`এই পা রুকনের না, এমপি নবী নেওয়াজের পা’
প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:২৯
`এই পা রুকনের না, এমপি নবী নেওয়াজের পা’
সোহেল আহমদ
প্রিন্ট অ-অ+

ঝিনাইদহ মহেশপুর উপজেলার গাড়াবেড়ে গ্রামের বাসিন্দা রুকন আলী। ছয় বছর আগে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনার শিকার হন। সেই দুর্ঘটনায় তার প্যাটেলা (হাঁটুর বাটি) উড়ে গিয়েছিল। তিনদিন পর সেটি পাওয়া যায়। এরমধ্যে চিকিৎসার জন্য যশোর যান। কিন্তু খুঁজে পাওয়া সেই প্যাটেলা আর কাজে লাগেনি। হাসপাতালে ছয়দিন থাকার পর ডাক্তার জানান, পা সোজা হয়ে থাকবে, ভাঁজ (ফোল্ডিং) করা যাবে না। ঠিক হয় কি-না, উন্নত চিকিৎসা নিয়ে দেখতে পারেন। পরে রাজধানী ঢাকার একটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে এখন অনেকটাই সুস্থ রুকন আলী।



ঢাকায় এসে ব্যয়বহুল উন্নত চিকিৎসা নেয়া রুকন আলীর জন্য অতোটা সহজ ছিল না। অন্যদিকে ঢাকার চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে তেমন কোন ধারণাও ছিল না রুকনের পরিবারের। তারপরও ঢাকায় এসে কিভাবে চিকিৎসা নিলেন রুকন আলী?



জানতে চাইলে রুকন আলী বিবার্তাকে বলেন, ২০১৭ সালের ১৩ জানুয়ারি আমার এক্সিডেন্ট হয়। যশোরের ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার কথা বললে আমি ঢাকায় যাওয়ার চিন্তা করি। কিন্তু ঢাকার তেমন কিছু আমার জানা ছিল না, অত টাকাও ছিল না। আমি এর আগে কখনও ঢাকায় যাইওনি। চিকিৎসার জন্য এলাকার কেউ ঢাকায় গেলে এমপি নবী নেওয়াজ সহযোগিতা করেন- এমন খবর পেয়ে মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে কল দেই। ওনাকে বলি, পায়ের চিকিৎসার জন্য ঢাকা আসতে চাই। কিন্তু এর আগে কোনোদিন ঢাকায় আসিনি। কি করব? উনি বললেন, সমস্যা নেই আয়, আমি পঙ্গু হাসপাতালের সামনে দাঁড়াব।


ঢাকায় এসে হাসপাতালে ভর্তির পর উনি ডাইরেক্টর স্যারের সাথে কথা বলল। ডাইরেক্টরকে পা দেখিয়ে তিনি বললেন- ‘এই পা রুকনের পা নয়, এমপি নবী নেওয়াজের পা। সেইভাবে চিকিৎসা করে দেন।’


রুকন বলেন, উনি (ডাইরেক্টর) যত্ন নিয়ে পা দেখলেন। পরে আমাকে জানানো হলো দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা করালে ভালো হবে। দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য অনেক টাকা দরকার। এই খবর এমপি নবী নেওয়াজকে জানালে উনি বললেন- দাঁড়াও, আমি আরেকটু চেষ্টা করি। এর মাস তিনেক পর পঙ্গু হাসপাতালে আমার অপারেশনটা হয়। ১২-১৩ লাখ টাকার অপারেশন আড়াই-তিন লাখ টাকায় হয়েছে।


তিনি জানান, সম্প্রতি পঙ্গু হাসপাতালের পরিচালক ডা. গনি মোল্লা ঢাকা ট্রমা সেন্টারে পায়ে আবারও একটি অপারেশন করেছেন। ৫ লাখ টাকার অপারেশন ২ লাখ ১৫ হাজার টাকায় হয়েছে। এখন আমার পা অনেকটা ভালো। সাবেক এমপি নবী নেওয়াজ সাহেব থাকায় অপারেশনটা করাতে পেরেছি। তিনি বলেন, ঝিনাইদহ জেলার কেউ ঢাকায় চিকিৎসার জন্য গেলে ওনাকে কল দেয়। অনেকবার কল দিয়েছি, উনি কোনোদিনও বিরক্ত হননি।



