শিরোনাম
নির্বাচন ও ডামি ভোটাভুটি নিয়ে এবি পার্টির সর্বদলীয় আলোচনা সভা
প্রকাশ : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩, ২০:১০
নির্বাচন ও ডামি ভোটাভুটি নিয়ে এবি পার্টির সর্বদলীয় আলোচনা সভা
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

"দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনঃ বর্জন, অংশগ্রহণ ও ডামি ভোটাভুটি" শীর্ষক নির্দেশনামূলক আলোচনা সভার আয়োজন করে আমার বাংলাদেশ পার্টি ‘এবি পার্টি’। ৩০ ডিসেম্বর, শনিবার বিকেল ৩ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত সর্বদলীয় আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন এবি পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী। দলের সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু'র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর ড. আ.ক.ম. ওয়ারেসুল করিম।


আলোচনা সভায় রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের, গণফোরাম সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, খ্যাতিমান আলোকচিত্রি ও মানবাধিকার সংগঠক ড. শহীদুল আলম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, গণ অধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি ড. রেজা কিবরিয়া, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন, এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার , অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম ও বিএম নাজমুল হক, নাগরিক ঐক্যের সেক্রেটারি শহীদুল্লাহ কায়সার, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের দিদারুল ভূঁইয়া, এনডিএম নেতা লায়ন নুরুজ্জামান হীরা, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ ও ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমদ ভূঁইয়া।


সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিগত ১৪ সালে একটি ভোটারবিহীন নির্বাচন হয়েছে, ১৮ সালে হয়েছে রাতের ভোটের নির্বাচন। আগামীতেও একই কায়দায় আরেকটি প্রহসনের নির্বাচন করার উৎসব চলছে।


মূল প্রবন্ধে ড. ওয়ারেসুল করিম বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন বিশ্লেষণ করলে পিলে চমকানো তথ্য আপনারা পাবেন। এই নির্বাচনে আওয়ামী জোট কোথাও কোথাও ৮২ শতাংশ ভোট পেয়েছে অপর পক্ষে বিরোধী বিএনপি জোট ১১৭৯ কেন্দ্রে কোন ভোটই পায়নি। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায় ২১৩টি কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে, ১৮৭টি কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৯৯%, ২০২৩টি কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৯৫ থেকে ১০০ শতাংশ। এই কেন্দ্র গুলোতে আওয়ামীলীগ পেয়েছে ৮৯ শতাংশ ভোট আর বিএনপি জোট পেয়েছে ৯ শতাংশ ভোট। এতেই প্রতীয়মান হয় কতটা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট আওয়ামী নির্বাচন কমিশন করেছে।


বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান গবেষণা করে এই তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করার জন্য গবেষক ও এবি পার্টিকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, জনগণের উপর গত পনেরো বছর যে সীমাহীন নির্যাতন চালিয়েছে সরকার তাতে ক্ষমতায় না থাকলে কি পরিণতি হবে সেই ভয়ও তাদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের ভয় আর লোভ থেকে যে নির্বাচনী প্রহসনের আয়োজন তাতে জনগণের কোন অংশগ্রহণ নাই । এই ভোটে জনগণ অংশ নিবেনা ইনশাআল্লাহ।


মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সরকারকে সকল সহযোগিতা বন্ধ করতে হবে। সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চালাতে হবে। আন্দোলন সংগ্রামে জোরালো ভূমিকা রাখা ও এরকম সর্বদলীয় অনুষ্ঠানের জন্য তিনি এবি পার্টিকে ধন্যবাদ জানান।


গণফোরাম নেতা অ্যাডভোকে সুব্রত চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে কোন নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারেনা। যেখানে বিরোধীদল কোন কর্মসূচি পালন করতে পারেনা, পোস্টার লাগাতে পারেনা সেখানে নির্বাচন কীভাবে সুষ্ঠু হবে। এই দেশ স্বাধীনভাবে আর চলছেনা, বিগত ২০১৪ সাল থেকে দেশের নির্বাচন পরিচালিত হচ্ছে ভারতের পরিকল্পনায়। আর কোন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হতে দেয়া হবেনা। জনগণ এই সমস্ত সার্কাসে অংশ নিবেনা।


