শিরোনাম
নাসির ভাই বিএনপি আদর্শের লোক
প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৯:৩৮
নাসির ভাই বিএনপি আদর্শের লোক
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা গত কয়েকদিন ধরে ভিসি খোন্দকার নাসির উদ্দিনের পদত্যাগ চেয়ে অবিরাম শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছে। সেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করেছে বহিরাগত গুন্ডারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের আশে-পাশের এলাকা থেকে ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে বাধা দিয়েছে, তাদের অনেককে পিটিয়ে রক্তাক্তও করে দিয়েছে তারা। এরা যে প্রশাসনের পক্ষ নিয়ে এই কাজ করছে সেটা বলাই বাহুল্য।


অন্যদিকে প্রশাসন এই আন্দোলনকে থামাতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পূজার ছুটি বর্ধিত করেছে এবং অত্যন্ত স্বল্পকালীন নোটিশে ছাত্র-ছাত্রীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে। এরকম ঘটনা এরশাদের সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত ঘটতো। আন্দোলন থামাতে এরশাদ বহুবার আমাদের ছাত্র জীবনে হল খালি করার নির্দেশ দিয়েছে, পুলিশ দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের বের করে দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনও ঠিক সেই কাজটাই করছে।


এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর খোন্দকার নাসিরউদ্দিন আমার প্রাক্তন সহকর্মী। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সময় আমরা শিক্ষকতা করতাম। অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যেহেতু রাজনীতি করতে পারে, আমরা দুজনই শিক্ষক রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম। উনি সক্রিয়ভাবে বিএনপি এবং জামাতপন্থী শিক্ষকদের দল সোনালী দল করতেন, আর আমি আওয়ামীপিন্থী এবং বাম ঘরানার শিক্ষকদের দল গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম করতাম। নাসির ভাইয়ের বিপক্ষে ১৯৯৫ সালে আমি শিক্ষক সমিতিতে যুগ্ম সম্পাদক পদেও প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছিলাম। যথারীতি উনি সোনালী দলের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন, আমি ছিলাম গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের প্রার্থী।



সেই সময় থেকে বা বলা যায় তারও আগে থেকে দীর্ঘকাল নাসির ভাই তার বিএনপন্থী মনোভাব বজায় রেখেছেন। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে তিনি বর্ণ পরিবর্তন করেন। গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামে যোগ দেন। এই পরিচয়কে ব্যবহার করে তিনি ভিসির মতো একটা রাজনৈতিক নিয়োগের পদ বাগিয়ে ফেলেন।


১৯৯৫ সালের নির্বাচনের সেই ঘটনাটা কয়েকদিন আগে লিখেছিলাম। সময়টা এমনই পালটে গেছে যে আমরা যারা একসময় আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে পাশে থেকেছি, আমাদেরকেই এখন প্রমাণ করা লাগে আমরা কে ছিলাম। আমার ওই লেখাটা শেয়ার দিয়েছিলো আরিফ রহমান। যেখানে যথারীতি এক ভদ্রলোক এসে সরাসরি দাবি করলেন যে আমিই নাকি বাকৃবিতে বিএনপিপন্থী শিক্ষক ছিলাম, নাসির ভাই ছিলেন আওয়ামীপন্থী। এ ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত। আমি যেহেতু দীর্ঘদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে বিদেশে চলে এসেছি, স্বাভাবিকভাবেই আমার কাছে কোনো দলিল দস্তাবেজ নেই। এগুলো সংগ্রহের রাখার যে প্রয়োজন রয়েছে, দেশ ছাড়ার আগে সেটা মনে হয়নি আমার। এই ভদ্রলোকের মিথ্যাচারকে খারিজ করতে তার সাথে দীর্ঘ এক বিতর্কে যেতে হয় আমার। এক পর্যায়ে আমার এক ছাত্রীও সেখানে এসে উপস্থিত হয়। সেও বিতর্কে অংশ নেয়। তার সাক্ষ্যে শেষ পর্যন্ত ওই ভদ্রলোক অনিচ্ছুকভাবে হলেও হার মানতে বাধ্য হন।


রাজনৈতিক ডিগবাজি খাওয়া লোকদের এবং তাদের সমর্থকদের এটা একটা দুর্দান্ত কৌশল, কিছু হলেই বলবে প্রমাণ দেখাও, কিংবা যে দাবি করছে, তাকেই উল্টোদিকে ঠেলে দিয়ে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করবে। চোরের মায়ের বড় গলা হয়, এদেরও গলাবাজিটা প্রবল। লজ্জাশরম না থাকলে যা হয় আরকি। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই সময় যারা ছিলেন, তাদের প্রত্যেকেই নাসির ভাইয়ের রাজনৈতিক পরিচয় জানেন। এটা গোপন কিছু ছিলো না, বা এরকম না যে উনি ভুল করে এক বা দুই বছর সোনালী দল করেছেন। উনি শিক্ষক হবার পর থেকে কমপক্ষে বিশ বছর সোনালী দল করেছেন। কাজেই, তার রাজনৈতিক বিশ্বাস এবং আদর্শ কোন দিকে সেটা সহজেই অনুমেয়।


যাইহোক, উনার সোনালী দল করার একটা প্রমাণ এখানে দিচ্ছি। এটা ১৯৯৭ সালের সোনালী দলের ইলেকশন স্টিয়ারিং কমিটি। শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের আগ দিয়ে গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম এবং সোনালী দল নির্বাচন পরিচালনার উদ্দেশ্যে স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করতো। সাধারণত দলের পরীক্ষিত লোকদের এই কমিটিতে রাখা হতো।


এটা এক টুকরো প্রমাণ মাত্র। এরকম আরো অসংখ্য প্রমাণ বাকৃবি ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। আমি দীর্ঘদিন ধরে দেশে নাই বলে আমার জন্য সেগুলো সংগ্রহ করা একটু কষ্টসাধ্য, এই যা।


ফরিদ আহমেদের ফেরবুক থেকে পাওয়া


বিবার্তা/জাই

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com