২০১৮ সালের স্মৃতিচারণ করে মহেশপুরের যাদবপুর গ্রামের নাসির উদ্দিন বিবার্তাকে বলেন, আমার মাথায় ৫টা টিউমার হয়েছিল। ডাক্তার দেখানোর জন্য কোথায় যাব, কি করব- বুঝতে পারছিলাম না। তখন আমি এমপি সাহেবের সাথে যোগাযোগ করি। তিনি ঢাকায় নিউরো সাইন্সের ডাইরেক্টরের সাথে আমাকে নিয়ে দেখা করে। পরে কি করতে হবে ডাইরেক্টর শুধু বলে দিয়েছেন। এরপর সে (নবী নেওয়াজ) নিজের টাকা দিয়ে এমআরআইসহ সব টেস্ট করিয়েছে। শেষে আমার অপারেশনও করিয়েছে।


তিনি বলেন, তার বাসায় রাখছে। সে আমাকে খাওয়াইছে, তার গাড়িতেও আমাকে চড়াইছে। ঢাকা শহরের মতো জায়গায় অহরহ তিনি এগুলো করে। শ’ নয়, কয়েক হাজার পরিবারকে উপকার করেছে। শুধু শুনবে যে আপনি অসুস্থ। জীবনটা বাজি রেখে ছুটে আসে।


নাসির উদ্দিন বলেন, আমি এখন ভালো আছি। অপারেশনের পর উনি প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ১ লাখ টাকা এনে আমাকে দিয়েছে। টাকা এনে দেয়ার জন্য আমি বলিও নাই। উনি নিজে সেই চেক আমার বাসায় পৌঁছে দিয়েছে। এরকম মানুষ উনি।



শুধু রুকন আলী আর নাসির উদ্দিন নয়; অচেনা-অজানা রাজধানী ঢাকায় আসা ঝিনাইদহ জেলার এমন হাজারো মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াস সদস্য ও সাবেক এমপি অধ্যক্ষ নবী নেওয়াজ। ঝিনাইদহ থেকে ঢাকায় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি থেকে শুরু করে ডাক্তার দেখানো, পরীক্ষা-অপারেশন করানো তার নিত্যদিনের কাজের অংশ। এছাড়া প্রয়োজনানুযায়ী আর্থিক সহযোগিতা করেও পাশে থাকেন মানুষের। আর এজন্য তিনি এলাকায় মানবিক রাজনীতিবিদ হিসেবে সমাধিক পরিচিত।



স্থানীয়রা জানান, চিকিৎসার জন্য কেউ ঢাকায় যাচ্ছে এমন খবর পেলে পরিবার-পরিজনের চিন্তা বাদ দিয়ে ভোর কিংবা মধ্যরাত যেকোন সময়েই হাসপাতালে ছুটে আসেন তিনি। এছাড়া এলাকায় গেলে নিয়ম করে অসুস্থদের দেখতে যান। রাজনীতিবিদরা মানুষের পাশে দাঁড়ায়। তবে নবী নেওয়াজ অন্য সবার চেয়ে একটু ব্যতিক্রম। এলাকার মানুষের জন্য তার ভেতরে অন্যরকম মায়া আছে।



জানতে চাইলে কোটচাঁদপুর উপজেলার মিকাইল মণ্ডল বিবার্তাকে বলেন, আমার আত্মীয়-স্বজন যারা আছে কেউ ঢাকায় চিকিৎসার জন্য গেলে উনিই সব দেখাশোনা করে। উনাকে নক করলেই উনি ছুটে আসে। ভর্তি করার ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সবই উনি করে দেয়।


