সভাপতির পদ রাহুল গান্ধীর ইস্তফার প্রস্তাবে সায় দিল না কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি। ভারতের রাজধানী দিল্লিতে শনিবার দলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ছিল। সেখানে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, মনমোহন সিংসহ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব হাজির ছিলেন।
সূত্রের খবর, লোকসভা নির্বাচনে দলের ভরাডুবির জন্য নিজের দায় স্বীকার করে নিয়ে বৈঠকে সকলের কাছে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেন রাহুল। কিন্তু তার সেই ইচ্ছাকে সরাসরি খারিজ করে দেন দলের সামনের সারির নেতারা।
রাহুল কি কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেবেন না কি ওই পদেই থাকবেন, লোকসভার ফল বেরনোর পর থেকেই এ নিয়ে জল্পনা ছিল তুঙ্গে। গোটা রাজনৈতিক মহলে এ দিন সবচেয়ে বড় চর্চার বিষয় ছিল রাহুলের পদত্যাগের বিষয়টি। কিন্তু সেই জল্পনায় আপাতত দাঁড়ি টানল কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি।
সূত্রের খবর, বৈঠকে লোকসভা নির্বাচনে দেশ জুড়ে দলের ভরাডুবির বিষয়টি নিয়ে কাঁটাছেড়া হবে। কেন এমন ফল হল, কোথায় কোথায় ত্রুটি ছিল- সবই আলোচনায় উঠে আসে এই বৈঠকে।
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস পেয়েছিল ৪৪টি আসন। গতবারের তুলনায় এবার টেনেটুনে আরো আটটি আসন বাড়াতে পেরেছে তারা। দেশ জুড়ে যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিবিরোধী ঝড় তুলতে চেয়েছিলেন, সেই প্রচেষ্টা থমকে গেছে মোদি-অমিত শাহের কৌশলে। আগেরবারের তুলনায় আরো ২৩টি আসন বাড়িয়ে বিপুল জয় নিয়ে এসেছে বিজেপি।
মোদি ম্যাজিকের কাছে পুরোপুরি ফ্লপ রাহুলের ‘চৈকিদার চোর হ্যায়’। ভোটের ফল দেখার পরই দলের বিপর্যয়ের দায় নিজের ঘাড়ে নিয়েছেন রাহুল।
দলীয় সূত্রে খবর, তারপরই কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন রাহুল। তাকে প্রশ্নও করা হয়েছিল, তাহলে কি এবার সভাপতির পদ ছাড়তে চলেছেন রাহুল?
এ প্রসঙ্গে তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, ওয়ার্কিং কমিটি ও আমার উপর বিষয়টা ছেড়ে দেয়াই ভাল।
রাহুলের এই উত্তরে জল্পনা বেড়েছে বই কমেনি। বিভিন্ন সূত্র থেকে এমনো খবর ছড়িয়েছে, এই ‘সিদ্ধান্ত’ থেকে তাকে বিরত রাখতে দলের নবীন নেতারা রাহুলকে বোঝানোর চেষ্টা করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, রাহুল ইস্তফা দেবেন কি না সেটা যেমন একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, দলের কাছে তেমনই গুরুত্বপূর্ণ এবারের ভোটে বিপর্যয়ের কারণ খোঁজার বিষয়টা। কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলসহ ১৭টি রাজ্যে পুরোপুরি ধরাশায়ী কংগ্রেস।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল যে ছত্তিশগড়, রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশে বিধানসভার জয় কংগ্রেসকে লোকসভা নির্বাচনে লড়ার বাড়তি অক্সিজেন জুগিয়েছিল, সেই তিন রাজ্যেই মোদি ঝড়ে উড়ে গেছে রাহুলের ক্যারিশমা। ছত্তিশগড়ে দুটি, মধ্যপ্রদেশে একটি এবং রাজস্থানে তো কোনো আসনই পায়নি কংগ্রেস।
উল্লেখযোগ্য ফল বলতে তামিলনাড়ু ও পাঞ্জাব, যেখানে কংগ্রেস আটটি করে আসন পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা আরো বলছেন, যে উত্তরপ্রদেশে ভোট ধরে রাখতে প্রিয়াঙ্কাকে ময়দানে নামিয়ে বাজিমাত করতে চেয়েছিলেন রাহুল, প্রিয়াঙ্কা ম্যাজিকও সেখানে পুরোপুরি ফেল। রাহুল নিজেও হেরে গিয়েছেন কংগ্রেসের গড় আমেথী থেকে। কেরালার ওয়েনাডে রাহুলের জয় ছিল কংগ্রেসের এই বিপর্যয়ের মধ্যে একমাত্র সান্ত্বনা।
দলের ভরাডুবির পরেই উত্তরপ্রদেশ, উড়িশ্যা, কর্নাটক- এই তিন রাজ্যের দলীয় প্রধান ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
বিবার্তা/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]