ভুক্তভোগীর উদ্দেশ্যে মোহাম্মদপুর থানার ওসি
দামি ফোন নিয়ে ঘুরলে ছিনতাই হবেই!
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৫, ১৪:২৬
দামি ফোন নিয়ে ঘুরলে ছিনতাই হবেই!
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার মাত্র তিন মিনিটের দূরত্বে সাংবাদিক আহমাদ ওয়াদুদের ওপর চাপাতি দিয়ে আঘাত করে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।


বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাত ১১টার দিকে এই হামলা ও ছিনতাইয়ের শিকার হন তিনি। ঘটনার পর থানায় গেলে পুলিশের অসহযোগিতা ও অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্য ভুক্তভোগীকে আরও আহত করেছেন।


ভুক্তভোগী সাংবাদিকের ফেসবুক স্ট্যাটাসে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।


আহত সাংবাদিক আহমাদ ওয়াদুদ বলেন, ছিনতাইকারীরা তার মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয় এবং চাপাতি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। সৌভাগ্যবশত আঘাত গুরুতর নয়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা স্ত্রী নিরাপদে ছিলেন।


থানায় গিয়ে সহযোগিতা না পেয়ে হতাশ হন ভুক্তভোগী সাংবাদিক। ঘটনার ৫ মিনিটের মাথায় তিনি মোহাম্মদপুর থানায় হাজির হন। কিন্তু অভিযোগ জানানোর পরপরই শুরু হয় অন্যরকম অভিজ্ঞতা। ডিউটি অফিসার এসআই জসিম তাকে অপেক্ষা করতে বলেন। এ সময় সাদাপোশাকের এক পুলিশ সদস্য তার দিকে আঙুল তুলে বলেন, ‘আপনার শার্টের বোতাম লাগান।’


আহমাদ ওয়াদুদ বলেন, ‘ছিনতাইকারীদের আঘাতে বোতাম খুলে গিয়েছিল। আমি কোনো তর্কে না গিয়ে সরি বলে ঠিক করে নিই। কিন্তু এরপরও আমাকে বলা হয় বাকি বোতাম লাগাতে, যা আমরা সাধারণত লাগাই না।


অভিযোগ লেখার অনুরোধ করলে প্রথমে বলা হয়, ‘লিখে দেওয়ার লোক নেই’। পরে কাগজ দিলেও কলম দিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়। নিজের কলমে অভিযোগ লিখে জমা দিলেও কোনো কপি দেওয়া হয়নি।


পরবর্তীতে তিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী ইফতেখার হাসানের রুমে গেলে ওসি বলেন, ‘আমি ওসি হয়েও এই কমদামি ফোন ব্যবহার করি, আপনি এত দামি ফোন নিয়ে ঘুরলে ছিনতাই তো হবেই!’


এই মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা। নেটিজেনদের অনেকেই বলেন, একজন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তার এমন মন্তব্য দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং ভীতিকর।


ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, পরবর্তীতে এএসআই আনারুলের সঙ্গে দেখা করে তিনটি পয়েন্ট ঘুরে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে ছিনতাইকারীদের উপস্থিতিও শনাক্ত করেন। কিন্তু পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে না গিয়ে কিছুদূরে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে ফিরে আসেন। এরপর হামলাকারীরা সেখান থেকে সরে গেলে পুলিশ সদস্য বলেন, ‘এখন আর পাওয়া যাবে না, রাতে এসে অভিযান চালাবো।’


এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) এস এন নজরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। যেসব পুলিশ সদস্য দায়িত্বে অবহেলা করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে মোহাম্মদপুর থানার দুই পুলিশ সদস্যকে ক্লোজ করা হয়েছে।


বিবার্তা/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com