গাজায় সেনা প্রত্যাহার শুরু, নিজ বাসভূমিতে ফিরছেন ফিলিস্থিনিরা
প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:০৬
গাজায় সেনা প্রত্যাহার শুরু, নিজ বাসভূমিতে ফিরছেন ফিলিস্থিনিরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর ও ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার শুরুর পর নিজ বাসভূমিতে ফিরে আসছেন গাজার ফিলিস্থিনিরা। ইতোমধ্যে কয়েকটি এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।


তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদনের বরাতে জানা গেছে, শুক্রবার থেকে ইসরায়েল-গাজা সীমান্তের ‘ইয়েলো লাইন’ ক্রসিং দিয়ে সেনাদের ফিরিয়ে আনা শুরু হয়েছে।


শনিবার পর্যন্ত গাজার মধ্যাঞ্চলীয় শহর গাজার সিটির শেজাইয়া, আল তুফাহ এবং জেইতুন এলাকা, দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের পূর্বাংশ এবং দক্ষিণাংশ থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছে।


ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পর্যায়ক্রমে গাজার অন্যান্য এলাকা থেকেও সেনাদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।


এদিকে ইসরায়েল সেনা প্রত্যাহার শুরুর পর নিজ বাসভূমি ফিরে আসছেন গাজার ফিলিস্থিনিরা। শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েক লাখ ফিলিস্তিনি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে নিজেদের এলাকায় ফিরে এসেছেন।


শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সারাদিন দক্ষিণ গাজার অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে উত্তর গাজায় ফিরে গেছেন হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। যানবাহনের পরিমাণ কম এবং তেলের সংকট থাকায় অধিকাংশ ফিলিস্তিনি যাত্রা করেছেন পায়ে হেঁটে।


একই ভাবে দক্ষিণ গাজার যেসব বাসিন্দা গাজার মধ্যঞ্চলীয় শহর গাজা সিটি এবং পূর্ব গাজায় আশ্রয় নিয়েছিলেন, তারাও নিজ নিজ এলাকায় ফেরা শুরু করেছেন। বাড়ি ফেরার জন্য সমুদ্রের তীরবর্তী আল রশিদ স্ট্রিট এবং সালাহ আল দীন রোড— এ দু’টি সড়ক ব্যবহার করছেন তারা।


ইসরায়েলি বাহিনীর গত ২ বছরের অভিযানে গাজার ৯০ শতাংশ ভবন সম্পূর্ণ ধ্বস হয়ে গেছে, বাকি ১০ শতাংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত। ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোর একটি বড় অংশই ঘরবাড়ি।


ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান থেকে জীবন বাঁচাতে যারা নিজেদের এলাকা ও বাড়িঘর ছেড়ে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাদের অধিকাংশের বাড়িঘর এখন ধ্বংস্তূপ। যেসব ফিলিস্তিনি ইতোমধ্যে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে গেছেন, তারা তাঁবু খাটিয়ে বসবাস করছেন।


গাজার সরকারি মিডিয়া দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনিদের খাদ্য, স্বাস্থ্য ও মানবিক সহায়তা এবং ধ্বংস্তূপের তলায় আটকে থাকা মৃতদের দেহাবশেষ উদ্ধার করতে ইতোমধ্যে উপত্যকাজুড়ে ৫ হাজার মিশন শুরু হয়েছে।


গত ২৯ সেপ্টেম্বর সোমবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন ও দপ্তর হোয়াইট হাউসে গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত নতুন একটি পরিকল্পনার ব্যাপারে ঘোষণা দেন ট্রাম্প। ইসরায়েল এবং গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস সম্মতি জানানোর পর ১০ অক্টোবর শুক্রবার গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল।


২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা এবং ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর ইসরায়েলের গত ৭৭ বছরের ইতিহাসে এটি ছিল সবচেয়ে বড় ও প্রাণঘাতী হামলা।


হামাসের এই হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের উদ্ধার করতে পরের দিন ৮ অক্টোবর থেকে গাজায় সামরিক অভিযান ‍শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। সেই অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, আহত হয়েচেন আরও প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার।


বিবার্তা/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com