শিরোনাম
‘ছাত্ররাজনীতি বন্ধ নয়, আদর্শিক ধারায় ফেরাতে হবে’
প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০১৯, ১২:৩৯
‘ছাত্ররাজনীতি বন্ধ নয়, আদর্শিক ধারায় ফেরাতে হবে’
সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস
মহিউদ্দিন রাসেল
প্রিন্ট অ-অ+

দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অতি পরিচিত ও নন্দিত মুখ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। দীর্ঘদিনের কঠোর পরিশ্রম, নিরলস প্রচেষ্টা, সততা আর নিষ্ঠার সঙ্গে এ সেক্টরে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন তিনি। শুধু সাংস্কৃতিক অঙ্গন নয়, ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতির মাঠেও ছিল তার উজ্জ্বল বিচরণ। ১৯৭৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সদস্য ছিলেন তিনি।


দায়িত্ব পালন করেছেন ডাকসুর ভারপ্রাপ্ত সহ সভাপতি (ভিপি) হিসেবে। ১৯৮০-৮১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হল ছাত্রসংসদসহ সভাপতি (ভিপি) ছিলেন।১৯৯৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। একেবারে তৃণমূল থেকে নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে উজ্জ্বল ছাত্ররাজনীতি করেছেন গোলাম কুদ্দুছ।


সম্প্রতি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ছাত্ররাজনীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিবার্তার সাথে একান্ত আলাপচারিতায় কথা বলেছেন তিনি। তার দীর্ঘ আলাপের বিশেষ অংশটুকু বিবার্তার পাঠকদের জন্য এখানে তুলে ধরা হলো।


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতে গোলাম কুদ্দুছ


বিবার্তা: ছাত্র রাজনীতিতে জড়ালেন কীভাবে?


গোলাম কুদ্দুছ: আমি গ্রামের স্কুলে ক্লাস সেভেন পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। ১৯৬৮-৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের সময় মিছিলে অংশ নিয়ে আমরা বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে আন্দোলন করেছিলাম। আমার স্পষ্ট মনে আছে, আমরা সেইসময় মুসলিম লীগের এমপির বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছিলাম। পরে এ ঘটনায় মামলা হয়েছিল। যার ফলে আমি পালিয়ে নানার বাড়ি চলে গিয়েছিলাম।


এরপর চট্টগ্রাম মুসলিম হাইস্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হই। আর এ স্কুলে থাকাকালীন আমি ছাত্ররাজনীতির সাথে সক্রিয় হই। পূর্ব পাকিস্তান অবিভক্ত ছাত্রলীগের কর্মী ছিলাম আমি। এ স্কুলে আমি প্রথম কমিটি গঠন এবং স্মরণিকা প্রকাশ করি। ১৯৭২ সালে চট্টগ্রাম শহর ছাত্রলীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য হই দশম শ্রেণির ছাত্র থাকাবস্থায়।


এরপর আমি সবুর স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীতে যোগদান করি। ওই বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন মৌলভী সৈয়দ আহমেদ। কলেজজীবনে চট্টগ্রাম কলেজে থাকাকালীন রাজনীতি বিভক্ত হলে আমি জাসদের সাথে যুক্ত হই। তার আগে আমি অবিভক্ত ছাত্রলীগের দায়িত্বে ছিলাম। বিভক্ত হওয়ার পর জাসদ ছাত্রলীগে ১৯৭৩ সালে চট্টগ্রাম শহর কমিটির সাহিত্য সম্পাদক মনোনীত হই এবং চট্টগ্রাম কলেজ শাখার দফতর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করি।


১৯৭৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই এবং এখানে সার্বক্ষণিক রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ি। এসময় সামরিক শাসক বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করি। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের দাবিতে আমরা সোচ্চার ছিলাম।


ছাত্ররাজনীতির সার্বক্ষণিক কর্মী ছিলাম আমি। যার ফলে জাসদ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদ পাই। ১৯৭৯ সালে ডাকসুর সদস্য হই এবং তিনমাস ভারপ্রাপ্ত ভিপির দায়িত্ব পালন করি। ১৯৮০-৮১ হাজী মুহাম্মাদ মুহসীন হলে ভিপির দায়িত্ব পালন করেছি। তারপরে জাসদ বিভক্ত হয়ে যাওয়ার পরে বাসদে ছিলাম। কিন্তু বাসদ যখন বিভক্ত হয়ে যায়, তখন আমি ১৯৮৩ সাল থেকে প্রত্যক্ষ দলীয় রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম না। তখন দলীয় রাজনীতি থেকে সরে আসি।


