বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রাখা স্বর্ণ নিয়ে অনিয়মের কথা অস্বীকার করে অর্থপ্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, স্বর্ণের পরিমাণে কোনো হেরফের হয়নি।
তবে তিনি বলেছেন, স্বর্ণের বিষয়ে কারো গাফিলতির প্রমাণ পেলে শাস্তি হবে। বিষয়টাকে ছাড় দেয়া হবে না, আমরা বিষয়টা আইনানুগভাবে দেখব।
মঙ্গলবার একটি জাতীয় দৈনিকে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে ভুতুড়ে কাণ্ড’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশের পর বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে অর্থপ্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে জরুরি বৈঠকে বসেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, শুল্ক গোয়েন্দার দুই বিভাগের দুই ডিজি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বৈঠকের পর প্রেসবিফিংয়ে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অর্থপ্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বর্ণের পরিমাণে কোনো হেরফের হয়নি। শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের দেয়া স্বর্ণ জমা রাখার সময় ৪০ শতাংশই ছিল। ৮০ ও ৪০’এর মধ্যে ক্লারিক্যাল মিস্টেক হয়েছে। তবে আমরা বিষয়টাকে ছোট করে দেখছি না, এটা নিশ্চিত থাকেন। সামান্য ফাঁক দিয়েও কিন্তু বড় হয়ে যায়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআরের মধ্যে যোগাযোগ ঘাটতিতেই এই সঙ্কট। তবে আমরা বিষয়টিকে ছোট করে দেখছি না। পর্যলোচনা করে কারো বিরুদ্ধে গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, জনগণের সম্পদ রক্ষায় সরকার বদ্ধপরিকর এবং সরকার সে বিষয়ে সজাগ রয়েছে। তাই টোটাল নিরাপত্তা সিস্টেমটা পর্যালোচনা করে ঢেলে সাজানো হবে। এ ক্ষেত্রে অন্য কোনো সংস্থা দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা যেতে পারে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বর্ণ বাইরে যাওয়ার সম্ভাবনা মোটেও নেই। ছয় স্তরের নিরাপত্তা এখানে আছে। এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরও সিস্টেমের বাইরে ভল্টে যেতে পারেন না। দুই তিন জায়গায় ক্লিয়ারেন্স নিয়ে যেতে হয়। আর আমাদের তো প্রশ্নই উঠে না। আপনারা নিশ্চিত থাকবেন যে, কিছু বাইরে যায়নি।
তিনি বলেন, আমি আমার কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো এবং এটাকে আমাদের লেভেলে অথবা অন্য কোনো সংস্থাকে দিয়ে আরো অধিক পর্যালোচনা করবো। এতে বাংলাদেশ ব্যাংক ভীত নয়। তাদের গভর্নর বলে গেছেন, আপনারা যাকে দিয়ে দেখাবেন দেখান। আমাদের তরফ থেকে কোনো সংশয় নেই, সবকিছু ঠিকই আছে। জনগণের যেটা জানানোর দায়িত্ব, তাদের সম্পদ বাংলাদেশ ব্যাংকে ঠিকই আছে, সঠিক আছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঘুণাক্ষরেও যদি গাফিলতি ঘটে থাকে তবে সেটা দেখার দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের। সরকার সেই দায়িত্ব পালন করবে। আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন। আগামীতে আরো যতো তথ্য আমরা পাবো সেটাও সময়মত আপনাদের জানাবো। আমরা গোটা ব্যবস্থা নিয়ে পর্যালোচনা করবো।
মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের এক অনুসন্ধানের তথ্যের ভিত্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের ৯৬৩ কেজি সোনা পরীক্ষা করে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অনিয়ম ধরা পড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখা ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের সোনার চাকতি ও আংটির জায়গায় এখন আছে মিশ্র বা সংকর ধাতু। আর ২২ ক্যারেটের সোনা হয়ে গেছে ১৮ ক্যারেট।
বিবার্তা/মৌসুমী/জাকিয়া
>>স্বর্ণ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ: জরুরি বৈঠকে অর্থপ্রতিমন্ত্রী
>>স্বর্ণে হেরফের হয়নি, লেখার ভুল : বাংলাদেশ ব্যাংক
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]