বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু সংক্রমণ। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার এই সময়টাতে ডেঙ্গুর সংক্রমণ দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা না গেলে পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসেব অনুযায়ী, শুধু জুলাই মাসেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ১,৯২০জন, যা ২০২০ সালে সারা বছর জুড়ে আক্রান্ত সংখ্যার চেয়েও বেশি।

২০২০ সালে সালে ১,৪০৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন, আর চলতি বছরের প্রথম সাত মাসেই ২,২৯২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমান বলেন, এবছর যে ডেঙ্গু সংক্রমণ বেশি হবে তা তারা আগেই সন্দেহ করেছিলেন। এর কারণ হচ্ছে, ভাইরাসজনিত রোগের ক্ষেত্রে প্রতি এক বছর অন্তর অন্তর সংক্রমণের সংখ্যা বেশি হয়।

এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, এখন যেহেতু করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার উর্ধ্বমুখী, চারপাশে অনেক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, তাই কারো জ্বর আসলেই ধরে নেয়া হয় যে তার কোভিড হয়েছে।কোভিড আর ডেঙ্গু-দুই ক্ষেত্রেই জ্বরের উপসর্গটি সাধারণ হওয়ার কারণে এই সমস্যাটি হচ্ছে।

এছাড়া ডেঙ্গু রোগের পরীক্ষার ফল আসতেও কিছুটা সময় লেগে যায়। যার কারণে ডেঙ্গু রোগীদের জটিলতা বেশি হচ্ছে এবং তাদের তখন হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়।

অন্যদিকে কোভিডের কারণে হাসপাতালে শয্যা পাওয়া যাচ্ছে না, কারণ কোন শয্যা খালি থাকছে না।ফলে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা থেকে অনেকটাই অবহেলিত ও বঞ্চিত।

তিনি বলেন, দুটো মহামারি যদি একত্রে চলমান থাকে, তাহলে মানুষের জীবনের জন্য একটি প্রবল হুমকি হয়ে যাবে, এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কখনোই এই চাপ নিতে সক্ষম হবে না।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র ডা. রোবেদ আমিন বলেন, হাসপাতালের আইসিইউগুলো কোভিড রোগীদের চিকিৎসাতেই বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে ডেঙ্গু রোগীরা কিছুটা সংকটের মুখে পড়ছেন।এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে নন-কোভিড কয়েকটি হাসপাতালগুলোকে ডেঙ্গুর জন্য নির্ধারিত করা যায় কিনা সে বিষয়ে চিন্তা করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ৬৪২ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে ৬১৮ জনই ঢাকায়। চলতি বছরে এ পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ঢাকায় আক্রান্তের সংখ্যা দুই হাজার ২২৫ জন। আর ঢাকার বাইরে এই সংখ্যা ৬৭ জন। সূত্র: বিবিসি।

বিবার্তা/আবদাল