১৯৭৬ সালে জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনের সময় একবার দেয়ালে চিকা মারতে গিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে থেকে গ্রেফতার হই।


আমি স্কুলজীবনে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিলাম এবং চট্টগ্রাম কলেজে থাকাকালীন কালান্তর সাংস্কৃতিক সংগঠন গড়ে তুলি এবং এ সংগঠনের সেক্রেটারি ছিলাম। ঢাকাতে এসে ১৯৭৫ সালে কালান্তর নামে নাট্য সংগঠন গড়ে তুলি। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে ঢাকা পতাতিক সংগঠনসহ আরো অনেক সংগঠন হয়েছে।


সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয়ার সময় গোলাম কুদ্দুছ


বিবার্তা: আপনাদের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সে সময়ের সামগ্রিক ছাত্র রাজনীতির চরিত্রটি কেমন ছিল?


গোলাম কুদ্দুছ: আমাদের সময় ছাত্ররাজনীতি ছিল সম্পূর্ণ আদর্শিক ছাত্ররাজনীতি। ছাত্রদের পড়াশোনা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং আদর্শগতভাবে আমরা লড়াই করেছি। তখন সমস্ত ছাত্রসংগঠনগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগী সংগঠন ছিল। তবে তখন লেজুড়ভিত্তি ছিল না। ছাত্র সংগঠনগুলো স্বাধীনভাবে তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করত এবং ছাত্ররাই ছাত্ররাজনীতির সাথে যুক্ত ছিল। ছাত্রসংগঠনগুলো গঠনতন্ত্র মেনে নিয়মিত সভা করতো, সম্মেলন করত, প্রশিক্ষণ কর্মশালা করত এবং সাধারণ ছাত্রদের দৈনন্দিন নানাবিধ সমস্যা নিয়ে ছাত্রসংগঠনগুলো কাজ করত। এর বাহিরে জাতীয় রাজনৈতিক উস্যুগুলোতেও ছাত্রসংগঠনগুলো সক্রিয় ছিল। আমাদের সময় ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে একটা মতাদর্শগত ঐক্য ছিল, সেটি এখন আর নেই। তখন আরেকটি বৈশিষ্ট্য ছিল, ছাত্রনেতারা সে যে দলেরই হোক না কেন, তারা হলে অবস্থান করতে পারতেন। ছাত্রসংগঠনগুলোর সেই ঐতিহ্য এখন আর দেখা যায় না।


বিবার্তা: তখন কী ধরনের ইস্যুতে ছাত্র সংগঠনগুলো আন্দোলন করতো?


গোলাম কুদ্দুছ: ছাত্রদের নানা ধরনের ইস্যুতে তখন ছাত্র সংগঠনগুলো আন্দোলন করতো। আমাদের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের পরিবহন ব্যবস্থা ছিল না। আর এ ঘটনায় ছাত্র সংগঠনগুলো আন্দোলন করেছিল। আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য যে পরিবহন ব্যবস্থা, সেটি আমাদের ১৯৭৯ সালের ডাকসুর সময়ের করা। ছাত্রদের জন্য সিটের ব্যবস্থা করা, হলের সংখ্যা বাড়ানো, ছাত্র বেতন কমানো, ডাইনিংয়ে খাবারের মান বৃদ্ধি করা, লাইব্রেরিতে বইয়ের সংখ্যা বাড়ানো, খেলাধুলা-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের উন্নয়ন করাসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়েই ছাত্রসংগঠনগুলো আন্দোলন করত। এছাড়া জাতীয় ইস্যুগুলোকেও বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে ছাত্রসংগঠনগুলো আন্দোলন করত।


বিবার্তা: মুহসীন হলের ভিপি, ডাকসুর সদস্য এবং ডাকসুতে ভারপ্রাপ্ত ভিপির দায়িত্ব পালন করেছেন। এসব দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা জানতে চাই।


