শিরোনাম
আগাগোড়া ঔষধিগুণে ভরা আপাং
প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০২০, ১৭:৩৯
আগাগোড়া ঔষধিগুণে ভরা আপাং
অনামিকা রায়
প্রিন্ট অ-অ+

নিতান্তই সাদামাটা ধরনের গাছ আপাং। দেশের সর্বত্র পতিত স্থানে জন্মে। আমরা বলি আগাছা। কিন্তু এই নিরীহ আগাছাটিই আগাগোড়া ঔষধিগুণে ভরা। এ গাছের মূল, কাণ্ড, পাতা ও বীজ নানা রোগে কাজে লাগে। বিশেষত গা-ফোলা, জিহ্বায় ঘা, বদহজম, বাত রোগ, রক্তক্ষরণ, জ্বর, পেটব্যথা, প্রসব বেদনা ও গর্ভপাতে এ গাছের বিভিন্ন লোকজ ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।


আপাং একটি একবর্ষজীবী উদ্ভিদ। আপাং, চিরচিরে,সিসা গন্ধ, রক্ত আপাং, উপুতলেংগাসহ এটি বেশ কয়েকটি নামে পরিচিত। এটি সাধারণত ২ রঙের হয়ে থাকে সাদা ও লাল। হার্ব জাতীয় উদ্ভিদ। এ উদ্ভিদটি ১ মিটারের মতো উঁচু হয়। শাখা প্রশাখা চারদিকে ছড়ানো থাকে। মূলে ভেষজ গুণ বিদ্যমান। কান্ডের অগ্রভাগে বড় বাঁকানো কাটাময় ফুল ফোটে। পাতা,বীজ ও কান্ডে ভেষজ গুণ রয়েছে।


“আপাং”যে যে চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় :


অর্শ রোগ


আপাং-এর বীজ ৩ গ্রাম নিয়ে তা আতপ চাল ধোয়া পানি দিয়ে ভালভাবে বেটে সকালে একবার করে নিয়মিত ৩-৪ দিন খেলে অর্শের যন্ত্রণা এবং রক্তপড়া বন্ধ হয়।


অকাল প্রসবে


অকাল প্রসবের সম্ভাবনা দেখা দিলে আপাং গাছের ফুল অর্থাৎ মঞ্জুরী হয়নি এমন চারাগাছ গোড়া থেকে মুলসহ তুলে গর্ভবতীর কটিদেশে বেঁধে দিলে অকালপ্রসবের ভয় থাকেনা।


ফোঁড়ার পুঁজ বের করতে


আপাং গাছের টাটকা পাতার রস ৮-১০ টি এবং আতপ চাল ৪ গ্রাম নিয়ে উভয়কে ঠান্ডা পানি দিয়ে বেটে ফোঁড়ার চারপাশে প্রলেপ দিলে ভেতর থেকে পুঁজ ও দূষিত রক্ত বের হয়ে আসে। তবে দিনে ২-৩ বার প্রলেপ দিতে হবে।


দাদ রোগে


আপাং গাছের শুকনা ডাঁটা আগুনে পুড়িয়ে ক্ষার তৈরি করে নিতে হবে। ৮ গ্রাম সেই ক্ষার এবং জলপাই তেল দিয়ে মেখে দাদের উপর ঘষে ঘষে লাগাতে হবে। ৪-৫ দিনের মধ্যে উপকার পাওয়া যাবে।


কাটা ও রক্তপাতে


আঘাত লেগে কেটে রক্ত বের হলে আপাং এর টাটকা রস কাটা স্থানে দিলে সাথে সাথে রক্ত পড়া বন্ধ হবে।তবে রসটা পরিমানে একটু বেশি হতে হবে।


চুল পাকা রোধে


আপাং এর টাটকা শিকড় পরিমান মত নিয়ে বেটে তা দুপুরে গোসল করতে যাওয়ার ২-৩ ঘন্টা আগে সারা মাথায় ব্যবহার করতে হবে। কিছুদিন নিয়মিত ব্যবহার করলে একদিকে চুলের রঙ যেমন কালো হবে,তেমনি নতুন চুলও গজাবে। এসব ছাড়াও আপাং গ্রহনী রোগে,কলেরা রোগে,বিষাক্ত ক্ষতে,বাগী রোগে কাজ করে


প্রসব সমস্যায়


এটা মৃদু জোলাপের কাজ করে। বৃহৎ মাত্রায় সেবন করলে প্রসব বেদনা ত্বরান্বিত হয় তাই গর্ভপাত ঘটানোর জন্য অনেক সময় এর ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আপাং এর ছাই এ প্রচুর পরিমাণ পটাশ আছে তাই এর ছাই অ্যান্টাসিড হিসেবে ব্যবহৃত হয়।


বক্ষব্যাধিতে আপাং


সামান্য কারণেই যাদের বুক ধড়ফড়ানি শুরু হয় তাঁরা যেন প্রত্যহ সকালে ঠাণ্ডা পানি সহ এক চা-চামচ আপাং এর তাজা রস কিছুদিন নিয়মিত খান। তা হলে হৃদযন্ত্র সবল হবে।


ক্ষুধা সমস্যায় আপাং


যাদের খিদে হয় না জোর করে খেলে হজম হয় না তাঁরা ৮ ভাগ আপাং-এর শিকড় এবং ১ ভাগ গোলমরিচ বেঁটে ছোট ছোট বড়ি তৈরি করবেন এবং বড়িগুলি ছায়াতে শুকিয়ে প্রত্যহ সকাল-বিকাল খাবারের পর পানিসহ একটি করে বড়ি খাবেন। এতে করে স্বাভাবিক ক্ষুধা তৈরি হবে।


চোখের সমস্যায়


চোখের মণির অস্বচ্ছতা ও চোখ প্রদাহে মূলের মণ্ড ব্যবহৃত হয়।


শূল বেদনায় আপাং


এর ছাই মধুর সাথে মিশিয়ে সেবন করলে উপকার পাওয়া যাবে।


কাশি এবং হাঁপানিতে


কাশি এবং হাঁপানিতেও এটা ভাল কাজ করে থাকে।


জ্বর উঠলে আপাং


একদিন পর পর জ্বর উঠলে আপাং গাছের মূল ছেঁচে রস করে দিনে দু’ বার খেলে জ্বর ভাল হয়।


বিবার্তা/জাই


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com