শিরোনাম
এআই দিয়ে বানানো ভুয়া ছবি-ভিডিও যেভাবে চিনবেন
প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২৩, ১৮:৫৮
এআই দিয়ে বানানো ভুয়া ছবি-ভিডিও যেভাবে চিনবেন
বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বর্তমান ডিজিটাল যুগে সত্য-মিথ্যার তফাৎ করা দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিটি তথ্য-নথি-ছবি নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে সবাইকে। তবে সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের অনেক উপায়ও রয়েছে। কাজটা প্রযুক্তিবান্ধব লোকজনের জন্য সহজ বটে। কিন্তু যারা ছাপোষা সাধারণ মানুষ, তাঁদের জন্য ভুয়া ছবি বা মিথ্যা তথ্য যাচাই দুষ্কর। আর ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে আবির্ভাব হয়েছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই।


স্মার্টফোন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি আদান-প্রদান এখন হয়ে উঠেছে ব্যবহারকারীদের ভাব প্রকাশের অন্যতম ভাষা। সেই ছবিতেও যোগ হয়েছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রভাব। এআই দিয়ে তৈরি ছবি এবং ভিডিও দিয়ে অন্যকে বিপদে ফেলছেন অনেকে। এর শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ থেকে তারকারা পর্যন্ত। সম্প্রতি দক্ষিণী অভিনেত্রী রাশ্মিকা মান্দানা, বলিউডের কাজল ও আলিয়া ভাটের ভুয়া ভিডিও ভাইরাল হয়। যা তৈরি হয়েছে ডিপফেক দিয়ে। ডিপফেক মূলত এআইয়ের একটি ধরন। ছবি, অডিও এবং ভিডিও তৈরিতে ব্যবহার করা হয় এই প্রযুক্তি।


এআই’র মাধ্যমে এমন কিছু ভুয়া ছবি তৈরি হচ্ছে, যা দেখে একেবারে বাস্তব মনে হবে। সেসব ছবি অনেককে বড়সড় বিপদের মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ভুয়া ছবি চেনার উপায় জানা সাধারণের জন্য খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে।


ডিপফেক এআই এক্সিসটিং সোর্সকে সরিয়ে বা সোয়াইপ করে নতুন কিছু বসাতে পারদর্শী। অর্থাৎ এর মাধ্যমে আপনার মুখের জায়গায় অনায়াসেই ব্যবহার করা যাবে অন্য কোনো ব্যক্তির মুখ। তবে কয়েকটি উপায়ে ডিপফেক ভিডিও চেনা যাবে।


যেসব উপায়ে ডিপফেক ভিডিও চিনবেন


চোখ খেয়াল করুন: গবেষণায় জানা যায়, ডিপফেক ভিডিওতে একটা চরিত্রের চোখের পাতা সাধারণ মানুষের মতো ব্লিঙ্ক করে না। পলক ফেলার ক্ষেত্র হয় স্থির থাকে নয়তো ঘনঘন ফেলে। রাশ্মিকা মান্দানার ভিডিওতে যদি খেয়াল করেন, তাহলে দেখবেন তিনি দুই বার ব্লিঙ্ক করেছেন। তাঁর চোখ দুটোও একটু অন্যরকম দেখাচ্ছিল।


ঠোঁট ভালো করে দেখুন: একটু নিম্ন মানের ডিপফেক ভিডিও ধরে ফেলা খুব সহজ। এটি চিনতে লিপ-সিঙ্কিং স্বাভাবিক হবে না। এই ভিডিওতে অডিওর সঙ্গে ঠোঁট মিলবে না পুরোপুরি। ডিপফেক ভিডিও কিছু না কিছু অসঙ্গতি থাকবে।


ত্বক খেয়াল করুন: আসল ব্যক্তি আর ভুয়া ব্যক্তির স্কিনের টোন এক হবে না। যদিও একটি ভিডিও থেকে একনজরে বোঝাটা একটু অসম্ভবই বটে। ডিপফেক ভিডিওতে চরিত্রের এমনই ত্বক দেখানো হয়, যাতে কোনো দাগ নেই। এ ছাড়াও শরীরের অদ্ভুত নড়াচড়াও একটি বড় লক্ষণ।


চুল ও দাঁত: ডিপফেক ভিডিওতে চুল নিখুঁত রাখা হয়। চুল ও দাঁত অনেক সময় ডিপফেক ভিডিও ডিকোড করতে সাহায্য করে। এটিও স্বাভাবিক হবে না।


রিভার্স ইমেজ সার্চ
একটি ছবির সত্যতা যাচাইয়ের প্রথম ধাপ হলো, রিভার্স ইমেজ সার্চ। আপনার স্মার্টফোনে গুগল লেন্স অ্যাপ্লিকেশনের সাহায্যে বা কম্পিউটারের ব্রাউজারের মাধ্যমেও এই কাজটি করতে পারেন। ‘ইয়ানডেক্স’ সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করেও রিভার্স ইমেজ সার্চ করা যায়। এই পদ্ধতির সাহায্য নিয়ে আপনি জানতে পারবেন, ছবিটি আগে অন্য কোথাও ব্যহৃত হয়েছিল কিনা। যদি কোনো ফলাফল না পাওয়া যায়, তাহলে গুগল সার্চ ইঞ্জিনে কিওয়ার্ড ব্যবহার করে ছবির ডেসক্রিপশন দিয়ে দিন। যেমন, কোনো ছবিতে যদি একটি বিড়াল দেখতে পান, তাহলে বিড়ালটি কী করছে বা ছবির অন্যান্য খুঁটিনাটি তথ্য গুগল সার্চে লিখুন। তাহলে ছবিটি ভুয়া কিনা বা এর যাবতীয় তথ্য জেনে নিতে পারবেন।


এআই ইমেজ ডিটেক্টর
যদি কোনো ছবি দেখার পর আপনার মনে হয়, সেটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে, তাহলে আপনি এআই ইমেজ ডিটেক্টরের সাহায্য নিতে পারেন। এআই ইমেজ ডিটেক্টরের একাধিক অ্যাপ ও ওয়েবসাইট রয়েছে। এসব অ্যাপ বা সাইটে গিয়ে যেকোনো ছবি দিলেই মুহূর্তের মধ্যে বুঝতে পারবেন, ছবিতে এআইয়ের যোগ আছে কিনা।


গুগল বার্ড
ভুয়া ছবি চিনতে আপনাকে সাহায্য করতে পারে গুগল বার্ড। এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) চ্যাট পরিষেবাটি যেকোনো ছবির বিষয়ে যথাযথ ফলাফল দিতে পারে। তবে এ জন্য আপনাকে গুগল বার্ডে প্রমোট সেকশনে যেতে হবে। সেখানে ছবিটি দিয়ে আপনি যা জানতে চান, সে সংক্রান্ত প্রশ্নগুলো করতে হবে। যেমন, আপনি লিখলেন- ‘ছবি সম্পর্কে আমাকে আরও বলুন’ বা ‘এটি কোথায় তোলা হয়েছিল?’ যত ভালো প্রশ্ন দেবেন, তত ভালো উত্তর পাবেন।


বিবার্তা/লিমন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com