একই উপজেলার ইয়াদুল বিবার্তাকে বলেন, আমি ঢাকায় ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট আর ঢাকা মেডিকেল ডাক্তারের কাছে দুইজন রোগী নিয়ে গিয়েছিলাম। আমার চাচাতো বোন আর ভাগ্নের মেয়ে। সেই সময়ে নবী নেওয়াজ ভাই আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে সমস্যা সমাধান করেছে। সকাল ৯ থেকে বিকাল ৩টা সময় দিয়েছে, এতোটা আমরা আশাও করিনি।


মহেশপুর উপজেলার আরিফ বিবার্তাকে বলেন, তিন চার মাস আগে মোটর সাইকেলে এক্সিডেন্ট করে আমার ভাইয়ের পা ভেঙে গিয়েছিল। পরে পা কেটে ফেলতে হয়েছে। গিয়ে দেখি উনি চলে আসছে। দৌড়াদৌড়ি করছে। উনি সাধারণ মানুষকে এভাবেই গুরুত্ব দিয়ে পাশে থাকে।


একই উপজেলার গাড়াপোতা এলাকার বাসিন্দা নুরুল হক বিবার্তাকে বলেন, নবী নেওয়াজ গরিব মানুষের জন্য যথেষ্ট করে। গরিবের পাশে থাকে। আমার দেখাশোনাও করেছে। ঢাকায় আমার হার্ট অপারেশন হয়েছে। উনি ডাক্তারদের সাথে কথা বলেছে। সরকারি হাসপাতালে এখন রোগী ভর্তি হয়ে সেই রোগী যদি মারাও যায়- তারপরও অপারেশন হয় না। আমি খুব সাধারণ মানুষ। স্যার পাশে থাকায় আমার অপারেশনটা দ্রুত হয়েছে।



উজলপুরের বাসিন্দা রাজু আহমেদ রাজ বিবার্তাকে বলেন, আম্মু অসুস্থ ছিল। এক মাস আগেও আমি সাবেক এমপি নবী নেওয়াজের রেফারেন্স মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতালে ছিলাম। উনিই সব করে দিয়েছেন।


মহেশপুর উপজেলার স্বরূপপুর ইউনিয়নের পেপুলবাড়িয়া গ্রামের ওহাব মণ্ডলের ছেলে সোহাগ। কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি ছিলেন। সুস্থ না হওয়ায় চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আসেন। অচেনা ঢাকায় এসে চরম অসহায় অবস্থায় পড়ে যান সোহাগ। পরে শ্যামলীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে রাতে উপস্থিত হয়ে সোহাগকে ভর্তির ব্যবস্থা করে দেন নবী নেওয়াজ।


কেবলমাত্র অসুস্থ রোগী ঢাকায় আসলেই দেখভাল করা নয়- রোগীরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলে নিয়ম করে বাড়িতেও দেখতে যান নবী নেওয়াজ। গত বছরের অক্টোবর মাসে মোমেনাকে মুমূর্ষু অবস্থায় সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন তিনি। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হয়। অবস্থা আরো অবনতি হলে আইসিইউতে নেয়া হয় মোমেনাকে। যখন ডাক্তার জানালেন রোগটি জটিল জিবিএস। তারপর আবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আইসিইউতে ভর্তির ব্যবস্থা করান তিনি।


এদিকে মোমেনার বাড়ি থেকে বারবার ফোন যাচ্ছে রোগীকে রিলিজ করিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়ার জন্য। কারণ তাদের পক্ষে একদিনের আইসিইউ খরচও দেয়া সম্ভব নয়।


জানতে চাইলে অধ্যক্ষ নবী নেওয়াজ বিবার্তাকে বলেন, তখন অনেকেই বলেছে জিবিএস রোগ যার হয়, তার বেঁচে থাকা না থাকা সমান কথা। টাকা সব পানিতে যাবে। এসময় মোমেনার সন্তান ইয়াকুব আমার হাত ধরে কাকুতি মিনতি করে বলে- ‘চাচা মাকে বাজাত পারবেন না?’ নিজেকে ভীষণ অসহায় মনে হলো। আমি শক্ত হয়ে এক প্রকারের ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্নরকম তৎপরতা চালাতে শুরু করলাম। দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে মোমেনা বাড়ি ফিরে। যাওয়ার আগে আমাকে শর্ত দিলো, মহেশপুর ঢোকার সাথে সাথে যাতে আমি তাকে দেখে যাই।


