
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসন ও আবাসন ভাতা চালুসহ ৫দফা দাবী জানিয়ে প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপি জমা দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
রোববার (১৮ মে) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বরাবর এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপিতে ৫দফা দাবীসহ শাখা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রতিষ্ঠার লগ্নে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় একটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসন সুবিধা চরম সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা বর্তমান প্রায় ৩০,০০০ শিক্ষার্থীর বিপরীতে আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে মাত্র ১৮ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য।
বাকি ৮২ শতাংশ শিক্ষার্থী চরম নিরাপত্তাহীনতা, উচ্চ ভাড়া, অপর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় বসবাস করতে হচ্ছে। এছাড়াও শহরে বসবাসকারী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য মূল্যবান সময় ও অর্থ ব্যয় হয়।
এতে করে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন, মানসিক স্বাস্থ্য এবং সার্বিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। যা শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার ক্ষেত্রে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভার ফেলো
এই অব্যবস্থাপনা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা আপনার দৃষ্টি আকর্ষণপূর্বক নিম্নোক্ত দাবিসমূহ উপস্থাপন করছি:
১. দীর্ঘমেয়াদে শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসনের নিশ্চয়তা দিতে পর্যাপ্ত নতুন হল নির্মাণ করার কার্যক্রম দ্রুততম সময়ে হাতে নেওয়া।
২. হল নির্মাণ কার্যক্রম গ্রহণের পাশাপাশি স্বল্পমেয়াদে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত হারে মাসিক আবাসন ভাতা চালুর মাধ্যমে তাদের ভোগান্তি কিছুটা লাঘব করা।
৩. বর্তমানে কার্যরত হলগুলোর সংস্কার ও আবাসন ধারণক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আরও বেশি শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং বিদ্যমান ছেলেদের নতুন দুটি হলের পূর্ণাঙ্গ শতভাগ আসন বরাদ্দ নিশ্চিতকরণের প্রক্রিয়া দ্রুততর করা।
৪. শহীদ ফরহাদ ও অতীশ দীপঙ্কর হলে আসন বরাদ্দ পাওয়ার পরও হলে উঠতে না পারা এবং সঠিকভাবে আবেদন করার পরও আইসিটি সেলের ত্রুটির কারণে আবেদন গৃহীত না হয়ে সিট বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত হওয়া শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে হলে উঠার প্রক্রিয়া দ্রুততর করা।
৫. বিগত সময়ের সকল প্রশাসনিক দূর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ প্রশাসনিক সংস্কার নিশ্চিত করা। পরিশেষে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেন নিরাপদ ক্যাম্পাস ও স্বস্তিদায়ক এবং উপযুক্ত আবাসন সুবিধা পায়, তা নিশ্চিত করা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব। আমাদের উপস্থাপিত দাবিসমূহ বিবেচনা করে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আপনার সদয় দৃষ্টি কামনা করছি।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, “নিরাপদ ক্যাম্পাস এবং উপযুক্ত আবাসন নিশ্চিত করা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব। আমরা আশা করি প্রশাসন দ্রুত আমাদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ নেবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চবি উপাচার্য ছাত্রদলকে আশ্বস্ত করেন। দাবিগুলো যৌক্তিক, তারা পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নিবেন।
স্মারকলিপি নিয়ে চবি ছাত্রদলের সভাপতি আলাউদ্দীন মহসিন বলেন, "আমাদের শিক্ষার্থী ভাইবোনেরা দিনের পর দিন আবাসিক সংকটে ভুগছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় শতভাগ আবাসিক হওয়ার কথা ছিলো। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নতুন হল নিমার্ণের উদ্যোগ নিক, শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসন করুক।যতদিন নতুন হল নিমার্ণ না হবে শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা দেওয়া হোক।"
চবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান স্মারকলিপির বিষয়ে বলেন, "আবাসন সংকট নিরসন শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি। হলে স্খান সংকুলন না হওয়ায় স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে বাহিরে অস্বাস্থ্যকর কটেজে শিক্ষার্থীদের থাকতে হচ্ছে।বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত দ্রুত নতুন হল নিমার্ণের উদ্যোগ গ্রহণ করা ও বর্তমানে আবাসন সুবিধার বাহিরে থাকা শিক্ষার্থীদের ভাতা প্রদান করা। এসব দাবি মেনে না নিলে শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দিবে চবি ছাত্রদল।
বিবার্তা/মহসিন/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]