পাবিপ্রবিতে জাতীয় শোক দিবসে ‘বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা-ভাবনা’ নিয়ে আলোচনা সভা
প্রকাশ : ১৬ আগস্ট ২০২৩, ১২:৫৬
পাবিপ্রবিতে জাতীয় শোক দিবসে ‘বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা-ভাবনা’ নিয়ে আলোচনা সভা
পাবিপ্রবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মঙ্গলবার ( ১৫ আগস্ট) যথাযথ মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শোক দিবস পালন করা হয়েছে।


এ উপলক্ষে সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালি শেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মোস্তফা কামাল খান এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ্ উদ্দীন ‘জনক জ্যোতির্ময়’ ম্যুরালে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। এ সময় আরও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে বিভিন্ন বিভাগ, দপ্তর, হল প্রশাসনসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।


শ্রদ্ধাঞ্জলি শেষে সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যালারি ২ তে বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ভাবনার ওপর এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন। প্রধান আলোচক ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ্ উদ্দীন এবং সভাপতিত্ব করেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মোস্তফা কামাল খান।



উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, শোককে শক্তিতে রূপান্তর করা এবং শোককে স্মরণ করে আমরা সামনে এগিয়ে যাব। কুচক্রী মহল তাদের কাজকে সফল করার জন্য জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের উপর এই ঘৃণীত-নির্মম হত্যাকান্ড চালায়। অপশক্তি এখনও সক্রিয় আছে, তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, শিক্ষায় আমরা অনেক এগিয়েছি। আমাদের আত্মবিশ্লেষণ করতে হবে। শিক্ষার মূল চিন্তাকে আমাদের অন্তরে ধারণ করতে হবে। প্রকৃত শিক্ষার মাধ্যমেই আমরা সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। জ্ঞান-বিজ্ঞানে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে ধারণ করে আগামীর প্রজন্ম বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সোনার বাংলা আমাদের গড়ে তুলতে হবে।


সভায় প্রধান আলোচক কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ্ উদ্দীন মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন। তিনি বলেন, যেহেতু বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মদাতা, সেহেতু দেশটির স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুকে যেসব বিষয় ভাবিয়েছে, তার মধ্যে শিক্ষা অন্যতম। শিক্ষা মানুষকে মানবিক চেতনাসম্পন্ন, সৃষ্টিশীর করে তোলে এবং মানুষকে দেশ-সমাজের বোঝা না হয়ে, কর্মনিষ্ঠ ও উৎপাদন ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে গড়ে তোলে। তাই রাষ্ট্র গঠনে বঙ্গবন্ধু শিক্ষাকে অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। এ দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলাই বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ভাবনার মূল বিষয ছিল। বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাসংক্রান্ত ভাবনা ছিল শিক্ষা-দার্শনিক সূলভ। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন জ্ঞান-পিপাসু, প্রজ্ঞাবান এবং দূরদর্শী। বঙ্গবন্ধু শুধু রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতায় নয়, বরং রাষ্ট্রের অভ্যন্তরের প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বকীয়তা, স্বাধীনতা ও স্বশাসনে বিশ্বাস করতেন। এর মধ্য দিয়ে মূলত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান তথা গোটা সমাজেই আধুনিকতা, অগ্রসর চিন্তা এবং মানব মুক্তি প্রতিষ্ঠা পায় ও তা ত্বরান্বিত হয়। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে বিজ্ঞান গবেষণার পর সবচেয়ে বেশি সাফল্য এসেছে কৃষিক্ষেত্রে। বঙ্গবন্ধু সবসময় চেয়েছিলেন একটি আত্মনির্ভরশীল এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি দেশ।



তিনি আরও যোগ করে বলেন, শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা-দর্শন এখন আগের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ এং এর ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে বর্তমান বাংলাদেশের শিক্ষা নীতি। বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা-দর্শন ও শিক্ষা ভাবনাকে বাস্তবায়ন করে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করে, গবেষণা ও উদ্ভাবনের সুযোগ বৃদ্ধি করে, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে বলে আশা করি।


উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মোস্তফা কামাল খান সভাপতির বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে আমাদের হৃদয়ে ধারণ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হয়ে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করতে হবে। জাতির পিতার কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তিনি আলোচনা সভায় অংশগ্রহণকারী সকল অতিথি, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।


আরও বক্তব্য দেন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. দিলীপ কুমার সরকার, মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুল্লাহ্, রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম, জ্যেষ্ঠ শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মো. খায়রুল আলম, অধ্যাপক ড. মো. মুশফিকুর রহমান, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ফরিদুল ইসলাম বাবু এবং সাধারণ সম্পাদক মো. নূরুল্লাহ।


এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রক্টর ড. মো. কামাল হোসেন, ছাত্র উপদেষ্টা ড. মো. নাজমুল হোসেনসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হল প্রভোস্ট, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। বাদ যোহর শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক মোছা. মিরা খাতুন।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com