শিরোনাম
উদ্ভাবনে সারাদেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে চান সাদ্দাম হোসেন
প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩:২১
উদ্ভাবনে সারাদেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে চান সাদ্দাম হোসেন
উজ্জ্বল এ গমেজ
প্রিন্ট অ-অ+

বাবা-মার স্বপ্ন ছিলো ছেলে বড় হয়ে ডাক্তার হবে। সে ইচ্ছে পূরণ করতে তিনি মেহেরপুর পৌর কলেজ থেকে ২০০৯ সালে এইচএসসি পাস করে ঢাকাতে মেডিকেল কোচিং করেন। কিন্তু তার স্বপ্ন ছিলো সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে ব্যতিক্রমী ও উদ্ভাবনী বড় কিছু করার। এর জন্য মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায়ও অংশগ্রহণ করেননি। অন্য কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি পরীক্ষা দেননি। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হন রাজধানীর ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে বিএসসি ইন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। আজ তিনি নাগরিক নিরাপত্তা, জরুরি সাহায্য ও অপরাধ দমনে পুলিশকে সহায়তার জন্য মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন 'সেলফ প্রটেক্ট' প্রযুক্তির উদ্ভাবক। যেটি নারী নিরাপত্তায় বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। বর্তমানে অ্যাপটি মেহেরপুর জেলাতে পাইলট প্রকল্প হিসেবে চালু রয়েছে।


বলছিলাম উইনকি টেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রতিষ্ঠাতা এবং সেলফ প্রটেক্ট অ্যাপের উদ্ভাবক সাদ্দাম হোসেনের কথা। সম্প্রতি অ্যাপটি নিয়ে কথা হয় সাদ্দাম হোসেনের সাথে। একান্ত আলাপে উঠে আসে তার জীবনের বাঁকে বাঁকে নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে ‘সেলফ প্রটেক্ট’ অ্যাপ তৈরির গল্প। সেসাথে অ্যাপটির কার্যক্রমসহ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা।


মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর ইউনিয়নের বাবুপুর গ্রামে জন্ম মো. সাদ্দাম হোসেনের। বাবা মো. জামাত আলী, মা শাহানারা খাতুন গৃহীণি। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড় সাদ্দাম হোসেন।



২০১২ সালের মার্চের একদিন চুয়াডাঙ্গার রেলওয়ে স্টেশন থেকে মেহেরপুর ফিরছিলেন উইনকি টেক লিমিটেডের প্রধান সাদ্দাম। হঠাৎ ৭-৮ জনের একটা ছিনতাইকারীর দল এসে তার মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোনটা কেড়ে নিয়ে যায়। তখন তার ভাবনায় আসে প্রতিদিন এমন অসংখ্য মানুষ ছিনতাই কিংবা অপহরণের কবলে পড়ছেন। কিন্তু এমন অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদের খবরটি তৎক্ষণাৎ আপনজন বা আশপাশের পুলিশের কাছে জানানো সম্ভব হয় না। ভাবনায় এলো স্মার্টফোনে এমন কোনো সফটওয়্যারের, যার মাধ্যমে বাটন চাপার সঙ্গে সঙ্গেই বিপদের কথা পুলিশের কাছে জানানো সম্ভব হবে। সেদিন থেকেই আইডিয়াটিকে কীভাবে অ্যাপে রূপান্তরিত করা যায়, তা নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যেতে লাগলেন তরুণ অ্যাপ ডেভেলপার সাদ্দাম।


সাদ্দাম বলেন, স্মার্টফোনে যদি এমন একটা অ্যাপ্লিকেশন (সফটওয়্যার) থাকত, যেটার মাধ্যমে একটা বাটন চাপার সাথে সাথেই বিপদের কথা পুলিশ প্রশাসনের কাছে জানানো সম্ভব, তাহলে হয়তো ছিনতাইকারীদের পুলিশে ধরিয়ে দিয়ে হারানো মোবাইল ফোনটা ফিরে পাওয়া যেতো। সেদিন থেকেই আইডিয়াটিকে কীভাবে মোবাইল অ্যাপে রূপান্তরিত করা যায় তা নিয়ে গবেষণা করতে থাকি।


কোথায়, কার কাছে গেলে ও কীভাবে স্বপ্নের বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে সে চিন্তায় যখন তিনি বিভোর তখন একটা সুবর্ণ সুযোগ এসে ধরা দেয় তার কাছে। সময়টা ছিল ২০১৪ সাল। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেশব্যাপী পরিচালিত হচ্ছিল মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপ) উন্নয়নে সচেতনতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির কর্মসূচি। ওই কর্মসূচির আওতায় সারা দেশের ন্যায় চুয়াডাঙ্গার ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে ৮ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি ৫ দিনের মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপ) তৈরির প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন সাদ্দাম। প্রাথমিকভাবে মোবাইল অ্যাপ তৈরির শিক্ষা লাভ করেন তিনি।