খ্যাতিমান মানবাধিকার সংগঠক ড. শহীদুল আলম বলেন, আজ যারা আওয়ামী লীগের পদলেহন করছে না তাদেরকেই এখন রাজাকার হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এই অবস্থা আর চলতে পারেনা। এবি পার্টিকে ধন্যবাদ এই উদ্যোগের জন্য। এই উদ্যোগ আমাদের আরও আগে নেয়া দরকার ছিলো।


খেলাফত মজলিশের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের বলেন, আজ বিরোধীদল গুলোর কর্মসূচিতে হামলা করে, মামলা দিয়ে, ভয়ভীতি প্রদর্শন করে একতরফা নির্বাচন করে শুধু কমিশনকে দিয়ে ফলাফল ঘোষণা করার অপেক্ষায় রয়েছে। সকল ভয়ভীতি উপেক্ষা করে তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পতনে বাধ্য করতে হবে।


কমরেড সাইফুল হক বলেন, ৭ই জানুয়ারি নির্বাচন নির্বাচন খেলার আয়োজন করা হয়েছে। মানুষ ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচন করতে চায়, খেলা দেখতে মানুষ ভোট কেন্দ্রে যাবেনা।


ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, ৭ই জানুয়ারি নির্বাচনের নামে যে নাটক গণভবন থেকে চালানো হচ্ছে তা দুর্ভাগ্যজনক। কিছু দালাল ঠিক করে নির্বাচনের নামে প্রহসন করা হচ্ছে। ৭ তারিখের এই নির্বাচন আওয়ামীলীগের মরণযাত্রা হয়ে দাঁড়াবে।


এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, ৭ জানুয়ারীর নির্বাচন ভোট ডাকাতির, হালুয়া রুটির ভাগাভাগির নির্বাচন। এই নির্বাচন যদি হয় তাহলে দেশ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে যা নিশ্চিত দুর্ভিক্ষের কবলে ফেলবে জনগণকে।


রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম বলেন ২০১৮ সালের যে নির্বাচন যেটা গোটা পৃথিবীতে স্বীকৃত যে ভোট সেটা রাতের ভোটই ছিলো, এটা প্রমাণ করতে কোন ডকুমেন্টস দরকার নাই।


বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের মাওলানা জালাল উদ্দিন বলেন, এই নির্বাচনে যারা অংশ নিয়েছে সবাই নৌকা চায়। তার মানে সবাই নিশ্চিত নৌকা মানেই নির্বাচিত। দেশে আজ দ্রব্যমূল্য নিয়ে হাহাকার চলছে, অথচ সরকার হাজার কোটি টাকা খরচ করে নির্বাচনের নামে তামাশা শুরু করেছে।


আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, বাংলাদেশে রাতের ভোট আর জনগণ চায়না। রাজনীতিবিদদের আজ সিদ্ধান্ত নিতে হবে দেশকি রাজনীতিবিদরা চালাবেন নাকি এই সিন্ডিকেট দ্বারাই দেশ চলবে।


সভাপতির বক্তব্যে এএফএম সোলায়মান চৌধুরী বলেন, দীর্ঘ নির্বাচনি অভিজ্ঞতা থেকে আমরা দেখেছি স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে কোন দলীয় সরকারের অধীনে আয়োজিত নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি।


আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, এবি পার্টির প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, যুব-পার্টির আহ্বায়ক এবিএম খালিদ হাসান, অর্থ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম এফসিএ, সিনিয়র সহকারী সদস্যসচিব আব্দুল বাসেত মারজান, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসেইন, সহকারী সদস্যসচিব এম আমজাদ খান, ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি, ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ লোকমান, শাহ আব্দুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আলমগীর হোসেন সহ এবি পার্টির কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।


বিবার্তা/এমজে

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com