তিনি বলেন, কিছুদিন আগে মহেশপুর ঢুকেই মোমেনাকে দেখতে গিয়ে তার মুখের হাসি এবং ৩ ছেলের উচ্ছাস দেখে বুঝতে বাকি থাকল না যে, আমার পরিশ্রম সফল হয়েছে। অসুস্থ মোমেনার হাসি আমাকে সত্যিই মুগ্ধ করেছে। মনে হলো আমি সফল হয়েছি।


এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, সাবেক এমপি নবী নেওয়াজ ঢাকায় চিকিৎসা নিতে আসা ঝিনাইদহ জেলার রোগীদের নিজের সাধ্য অনুযায়ী সহযোগিতার চেষ্টা করেন। আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নবী নেওয়াজের ফেসবুক আইডি ঘুরেও তার প্রমাণ মিলল। ফেসবুকে তার বেশিরভাগ পোস্টই দেখা গেল ঢাকায় আসা এলাকার রোগীদের নিয়ে। এসব রোগীদের দেখভালের জন্য ভোর থেকে মধ্য রাত যেকোনো সময়ে হাসপাতালে হাজির হন তিনি।


নবী নেওয়াজের একটি ফেসবুক পোস্ট ঠিক এরকম- ‘আব্দুল হালিম, পিতা- নান্নু মিয়া, যশোর এম এম কলেজের (ইংরেজি ৩য় বর্ষের) ছাত্র। বাবা দরিদ্র কৃষক যে একটি পয়সাও খরচ বহন করার তৌফিক ছিল না। টিউশনি করেই লেখা-পড়া, থাকা-খাওয়ার সকল ব্যয় ভার বহন করছে দীর্ঘদিন।


গত শনিবারে ফারুক গ্রুপে লিখলে বিষয়টি আমার নজরে আসে। আব্দুল হালিমের ‘ব্রেইন টিউমার’ নিশ্চিত করেছে যশোরের ডাক্তার। তাকে দ্রুত ঢাকা নিয়ে অপারেশন করতে বলে। আর্থিক সংকটের কথা বলে সকলকে সাহায্যের হাত বাড়াতে বলে ফারুক। শাহীনের সাথে কথা হওয়ার পর বললাম নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে আনার জন্য। গতকাল ভর্তির সকল প্রক্রিয়া শেষ করে আজ সকালেও দুশ্চিন্তায় ছিলাম।


আলহামদুলিল্লাহ, হালিম নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি হলো। যে কোন সময় অপারেশন এর সময় পাওয়া যাবে। শাহীন ও ইদ্রিসকে অসংখ্য ধন্যবাদ, সাথে থেকে সহযোগিতা করার জন্য। সকলে হালিমকে দোয়া করবেন এবং সহযোগিতার হাতটি বাড়িয়ে দিবেন। ধন্যবাদ।’


এর কিছুদিন পর আব্দুল হালিমের আপডেট জানিয়েও পোস্ট করেন তিনি। গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর আব্দুল হালিমকে দেখতে গিয়ে তিনি ফেসবুকে লিখেন, কয়েকদিন আগেই নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলাম ব্রেইন টিউমারের রোগী হালিমকে। যে কোন সময় অপারেশন তারিখ নির্ধারণ হবে।


সহযোগিতার জন্যই কাগজপত্র প্রস্তুত করতে হচ্ছে। শেষ করে বাংলাদেশ স্পাইন এন্ড অর্থপেডিকস হাসপাতালে গিয়েছিলাম আজমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা হাশেমকে দেখতে। তাদের দু’জনের জন্যে সকলে দোয়া করবেন।