তরুণ এই অ্যাপ ডেভেলপারের দুচোখ ভরা ছিল নতুন কিছু করার স্বপ্ন। তার ভাষ্য, মোবাইল অ্যাপ ডেভোলোপমেন্টের জন্য প্রশিক্ষণ নেয়ার সময় আমার প্রশিক্ষকদের সাথে আইডিয়াটি শেয়ার করলে তারা আমাকে সব ধরণের সাহায্য করার আশ্বাস দেন। তখন তাদের নির্দেশনা ও পরামর্শে স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করা শুরু করি। তার পর থেকে প্রশিক্ষক ও মেন্টরদের সহযোগিতায় অ্যাপের বিভিন্ন ফিচার যোগ করতে থাকি। টানা দীর্ঘ ৩ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে শেষ হলো নাগরিক নিরাপত্তা, জরুরি সাহায্য ও অপরাধ দমনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাকে সহায়তাকারী মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ‘সেলফ প্রটেক্ট’ অ্যাপের কাজ। এরপরে এটাকে আরো ব্যবহারবান্ধব করার জন্য ধাপে ধাপে নিত্যনতুন ফিচার যোগ করতে থাকি।


সেসাথে বিভিন্ন ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা, বিজ্ঞান মেলাতে প্রদর্শন করতে থাকি। একটা সময় গণমাধ্যমে এটি প্রকাশ পায়। ধীরে ধীরে প্রিন্ট, অনলাইন মিডিয়া, রেডিওসহ প্রায় সব টিভিতে অ্যাপটি নিয়ে ব্যাপক সাড়া ফেলে।


কথায় কথায় জানা গেলো এই অ্যাপ তৈরির পেছনে রয়েছে আরো অনেক ঘটনা। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার উদ্দেশ্যে তিনি ভর্তি হন রাজধানীর ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি ইন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। কয়েক সেমিস্টার পড়ার পর জটিল রোগে আক্রান্ত হন। ঢাকায় দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ না হলে ডাক্তার পরামর্শে সুস্থ হওয়ার জন্য রাজধানী ছেড়ে তাকে চলে যেতে হয় গ্রামের বাড়িতে। দুই বছর বাড়িতে চিকিৎসার পরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। চিকিৎসায় অনেক টাকা ব্যয় হওয়াতে আর্থিক সমস্যার জন্য তাকে আর ঢাকায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ফেরা সম্ভব হলো না। পরে পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গায় ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হন তিনি। তখনই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেশব্যাপী পরিচালিত মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপ) উন্নয়নে সচেতনতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির কর্মসূচিতে অংশ নেন। এরপরেই শুরু হয় তার উদ্ভাবনী কার্যক্রম। কিন্তু পারিবারিক আর্থিক সমস্যার কারণে গবেষণা ও পড়াশুনা এক সাথে চালিয়ে যেতে অনেক কষ্ট হয় তরুণ এই উদ্ভাবকের। সিদ্ধান্ত নেন আবার ঢাকায় ফেরার। কিন্তু কীভাবে?



একদিন ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান সবুর খানকে ফেসবুকে ম্যাসেজের মাধ্যমে নিজের গবেষণা ও অ্যাপ সম্পর্কে জানান। বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে সবুর খান তাকে ঢাকায় এসে দেখা করতে বলেন। দেখা করে গবেষণা ও অ্যাপ সম্পর্কে বললে এর জন্য প্রশংসা করেন। দুই বছর আগেও ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ালেখা করা, চলে যাওয়ার কারণ এবং বর্তমানে পারিবারিক আর্থিক সমস্যার কারণে গবেষণা ও পড়াশুনা চালিয়ে যেতে কষ্টের কথা শুনে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান সঙ্গে সঙ্গেই তাকে ফুল ফ্রি স্কলারশিপ দেয়ার কথা জানান। তখন সাদ্দাম আবার ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট ট্রান্সফার করে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হন এবং প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশুনা শেষ করেন।


এবিষয়ে সাদ্দামের ভাষ্য, স্যার আমাকে নতুনভাবে স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার আশ্রয় দিয়েছেন। এক সময়ে ভেঙে যাওয়া স্বপ্নকে বাস্তবে দেখার প্রেরণা যুগিয়েছেন। তখন থেকেই তিনি আমাকে সার্বিকভাবে সহায়তা করছেন। তিনি আমাকে এই সাপোর্ট না দিলে হয়তো এই উদ্ভাবনের কাজটা আমার পক্ষে করা সম্ভব হতো না। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. সৈয়দ আখতার হোসেন স্যার সহযোগিতা করছেন।


