শিরোনাম
ইস্তফা দিচ্ছেন রাহুল গান্ধী!
প্রকাশ : ২৫ মে ২০১৯, ১০:০০
ইস্তফা দিচ্ছেন রাহুল গান্ধী!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধীর ইস্তফার কথা শুনেই দলের নবীন নেতারা দিল্লি আসতে শুরু করেছেন। তারা চান, রাহুল যাতে কোনোভাবেই ইস্তফা না দেন। কারণ তারা মনে করছেন, রাহুল জেদ ধরে থাকলে ইস্তফা দিয়েই দেবেন।


দেশটির লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরেই হারের দায় নিজের ঘাড়ে নিয়েছেন রাহুল। কিছু সূত্রে তার ইস্তফার সম্ভাবনা নিয়ে খবর ছড়াতেই দলে আলোড়ন তৈরি হয়েছে। শনিবার ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে কী করবেন কংগ্রেস সভাপতি তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।


কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে রাহুল ইস্তফা দিতে চাইলে আদৌ কি তা গ্রহণ করা হবে? এই প্রশ্নে মতিলাল ভোরার মতো প্রবীণ নেতারা রাহুলেই আস্থা রাখছেন। ভোরার পাল্টা প্রশ্ন, রাহুলের বদলে দায়িত্ব নিতে পারেন, দলে এমন ব্যক্তি কে আছে?


দলে শীর্ষ পদের প্রত্যাশী যে নেই, তা নয়। রাহুল জমানায় উপেক্ষিত নেতারা এখন সুযোগ বুঝে খড়গহস্ত তার উপরে। শুক্রবার দুপুরে এআইসিসি দফতরে এসে ঘুরে যান রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত। তিনি ঘাঁটি গেড়েছেন দিল্লিতেই। ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের আগে গহলৌতও পদ পাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।


কংগ্রেসের এক নেতা বললেন, যে গহলৌত নিজের রাজ্যেই গো-হারা হেরে বসে আছেন, তাকে কেন পুরস্কৃত করা হবে? গহলৌত নিজে অবশ্য টুইটারে লিখেছেন, সভাপতির ইস্তফার প্রসঙ্গ ভিত্তিহীন ও অপ্রাসঙ্গিক। এটা আমরা কখনোই ভুলব না, রাহুল গান্ধীর অক্লান্ত পরিশ্রম ও লড়াকু মেজাজের কারণেই এনডিএকে শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছিল কংগ্রেস। এর পরে দ্বিতীয় একটি টুইটে রাহুলের নেতৃত্বকে দৃষ্টান্তমূলক আখ্যা দিয়েছেন তিনি।


শুধু গহলৌত নন, সুশীল কুমার শিণ্ডে, তরুণ গগৈ, মল্লিকার্জুন খড়েগর নাম নিয়েও জল্পনা তুঙ্গে। খড়েগ জেতেননি এবার। ফলে লোকসভায় দলের নেতা কাকে করা হবে, সেটি নিয়েও ভাবতে হবে। কেউ কেউ তো আবার একজন সভাপতির সঙ্গে চারজন কার্যনির্বাহী সভাপতির প্রস্তাব নিয়েও হাজির।


কংগ্রেসের ওই নেতার কথায়, আসলে দলের প্রবীণ নেতাদের একাংশই এখন রাহুলের বিরুদ্ধে এখন সুযোগ পেয়ে খড়গহস্ত হতে চাইছেন। যারা রাহুল আসার পর নিজেদের উপেক্ষিত মনে করছেন।


হারের কারণ নিয়ে পর্যালোচনার বৈঠকের আগে জনার্দন দ্বিবেদীর মতো নেতাও ক্ষোভ উগরে বলেছেন, কংগ্রেসের এই ফল দেখে আমি একেবারেই আশ্চর্য হইনি। আমি আগেই দলকে সতর্ক করেছিলাম।


অনিল শাস্ত্রীর মন্তব্য, ভোট প্রচারে ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ এর মতো স্লোগান আসলে বুমেরাং হয়েছে। রাফাল মানুষের মনে দাগ কাটেনি। ন্যায় প্রকল্পও নিচু স্তর পর্যন্ত পৌঁছায়নি।


তবে শাস্ত্রীর মতে, রাহুলের ইস্তফা দেয়া কোনো কাজের কথা নয়। ইস্তফা দেয়া মানে দায়িত্ব থেকে পালিয়ে যাওয়া। বরং এই পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে লড়াই করে যেতে হবে।


প্রবীণ নেতাদের অনেকেই মনে করছেন, নিজের আশপাশে রাহুল যাদের রেখেছেন, তারাই ভুল পরামর্শ দিয়েছেন। এই সব ফাঁক ভরাট করে নতুন চিন্তাভাবনা নিয়ে এগোতে হবে।


এক প্রবীণ নেতা মনে করিয়ে দেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীও রায়বরেলী কেন্দ্র থেকে রাজ নারায়ণের কাছে হেরে গিয়েছিলেন ১৯৭৭ সালে। সে বারেও হারের ব্যবধান ছিল ৫৫ হাজারের। এবারেও আমেথীতে রাহুলের হারের ব্যবধান এতটাই। কংগ্রেস অনেক ওঠাপড়া দেখেছে। আবার মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। এটা এমন নতুন কিছু ঘটনা নয়।


যদিও রাহুলের পদত্যাগের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনার মধ্যেই উত্তরপ্রদেশে দলের সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়েছেন রাজ বাব্বর। আমেথীতে দলের হারের দায় নিয়ে সেই জেলা কমিটির সভাপতিও ইস্তফা দিয়েছেন।


কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ নেতারা বলছেন, এ তো রাহুলকে আড়াল করার ছল।


আর রাহুলপন্থীরা বলছেন, শনিবার বৈঠকেও ইস্তফার ঢল নামবে। কিন্তু রাহুল ইস্তফা দিলেও তা গ্রহণ করার সাহস কে দেখাবে? সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা


বিবার্তা/তাওহীদ/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com