শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরী ও প্রয়াত অভিনেত্রী লিলি চৌধুরীর স্মৃতি রক্ষার্থে গঠিত ‘লিলি মুনীর স্মৃতি রক্ষা ট্রাস্ট’ নাটকপাঠ ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নাটমণ্ডল মিলনায়তনে আফ্রিকার নোবেলজয়ী নাট্যকার ওলে সোয়িঙ্কার নাটক ‘স্ট্রং লিড’ এর বাংলা অনুবাদ রক্তবীজ নাটকটি নিয়ে আলোচনা করা হয়। সেই সঙ্গে নাটকটি পাঠ করার আয়োজন করা হয়। নাটকটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন খায়রুল হাবিব।
আলোচনা সভায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইন্সটিটিউটের সভাপতি নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার। আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ ও নাট্যকলার অধ্যাপক সুদীপ চক্রবর্তী। আলোচনা শেষে অনুবাদকের সঙ্গে নাটক থেকে পাঠ করেন ত্রপা মজুমদার।
রামেন্দু মজুমদার বলেন, সোয়িঙ্কার সঙ্গে ভেনেজুয়েলায় দেখা হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল ১৯৯৫ সালে। সেখানে তিনি 'দি ফল অব ইউটোপিয়ান এন্ড দ্য নিউ মিলিউনিয়াম' শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন। তিনি শুধুমাত্র নাটক সাহিত্য ইত্যাদি লিখেছেন তা নয় তিনি একজন একটিভিস্টও ছিলেন। তিনি আফ্রিকার একনায়কতন্ত্রের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তার কারণে তিনি বায়াপ্রা বিদ্রোহীদের সঙ্গে যখন নাইজেরিয়ায় গৃহযুদ্ধ হচ্ছিল; নাইজেরিয়া সরকার মনে করছিল তার সঙ্গে বায়াপ্রার একটি আতাত সম্পর্ক আছে। এরই প্রেক্ষাপটে তাকে বাইশ মাস কারারুদ্ধ করে রাখে নাইজেরিয়া সরকার।
তিনি বলেন, নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পরে তিনি যে বক্তৃতা দিয়েছিলেন সেটি উৎসর্গ করেছিলেন নেলসন মেন্ডেলাকে। তিনি আইটি আইয়ের সভাপতি ছিলেন ১৯৮৫-৮৭ সাল পর্যন্ত। এটি আমাদের অত্যন্ত সৌভাগ্যের বিষয়।
তিনি আরও বলেম, তিনি রক্তবীজ নাটকের উপর আলোকপাত করে বলেন, এখানে বৈষম্য আত্মপরিচয়ের সংকট এবং নির্বাসন ইত্যাদির কথা আছে। সমাজের কল্যাণের জন্য একটি জনউৎসর্গের উল্লেখ আছে। অনুবাদের ক্ষেত্র বিশ্লেষনপূর্বক তিনি বলেন, যে-কেউ নিজের ইচ্ছেমতো অনুবাদ করতে পারে। কিন্তু মঞ্চস্থ- করার ক্ষেত্রে যেটি আমাদের সমাজের সাথে সম্পৃক্ত হয় এমন নাটক আমরা বেছে নিয়ে থাকি। এই নাটকটির প্রেক্ষাপট এবং অনুবাদ দুটি কঠিন। তার চেয়ে কঠিন হচ্ছে এর ভূমিকাংশ। ধৈর্যধারণ করে নিরলসভাবে এই কঠিন কাজটি সহজ করার জন্য তিনি অনুবাদককে ধন্যবাদ জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. মুহাম্মদ বলেন, সোয়িঙ্কার এই নাটকটি সাধারণত নাইজেরিয়ার গ্রামীণ সংস্কৃতি নির্ভর একটি রচনা। একইসাথে তিনি চিনের তিব্বত অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের সমাজ সংস্কৃতির সাথে তুলনা করেন এই নাটকটিকে। কাজেই তিনি নাটকের অনুবাদককে নাইজেরিয়া ভ্রমণ করার জন্য পরামর্শ দেন; তাহলে অনুবাদক তার নাটকটি অনুবাদের জন্য আরও সহজ উপায় খুঁজে পেতেন যদি ঐ দেশের গ্রামীণ সমাজ সরেজমিনে দেখতেন। তিনি অনুবাদককে ধন্যবাদ জানান এত কঠিন একটি বিষয়ের উপর তার অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে সফলতা আনার জন্য এবং বাংলায় এই বিষয়টিকে ফুটিয়ে তোলার জন্য।
বিবার্তা/সাইদুল/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]