বিপদের সময় অ্যাপটি ব্যবহার সম্পর্কে সাদ্দাম জানালেন, সেবা পাওয়ার জন্য ব্যবহারকারীকে মোবাইলে (স্মার্টফোনের) অ্যাপটি ইন্সটল করে সবসময় সক্রিয় রাখতে হবে। যেকোনো বিপদের সময় স্মার্টফোনের পাওয়ার বাটনটি পরপর ৩ বার প্রেস করার সঙ্গে সঙ্গেই নিকটস্থ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা ও ফ্রেন্ডস এবং ফ্যামিলির কাছে ব্যক্তির অডিও, ফুটেজ এবং অবস্থান মানচিত্রসহ প্রয়োজনীয় বার্তা পৌঁছে যাবে। এমনকি মোবাইল ফোনটি চুরির পর ফোনের সিম পরিবর্তন করলে অ্যাপটি থেকে পরিবারের অন্য মোবাইল নম্বরে হারানো ফোনটির অবস্থান, চোরের ব্যবহৃত নতুন সিম নম্বরসহ মেসেজ পৌঁছে যাবে। এতে অপরাধীকে গ্রেফতার করার সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে।



অ্যাপটি ব্যবহার করার জন্য ব্যবহারকারীর কোন ইন্টারনেট কানেকশন বা ডাটা অন থাকা লাগবে না। অর্থাৎ ব্যবহারকারীর ইন্টারনেট কানেকশন অফ থাকলেও জিপিএস অন থাকার জন্য সার্ভিস প্রোভাইডার বা মোবাইল অপারেটরের সাহায্যে বার্তাটি পুলিশ স্টেশনে পৌঁছবে। মোবাইল ফোনটি ছিনতাইকারী নিয়ে যাওয়ার পর সিম পরিবর্তন করলে অ্যাপটি থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওই মোবাইল ফোনটির অবস্থান পুলিশের সার্ভার অ্যাপ্লিকেশনে চলে আসবে। এতে করে ছিনতাইকারীর অবস্থান জানা সম্ভব ও তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।


এমনকি এই অ্যাপের মাধ্যমে এক ক্লিকে জরুরি সেবা যেমন হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স, ব্লাড ব্যাংক ইত্যাদির সাহায্য নিতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। সেসাথে তারা নিকটস্থ হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স, এটিএম বুথ, ব্যাংক, আবাসিক হোটেল, রেস্টুরেন্ট, শপিংমল ইত্যাদি অ্যাপ থেকে এক ক্লিকে প্রয়োজনীয় সেবাটা গ্রহণ করতে পারবেন। এছাড়াও অ্যাপে আইন-প্রয়োগকারী সংস্থা, মানবাধিকার কমিশন, আইনি সহায়তা কেন্দ্র, দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে প্রয়োজনীয় অভিযোগ এবং মতামত জানানো যাবে। অ্যাপটি বর্তমানে অফিসিয়াল ওয়েব সাইট www.selfprotectapp.com থেকে ডাউনলোড করতে পারবে।


অ্যাপটির সেবা সারাদেশে পাওয়ার বিষয়ে সাদ্দামের ভাষ্য, অ্যাপটি জননিরাপত্তামূলক ও অপরাধ দমনসংক্রান্ত হওয়ায় অ্যাপটির মাধ্যমে ভুক্তভোগী ব্যবহারকারীরা প্রথমে পুলিশ বা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানাবে। তখন বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিটিকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে পুলিশ প্রশাসন। এজন্য সরকারের আইসিটি ডিভিশনের অর্থায়ন ও সহযোগিতায় অ্যাপটির ডেভেলপমেন্টের কাজ সম্পন্ন করে অনুমতি সাপেক্ষে অ্যাপটি সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। এখন এটি খুব শিগগিরই গুগল প্লে-স্টোরে পাওয়া যাবে। এটি বর্তমানে মেহেরপুর জেলাতে পাইলট প্রকল্প হিসেবে চালু রয়েছে। এছাড়া কিছুদিনের মধ্যেই এটি মেহেরপুর জেলাতে সরকারিভাবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ হতে পাইলট প্রকল্প হিসেবে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সারাদেশে এটি চালু হবে।