জানতে চাইলে সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মো. নবী নেওয়াজ বিবার্তাকে বলেন, আমি জনগণের প্রতিনিধি ছিলাম। জনগণের বিপদ-আপদে তাদের আমি দেখব- এটা আমার দায়িত্ব। এলাকার রোগীরা উপজেলা হাসপাতালে গেলে যশোর পাঠিয়ে দেয়, ওখান থেকে আবার খুলনায় পাঠিয়ে দেয়। কখনো কখনো ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়। আমার কাছে যেসব রোগীরা আসে, তারা সবাই অসহায়। ঢাকার হাসপাতালগুলোতে অনেক ধরণের ঝামেলা থাকে। আমি জানি, ওখানে না থাকলে রোগী ভর্তি করতে কতটা ঝামেলা পোহাতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় সামান্য টাকার জন্য রিলিজ পাচ্ছে না। আমি গিয়ে বললে ছাড় দিয়ে রিলিজ করে দেয়।


তিনি বলেন, গ্রামের অসহায় কেউ যখন রোগী হয়ে ঢাকায় আসে, তখন তার মধ্যে অসহায়ত্ব দেখি। ওই পরিবারের সকল সদস্য কিন্তু ঢাকার দিকে উন্মুখ হয়ে থাকে। পরিবারের সদস্য ও পরিচিতরা কল দিয়ে যখন বলে- ঢাকায় আপনি ছাড়া আমাদের কেউ নাই। মানুষ আমাকে যখন এমন করে বলে, তখন তো আমি বসে থাকতে পারি না।


নবী নেওয়াজ বলেন, শুধু যে তাদের উপকার করব তা না; মানসিক আত্মতৃপ্তির একটা ব্যাপার আছে। মৃত্যু পথযাত্রী যারা বেঁচে থাকার আশায় হাসপাতালে কাতরায়, তাদেরকে সহায়তা আসতে পারলে আত্মতৃপ্তি পাই। সবচেয়ে বড় কথা হলো, যারা একেবারে বিপদগ্রস্ত মানুষ তাদের সহযোগিতা করতে পারলে আমি আত্মতৃপ্তি পাই।


কেটাচাঁদপুরের রিপন বিবার্তাকে বলেন, গরিব মানুষের জন্য এরকম আর কেউ করে না। আমার আত্মীয়স্বজন ঢাকায় গেছে। উনাক শুধু এটা বলা দরকার, একজন গেছে আপনি একটু দেখেন। উনি নিজ থেকেই ডাক্তার দেখাবে, সিট করে দিবে এমনকি আর্থিক সহযোগিতাও করবে।


তিনি বলেন, উনি যেভাবে মানুষের জন্য রাতদিন পরিশ্রম করে, এরকম আর কেউ করে না।


মহেশপুর উপজেলার কুঠিপাড়া গ্রামের পারভেজ মোশারফ বিবার্তাকে বলেন, গত বছরের ২২ আগস্ট আমার মেজো ভাইয়ের ছেলে বাইক এক্সিডেন্ট করে। তাকে প্রাথমিকভাবে যশোর নিয়ে গিয়েছিলাম। ওইখান থেকে আমাদেরকে ঢাকা মেডিকেলে ট্রান্সফার করে দেয়। আমরা অনেক পেরেশানির মধে পড়ে গিয়েছিলাম। আমার এলাকার সাবেক এমপি নবী নেওয়াজ, উনার সাথে থাকে রাজু ভাই। উনাকে কল দিয়েছিলাম। পরে সকাল দশটায় স্যার নিজে হাসপাতালে গিয়ে আমাকে সহযোগিতা করেছে। এমন কিছু কাজ করেছে, আমার পক্ষে করা অসম্ভব ছিল।


তিনি বলেন, এই পর্যন্ত আমি চার মাস হাসপাতালে ছিলাম। উনার (নবী নেওয়াজ) রেফারেন্সে কয়েকদিন আগেও ডাক্তারের সাথে কথা বলে আসলাম। তারপরে আমার নানু অসুস্থ ছিল, পিজিতে। সেখানেও উনার সহযোগিতা পেয়েছি।


রাজনীতিবিদরা মানুষের পাশে দাঁড়ায় কিন্তু ওনার ভেতর অন্যরকম একটা মায়া আছে। না হলে, মানুষের জন্য এতটা কেউ করতে পারে!


বিবার্তা/সোহেল/রোমেল/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com