর করেছেন বিচারক অজয়কুমার কুহার।


জেলখানায় অবশ্য খাট, সোফা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা মিলিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যের অভাব হবে না চিদম্বরমের। আদালতের নির্দেশে দিনে আধ ঘণ্টা করে পরিবার ও আইনজীবীদের সঙ্গে দেখাও করতে পারবেন। তবে জেরার বাইরে সব সময় সিসিক্যামেরার নজরদারি থাকবে। ইন্দ্রাণী বা পিটার মুখোপাধ্যায়ের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হতে পারে চিদম্বরমকে। সিবিআইয়ের পরে ইডি তাকে জেরা করার জন্য হেফাজতে চাইবে।


এক রাত জেলকানায় কাটালেও ৭৩ বছর বয়সী চিদম্বরমকে দেখে মনে হয়েছে, তার মনের জোর এখনও টোল খায়নি। দেড় ঘণ্টা শুনানির সময় ঠোঁটের কোণে স্মিত হাসি ঝুলিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকেছেন কাঠগড়ায়। বিচারক তাকে চেয়ার দিতে বললেও বলেছেন, দাঁড়িয়েই বেশ রয়েছেন। শুধু তা-ই নয়। কংগ্রেসের দুই পোড়খাওয়া আইনজীবী কপিল সিব্বল, অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির সওয়ালের পরে, নিজেই মুখ খুলেছেন।


সিবিআইয়ের প্রধান যুক্তি ছিল, ২০১৮ সালে ৬ জুন চিদম্বরমকে ডেকে প্রশ্ন করা হয়। তিনি উত্তর দেননি। সিব্বল, মনু সিঙ্ঘভিরা বলেন, উত্তর না দেয়ার’ বা নীরব থাকার’ সাংবিধানিক অধিকার তার আছে।


সিবিআইয়ের তরফে সলিসিটির জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, অভিযুক্তের দুর্ধর্ষ ক্ষমতা রয়েছে উত্তর না দেয়ার, সহযোগিতা না করার। তার দাবি, যত ক্ষণ মাথার উপরে গ্রেফতারি থেকে সুরক্ষার ছাতা থাকবে, তত দিন চিদম্বরমের কাছ থেকে উত্তর মিলবে না। সেই কারণেই তাকে আর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব না করে হেফাজতে নিয়ে জেরা করার সিদ্ধান্ত হয়। অনেক নথির ভিত্তিতে তাকে জেরা করা দরকার।


চিদম্বরম পাল্টা বিচারককে বলেন, ২০১৮ সালে ১৮ জুনের জিজ্ঞাসাবাদের রেকর্ড চেয়ে পাঠান। এমন কোনো প্রশ্ন নেই, যার উত্তর আমি দেয়নি।


বুধবার রাতে গ্রেফতারের পর আধ ঘণ্টা জেরা করা হয়েছিল চিদম্বরমকে। রাতে সিবিআই ক্যান্টিনের খাবার দেয়া হলেও, তিনি খেতে চাননি। তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে আর্থিক অপরাধ দমন শাখার অফিসারেরা আধ ঘণ্টা প্রাথমিক জেরা করার পরে বিকেল সওয়া তিনটে নাগাদ আদালতে আনা হয় তাকে।


এ দিকে, তার আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দিল্লি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে চিদম্বরম সুপ্রিম কোর্টে যে আবেদন জানিয়েছেন, শুক্রবার তার শুনানি হবে বিচারপতি আর ভানুমতী ও বিচারপতি এ এস বোপান্নার ডিভিশন বেঞ্চে।
সূত্র: আনন্দ বাজার পত্রিকা


বিবার্তা/তাওহীদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com