দেশে কোথাও কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের আগে প্রশাসনের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। তবে সংস্কৃতির মাঝে যেন ‘অপসংস্কৃতি’র অনুপ্রবেশ না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকার থাকার কথাও বলেছেন তিনি।
জঙ্গিবাদ রুখে দিতে দেশের ৪৯২টি উপজেলাতেই সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বাড়ানোর তাগিদ দেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের সেশনের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন প্রতিমন্ত্রী।
এবারের শীতে দেশের অনেক এলাকাতেই যাত্রাপালা আয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের অসহযোগিতার কথা শোনা গেছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে খালিদ বলেন, “সরকার থেকে কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা নেই। শুধু যাত্রা কেন, কোন সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান আয়োজনেই আগে থেকে প্রশাসনের অনুমতির দরকার নেই। আমরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের এ বিষয়ে চিঠিও পাঠছিয়েছি।”
দিনের শুরুর ভাগের ওই সেশনে জেলা প্রশাসকেরা যে সাতটি প্রশ্ন উত্থাপন করেন, যার পাঁচটিই সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কেন্দ্রিক ছিল বলে জানান খালিদ।
মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কাছ থেকে আসা প্রশ্ন নিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের প্রত্নতত্ত্ব জাদুঘর নিয়ে প্রশ্ন এসেছে। শিল্প-সাহিত্য-সংকৃতি-প্রত্নতত্ত্ব-কপিরাইট-বাংলা একাডেমি সবকিছু নিয়েই আলোচনা হয়েছে। সেগুলো আমাদের প্রক্রিয়ার মধ্যে চলমান আছে।
“এসব বিষয়ের মধ্যে একটি ছাড়া সব ব্যাপারেই আমরা প্রক্রিয়া শেষ করেছি। বাকি কাজ যেগুলো আছে তার সবই প্রক্রিয়াধীন। তারা খুশি আছে, আমি একটু অখুশি, কারণ সব কাজ শেষ করতে পারছি না।“
তিনি বলেন, “জঙ্গিবাদ রুখে দিতে সাংস্কৃতিক চর্চার কোনো বিকল্প নেই। একসময় আমাদের জারি-সারি-বাউল-যাত্রা সবই চলত। সেই জায়গাটিতেই আমরা ফিরে যেতে চাই, যেন সংস্কৃতি দিয়ে আমরা জঙ্গিবাদকে রুখে দিতে পারি।“
শিল্পকলা একাডেমি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, “আমাদের যে সাংস্কৃতিক সংস্থাগুলো আছে তাদেরকে আমরা উদ্বুদ্ধ করি এবং প্রায় ১৪০০ সংগঠনকে বাৎসরিক অনুদান দিই। আবেদনের ভিত্তিতে আমরা এসব দিচ্ছি, যেন আমাদের জেলা শিল্পকলা একাডেমি সাংস্কৃতিক উন্নয়নে কাজে লাগতে পারে।“
প্রতিমন্ত্রী বলেন, টাঙ্গাইলের যে ভাসানী হল আছে, তার সেটির ডিপিপি প্রণয়ন প্রায় চূড়ান্ত। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে হয়ে যাবে বলে তিনি আশা করছেন।
“বিভিন্ন প্রকল্প আছে আমাদের, প্রত্যেক উপজেলায় একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা আছে, যেখানে একটি সিনেপ্লেক্স থাকবে, লাইব্রেরি থাকবে। আমরা ১০০টি উপজেলাকে টার্গেট করে যাচ্ছি, ৩৫টি উপজেলার ডিপিপি প্রায় চূড়ান্ত।“
বাংলা একাডেমিতে আদর্শ প্রকাশনীর স্টল বরাদ্দ না পাওয়া নিয়েও প্রশ্ন আসে। তার উত্তরে মন্ত্রী বলেন, “বাংলা একাডেমির একটি নীতিমালা আছে সে অনুযায়ী যারা স্টল পাবার তারা পাবে। মত প্রকাশের অধিকার সবার আছে, কিন্তু এর মানে এই না যে কেউ আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব পতাকা নিয়ে কটাক্ষ করবে। এসবের বাইরে সবার মত প্রকাশের সর্বোচ্চ সুযোগ আছে।“
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]