গোলাম কুদ্দুছ: আমার অভিজ্ঞতা হলো, আমি হলের ভিপি থাকাকালে হলের ডাইনিংয়ের অবস্থা খুবই নাজুক ছিল। চেয়ার-টেবিলও তেমন একটা ছিল না। দুপুর বেলা যখন এটাস্ট ছাত্ররা খেতে আসত, তখন তাদের অনেককে দাঁড়িয়ে খাবার খেতে হতো। খাবার খাওয়ার জন্য লম্বা লাইন হয়ে যেত। তখন টেলিভিশন রুমের চেয়ার এনে ডাইনিংয়ে খেতে হতো। হলের গেস্টরুমে সোফা থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ছিল না। আমি এসব সমস্যা সমাধানে আন্দোলন করেছি। দাবি আদায়ে আমি রেজিস্টার বিল্ডিংয়ে তালা লাগিয়ে দিয়েছি। দাবিগুলোও আমার নেতৃত্বে আদায় হয়েছে। শিক্ষার্থীদের যে কোন সমস্যা দেখলে সমাধান করেছি। প্রয়োজনে আন্দোলনের ডাক দিয়েছি। সেই সময় আমরা সামরিক শাসক এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে আন্দোলন করেছিলাম। সম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি।


গণসচেতনতা কার্যক্রমে গোলাম কুদ্দুছ


বিবার্তা: জাতীয় রাজনীতিতে তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ডাকসুর প্রভাব কেমন ছিল?


গোলাম কুদ্দুছ: জাতীয় রাজনীতিতে আমরা যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কথাই বলি, তাহলে ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের কথাই বলা যায়। সেই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছিল ডাকসুর তৎকালীন ভিপি তোফায়েল আহমেদ। জাতীর যে কোন ক্রান্তিলগ্নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ডাকসুর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ছিল।


পরবর্তী পর্যায়ে প্রায় ২৮ বছর ডাকুস নির্বাচন হয়নি। এই প্রজন্ম তো প্রায় ভুলেই গিয়েছিল যে, ডাকসু কি কি করতে পারে? ডাকসুর করণীয় কি?ডাকসুর গুরুত্ব কি ? অবশেষে ২৮ বছর পর চলতি বছর সেকেন্ড পার্লামেন্ট হিসেবে খ্যাত ডাকসু নির্বাচন হলো। আর এ নির্বাচনকে চলমান রাখতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, ছাত্ররাজনীতিকে স্বাধীনভাবে করার অধিকার দিতে হবে। নিয়মিত সম্মেলন হতে হবে, গঠনতন্ত্র মেনে চলতে হবে ছাত্র সংগঠনগুলোকে, ছাত্রদের হাতে ছাত্রদের রাজনীতি থাকতে হবে, লেজুড়বৃত্তি পরিহার করতে হবে। তাহলে ছাত্র রাজনীতি তার গৌরবোজ্জ্বল দাঁড়ায় ফিরে আসবে।


বিবার্তা: আপনাদের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কটি কেমন ছিল? এখন কি তেমনটি আছে?


গোলাম কুদ্দুছ: এখন যেহেতু আমি সরাসরি ছাত্র নই। তাই এ ব্যাপারে আমার অভিজ্ঞতা নেই। কিন্তু গণমাধ্যমে যা দেখি, তাতে আমি হতাশ হই। এখন শিক্ষকরা অনেকক্ষেত্রে দলীয় আচরণ করছেন। যে কারণে ভিন্নমতের ছাত্রদের কাছে শিক্ষকের সম্মানের জায়গাটা আর থাকে না। আর সেটার প্রতিফলন যদি ক্লাসরুমে থাকে, রেজাল্টে থাকে, তাহলে ছাত্র- শিক্ষকের সম্পর্কের অবনতি ঘটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। কাজেই আমি মনে করি যে, শিক্ষকদের রাজনীতি থাকবে শিক্ষকদের মধ্যে। ছাত্রদের মধ্যে শিক্ষকদের রাজনীতি ঢুকানো উচিত নয়। প্রতিটি শিক্ষকের নাগরিকতা থাকবে, দেশপ্রেম থাকবে সেটাই তো স্বাভাবিক। একজন শিক্ষক যদি সর্বজনীন না হয়, তাহলে শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হবে।


বিবার্তা: আপনাদের সময় আর এখনকার ছাত্ররাজনীতির মধ্যে কোনোপার্থক্য দেখছেন কিনা...?


গোলাম কুদ্দুছ: আমাদের সময়ের ছাত্ররাজনীতি সমাজের প্রতি যে প্রভাব ছিল, বর্তমান ছাত্ররাজনীতি তেমন অবস্থায় নেই। কেন নেই? সেটি ছাত্রনেতা ও রাজনৈতিক নেতাদের খুঁজে বের করতে হবে। যাতে ছাত্ররাজনীতি তার আপন স্বরূপে ফিরে আসে।


বিবার্তা: সম্প্রতি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন?