অ্যাপটি উদ্ভাবনের পর থেকেই সাদ্দামের অর্জনের ঝুলিতে প্রতিনিয়ত যোগ হচ্ছে নতুন সম্মাননা। ২০২০ সালেসিআরআই-ইয়াংবাংলা হতে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে উদ্ভাবনীমূলক প্রযুক্তি খাত থেকে উদ্ভাবনীমূলক প্রকল্প হিসেবে অনুদান পায় সেলফপ্রটেক্ট অ্যাপ টিম। এছাড়া ২০১৭ সালে নাগরিক সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েরআওতাধীন অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশনের (এটুআই) সলভ-এ-থন শীর্ষক প্রতিযোগিতায় দেশসেরা ১৫ জনেরএকজন এবং একইসঙ্গে উদ্ভাবক অন্বেষণের রিয়েলিটি শো ‘উদ্ভাবকের খোঁজে’ প্রোগ্রামে সারাদেশ থেকে দুইহাজারের বেশি উদ্ভাবকের মধ্যে দেশসেরা ১৫ জনের মধ্যে স্থান অর্জন করেন সাদ্দাম। পাশাপাশি ২০১৭ ও২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত মেহেরপুর ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় অর্জিত হয় শ্রেষ্ঠ উদ্ভাবন ও তরুণ উদ্ভাবকেরখেতাব। অর্জনের খাতায় রয়েছে ২০১৭ সালের খুলনা বিভাগীয় ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় শ্রেষ্ঠ তরুণউদ্ভাবকের সম্মাননা।


আত্মনিরাপত্তামূলক অ্যাপের এই উদ্ভাবকের উইনকি টেক লিমিটেড (www.winkytech.com) নামের একটাসফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাহিসেবে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করছেন। প্রতিষ্ঠানটিতে রয়েছে এক ঝাঁক মেধাবী, দক্ষ ও ডায়নামিকসফটওয়্যার ডেভেলপার। এখানে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট,সাইবার সিকিউরিটি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও ডাটা এনালেটিক্স বেজড প্রজেক্ট, এআর-ভিআর
ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিংসহ কয়েকটি ক্লায়েন্টকে সফটওয়্যার ম্যানেজমেন্টের সেবা দিয়ে আসছে।ইউএসএ বেজড একটি সফটওয়্যার কোম্পানির সাথে যৌথভাবে ওখানকার ক্লায়েন্টদের সুনামের সাথে সার্ভিসদিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।


তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে দেশ ও জনকল্যাণমূলক প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও জননিরাপত্তামূলকআরো যুগোপযোগী বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার তৈরি করে পরিবার, সমাজ, দেশ ও জাতিকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজ করে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজে অংশীদার হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন এইউদ্ভাবক। অ্যাপটি নিয়ে তার ভাষ্য, আত্মনিরাপত্তামূলক অ্যাপটি নাগরিক নিরাপত্তায় আমাদের দেশেঅগ্রণীভূমিকা পালন করবে। ইতোমধ্যেই অ্যাপটি ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় সব ফিচার যুক্ত করা হয়েছে।তবে সারাদেশে এটি ব্যবহারের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আরো বেশিসহযোগিতা প্রয়োজন। ৬৪টি জেলায় এটা ব্যবহারের উপযোগী করতে হলে প্লাটফর্মটির কলেবর অনেক বৃদ্ধিকরতে হবে।



আইসিটি বিভাগের উদ্ভাবনী অনুদান ও নিজস্ব বিনিয়োগ এর মাধ্যমে অ্যাপটি বেটা ভার্সন ডেভেলপ করা হয়েছে।অ্যাপটির ডেভেলপমেন্ট ও সার্ভিস রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণেজননিরাপত্তামূলক এ অ্যাপটি পুরো দেশে ব্যবহারের উপযোগী করা সম্ভব হচ্ছে না। আমি চাই এটি সারাদেশেরসকলেই ব্যবহার করুক। সরকারের আইসিটি বিভাগ এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে পর্যাপ্ত অর্থায়ন ওসহযোগিতা করবে বলে আশা করি। ইতিমধ্যে উদ্ভাবনবান্ধব তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীজুনাইদ আহমেদ পলক এ ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস সরকার ও সবার আন্তরিক সহযোগিতাপেলে আত্মনিরাপত্তামূলক উদ্ভাবনটি একদিন আপন আলোয় উদ্ভাসিত হবে। দেশের সকল নাগরিককে দেবেআত্মনিরাপত্তা। এর মধ্য দিয়ে সরকারের স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশের জনসাধারণের নিরাপত্তায় যোগ হবেনতুন মাত্রা। স্বপ্ন দেখি ডিজিটাল ও নিরাপদ বাংলাদেশের। এখন শুধু সে মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষা।


বিবার্তা/উজ্জ্বল/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com