চিনির দামে রেকর্ড, তুরস্ক থেকে আমদানির সিদ্ধান্ত
প্রকাশ : ০৩ মে ২০২৩, ১৬:৩৩
চিনির দামে রেকর্ড, তুরস্ক থেকে আমদানির সিদ্ধান্ত
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর বাজারে খোলা চিনির দাম বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। তবে বাজারে খোলা চিনি পাওয়া গেলেও প্যাকেটজাত চিনি মিলছে না মোটেও।


খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ সংকটে বাজারে চিনির দামে এই অস্থিরতা চলছে। তবে মিলমালিকরা বলছেন, দেশে চিনির কোনো সংকট নেই। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেশি। এ অবস্থায় মঙ্গলবার চিনিকলের মালিকরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে এক চিঠির মাধ্যমে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।


বুধবার (৩ মে) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে তুরস্কের স্মাটেক ইনফরমেশন টেকনোলজি থেকে ১২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চিনি কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।


বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এ চিনি কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে মোট খরচ ধরা হয়েছে কোটি ৬৪ কোটি ২০ লাখ টাকা।


গত মাসে সরকার প্রতি কেজি খোলা চিনির দাম ১০৪ টাকা বেঁধে দিয়েছিল। এর মধ্যেই চিনির দাম প্রতি কেজিতে রেকর্ড বেড়ে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোথাও আরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খুচরা বাজারে মিলছে না প্যাকেটজাত চিনি। আর খোলা মিললেও ক্রেতাকে কেজিপ্রতি গুনতে হয়েছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ১২০ থেকে ১২৫ টাকার মধ্যে ছিল।


মঙ্গলবার (২ মে) বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় চিনি আমদানি নিয়ে তারা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে।


বুধবার (৩ মে) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ দোকানে প্যাকেটজাত চিনি নেই। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ঈদের পর থেকে কোনো চিনির সরবরাহ নেই। কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরা অন্য পণ্যের অর্ডার নিলেও চিনির সরবরাহ নেই বলে সাফ জানিয়ে দিচ্ছে।


আমদানিকারকদের দাবি, আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির রেকর্ড দাম বেড়েছে। এর প্রভাব পড়ছে অভ্যন্তরীণ বাজারে। এমন পরিস্থিতিতে বেশি দাম দিয়ে চিনি আমদানি করবেন কি না, সেই বিষয়ে সরকারের মত চেয়েছেন তারা। তারাও বাড়তি দামের কারণে আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন।


সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে দেখা গেছে, এক মাসে চিনির দাম বেড়েছে ১৫ শতাংশ। আর এক বছরে বেড়েছে ৬২ শতাংশের বেশি।


পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোনো কোনো ডিলার চিনি বিক্রি করছেন। কিন্তু তারা দাম বেশি নিলেও দিচ্ছেন না ক্রয় রসিদ।


এ বিষয়ে বাংলাদেশ চিনি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. মফিজুল হক বলেন, কোম্পানিগুলো জানিয়েছে চিনির উৎপাদন নেই। আন্তর্জাতিক বাজারে এখন প্রতি টন অপরিশোধিত দাম দাঁড়িয়েছে ৬৭০ ডলারে, যা আগে থেকে প্রায় ১০০ ডলার বেশি। তাই আমদানি কমেছে।


বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন টিসিবির বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনায় চিনি কেনার লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে এক লাখ ৩৮ হাজার মেট্রিক টন। এ চাহিদার প্রেক্ষিতে ১২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চিনি কেনার জন্য গত ৯ মার্চ টিসিবি থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।


সূত্র জানায়, গত ২০২১ সালের ২৩ জুন তারিখে অনুষ্ঠিত ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র ভার্চুয়াল সভায় রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে অনুমোদনের তারিখ থেকে ২০২৪ সালের ২৬ মে তারিখ পর্যন্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য- পেঁয়াজ, রসুন, মশুর, ডাল, ছোলা, মসলা-শুকনা মরিচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচ, ধনে, জিরা, আদা, হলুদ, তেজপাতা, সয়াবিন তেল, পামঅয়েল, চিনি, লবণ, আলু, খেঁজুর আমদানি /স্থানীয় বাজার থেকে সংগ্রহের লক্ষ্যে পিপিএ, ২০০৬-এর ৬৮(১) ধারা অনুযায়ী ‘সরাসরি ক্রয়পদ্ধতি’ অনুসরণ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী কেনার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com