গোলাম কুদ্দুছ: প্রথমত, বুয়েটে যে ঘটনাটি ঘটলো সেটি নির্মম। তবে এটি বাংলাদেশের একমাত্র নির্মম ঘটনা নয়। বুয়েটে ২০১৪ সালে ছাত্রশিবিরের হাতে ছাত্রলীগের দ্বীপ নামের একজন খুন হয়। তারপর সনি হত্যাকাণ্ড হয়েছে বুয়েটে। সমস্ত হত্যাকাণ্ড নিন্দনীয়। এবার আবরার হত্যার পরে সরকার যেভাবে তড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, সেটি আমাদের মাঝে আশার সঞ্চার করেছে। এ হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচারটি হবে বলে আশা করছি।


আর বুয়েটে ছা্ত্ররাজনীতি ছাত্রদের আবেগের প্রতি সম্মান দেখিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটাকে আমি নেতিবাচকভাবে দেখি না। তবে এটি সারাদেশের ছাত্ররাজনীতির ওপর প্রযোজ্য হবে বলে আমি মনে করি না। তার কারণ হলো ছাত্ররাজনীতি অবশ্যই প্রয়োজন।


তবে ছাত্ররাজনীতির মধ্যে যে অনাচার ঢুকেছে, সেটাকে পরিষ্কার করে ছাত্ররাজনীতিকে তার আপোষহীন সৎ জায়গায় আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। এটাই হলো মূলকথা। বন্ধ করে দেয়া কোন সমাধান নয়। তাই ছাত্ররাজনীতি বন্ধ নয়, আদর্শিক এবং স্বাধীন ধারায় ফেরাতে হবে। ছাত্রদের মধ্যে ছাত্ররাজনীতি সীমাবদ্ধ থাকতে হবে।


ছাত্ররাজনীতির সংগ্রামী আপোষহীন যে ধারা, স্বাধীন যে ধারা, আদর্শিক যে ধারা, সে ধারায় ছাত্ররাজনীতি পরিচালিত হতে হবে। তার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে ভূমিকা রাখতে হবে, সুশীল সমাজকে ভূমিকা রাখতে হবে, গণমাধ্যমকে ভূমিকা রাখতে হবে, সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে ভূমিকা রাখতে হবে। বাংলাদেশের ইতিহাসই ছাত্ররাজনীতির ইতিহাস। ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসও ছাত্ররাজনীতির ইতিহাস। সুতরাং সেই ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করতে হবে। পরিত্যাগ করে নয়।


সাক্ষাৎকার গ্রহণ শেষে গোলাম কুদ্দুছের সাথে বিবার্তার স্টাফ রিপোর্টার মহিউদ্দিন রাসেল


বিবার্তা: রাজনীতির মাঠ থেকে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সাথে কীভাবে জড়ালেন?


গোলাম কুদ্দুছ: আমি রাজনীতি এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড দুটাই করে বড় হয়েছি। সংস্কৃতি সমাজের প্রতিচ্ছবি। একজন রাজনৈতিক ব্যক্তি যে উদ্দেশে সমাজের জন্য কাজ করেন, একজন দায়বদ্ধ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিও একইভাবে সমাজের জন্য কাজ করেন। সুতরাং আমি মনে করি, একজন উন্নত সংস্কৃতি কর্মী প্রকৃত আদর্শিক রাজনৈতিক কর্মী হতে পারে। রাজনীতি আর সংস্কৃতি একটি আরেকটির পরিপূরক।


বিবার্তা: সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট গঠনের সাথে রাজনৈতিক আন্দোলনের সম্পৃক্ততা কেমন ছিল?


গোলাম কুদ্দুছ: এটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিকভাবে গঠন করা হয়েছে। কারণ এরশাদ ক্ষমতায় থাকাকালীন একবার দম্ভ করে বলেছিলেন, এখন থেকে শহীদ মিনারে আর আলপনা আঁকা যাবে না। তবে প্রভাতফেরি হবে। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট গঠন করা হয়েছে। সুতরাং এ সংগঠনটি আদর্শিকভাবে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে, বাঙালির সংস্কৃতিকে লালন করতে গিয়ে, স্বৈরশাসক, সামরিক শাসকের দম্ভকে মোকাবেলা করতে গিয়ে গঠন করা হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ আদর্শিক সংগঠন। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও অসম্প্রদায়িক চেতনাকে আমরা লালন করি।


বিবার্তা/রাসেল/উজ্জ্বল/এরশাদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com