শীতে টাখনুর নিচে কাপড় পরা যাবে কী না?
প্রকাশ : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৪৪
শীতে টাখনুর নিচে কাপড় পরা যাবে কী না?
ধর্ম ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

শীত মানুষকে কাবু করে ফেলে। শীতে অনেক সময় মোটা কাপড় পরতে হয়। প্রচণ্ড শীত পড়লে আবার পায়ে শীত লাগে। এজন্য অনেকে জানতে চান শীতের কারণে টাখনুর নিচে কাপড় পরা যাবে কী না?


মানুষ যে-সব কাজকে লঘু মনে করে অথচ আল্লাহর নিকটে সেগুলো খুবই গুরুতর, তন্মধ্যে টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করা একটি। অনেকের কাপড় এত লম্বা যে, তা মাটি স্পর্শ করে। টাখনুর নিচে এভাবে কাপড় ঝুলিয়ে পরা হারাম।


রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘তিন প্রকার লোকের সাথে আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না। তাদেরকে পবিত্র করবেন না। বরং তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি। তারা হলো-টাখনুর নিচে কাপড় (অন্য বর্ণনায় লুঙ্গি) পরিধানকারী, খোঁটাদানকারী (অন্য বর্ণনায় এসেছে, যে খোঁটা না দিয়ে কোনো কিছু দান করে না) ও মিথ্যা কসমের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয়কারী।’ (মুসলিম ১০৬, মিশকাত ২৭৯৫)


অনেকে বলে আমি টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করি অহংকার বশত না, এমনিতেই। রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘টাখনুর নিচে কাপড়ের যেটুকু থাকবে তা জাহান্নামে যাবে।’ (নাসাঈ ৫৩৩০, মুসনাদে আহমদ ২০১৮০)


অন্য হাদিসে রসুল সা. বলেন, ‘যে ব্যক্তি অহংকার বশে তার লুঙ্গি মাটির সাথে টেনে নিয়ে বেড়াবে, কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তাআলা তার প্রতি দৃষ্টি দিবেন না।’ (বুখারি ৩৬৬৫, মুসলিম, মিশকাত ৪৩১১)


স্ত্রীলোকদের জন্য পায়ের সতরের সুবিধার্থে এক বিঘত কিংবা এক হাত পরিমাণ ঝুলিয়ে দেবার অবকাশ আছে, কেননা বাতাস বা অন্য কোনো কারণে সতর খোলার ভয় থাকলে অতিরিক্ত কাপড়ে উড়ে যাওয়া রোধ হবে। তবে সীমালঙ্ঘন করা তাদের জন্যও বৈধ হবে না। যেমন বিয়ে-শাদিতে পরিহিত বস্ত্রের ক্ষেত্রে মেয়েদের সীমালঙ্ঘন করতে দেখা যায়। সেগুলো পরিমিত পরিমাণ থেকে কয়েক বিঘত এমনকি কয়েক মিটার লম্বা হয়। অনেক সময় পেছন থেকে তা বয়ে নিয়ে যেতেও দেখা যায়।


শীতের কারণে টাখনুর নিচে কাপড় পরা যাবে?


না, শীতের কারণে টাখনুর নিচে কাপড় পরা যাবে না। কারণ এর সমাধান জায়েজ পদ্ধতিতে করা সম্ভব। সেটি হল, মোটা মোজা বা চামড়ার মোজা পরিধান করা। যেহেতু ঠান্ডা থেকে বাঁচার বিকল্প ব্যবস্থা আছে, সেখানে নিষিদ্ধ কাজ করার কোনও প্রয়োজন নেই।


তবে যদি কোথাও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকে, আর ঠান্ডার কারণে পা জমে যাওয়া বা মারাত্মক অসুস্থ হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে, তাহলে টাখনুর নিচে জামা পরিধান জায়েজ হবে। তীব্র প্রয়োজন নিষিদ্ধ বস্তু হালাল করে দেয় মূলনীতির ভিত্তিতে।


যখনি তীব্র প্রয়োজনটি দূরিভূত হয়ে যাবে, তখনি আবার তা হারাম হওয়াতে ফিরে আসবে। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত। রসুল সা. বলেন, টাখনুর নিচের যে অংশ পায়জামা বা লুঙ্গি দ্বারা ঢাকা থাকে তা জাহান্নামে যাবে। (বুখারি ৫৭৮৭, ৫৪৫০, সুনানে নাসায়ি ৫৩৩১)


তবে যে ব্যক্তি অপারগ হয়ে পড়ে বিদ্রোহীমনস্কতা ও সীমালঙ্ঘণের মানসিকতা ব্যতীত, তাহলে তার উপর কোন গোনাহ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা ক্ষমাশীল ও দয়ালু। (সুরা বাকারা ১৭৩) তবে প্রচণ্ড প্রয়োজন নিষিদ্ধ বস্তুকে হালাল করে দেয়। (শরহু কাওয়ায়িদিল ফিক্বহিয়্যাহ লিজযারক্বা, কায়দা ২০) যদি এমন পরিস্থিতি চলে আসে, মৌজা পরা সম্ভব নয়। অন্য কোনোভাবে শীত নিবারণ করতে না পারলে তখন টাখনুর নিচে পরতে পারবে। বিকল্প ব্যবস্থা করতে পারলে কোনোভাবেই টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান জায়েজ নয়।


বিবার্তা/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com