
দুই বছর ধরে গাজায় আটকে থাকা ইসরায়েলি জিম্মিরা সোমবার মুক্তি পেতে পারেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
তিনি বুধবার ফক্স নিউজের ‘হ্যানিটি’ অনুষ্ঠানে জিম্মি মুক্তির এ সম্ভাব্য তারিখ জানান, বলেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট গাজা যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ নিয়ে ইসরায়েল ও হামাস সম্মত হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর হামলার সময় আড়াইশ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল। দুই বছরের যুদ্ধে অনেক জিম্মি মারা পড়েছে, গত বছরের শেষদিকে হওয়া এক যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী অনেকে ছাড়াও পেয়েছে। তবে হামাসের হাতে এখনও ৪৮ ইসরায়েলি জিম্মি আছে এবং এদের মধ্যে ন্যূনতম ২০ জন জীবিত বলে অনুমান করা হচ্ছে।
“আমাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ নিয়ে ইসরায়েল ও হামাস উভয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, এটি ঘোষণা করতে পেরে আমি খুব গর্বিত,” নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন ট্রাম্প।
তিনি বলেছেন, “এর অর্থ হল দ্রুতই সব জিম্মি মুক্তি পাবে এবং সমঝোতা অনুযায়ী ইসরায়েল তাদের সেনাদের একটি লাইন বরাবর প্রত্যাহার করবে। এটি হবে একটি দৃঢ়, টেকসই ও চিরস্থায়ী শান্তির প্রতি প্রথম পদক্ষেপ।”
এর আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, একটি চুক্তি প্রায় হয়ে গেছে এবং আসছে সপ্তাহান্তে তিনি মিশরে যেতে পারেন, সম্ভবত শনিবারই দেশ ছাড়তে পারেন। তিনি মিশরের পাশাপাশি ইসরায়েলেও যেতে পারেন বলে অ্যাক্সিওস জানিয়েছে।
এ বিষয়ে হোয়াইট হাউজ তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, চুক্তি অনুমোদনের জন্য বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকবেন তিনি।
হামাস জানিয়েছে, যুদ্ধ শেষ করার লক্ষ্যে তারা একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। এই চুক্তিতে গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর প্রত্যাহার এবং জিম্মি-বন্দি বিনিময়ের বিষয়গুলো আছে।
ইসরায়েল যেন যুদ্ধবিরতি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করে তা নিশ্চিত করতে ট্রাম্প ও অন্যদের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে তারা।
গাজার সীমান্ত অতিক্রম করে ইসরায়েলে হামাসের আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় ফিলিস্তিনি ছিটমহলটিতে ইসরায়েলের শুরু করা ধ্বংসাত্মক হামলার দুই বছর পূর্তির মাত্র একদিন পর মিশরে দুই পক্ষের পরোক্ষ আলোচনায় এই অগ্রগতি হয়েছে।
যদি এই চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয় তাহলে গাজা যুদ্ধ থামানোর আগের যে কোনো প্রচেষ্টার তুলনায় এবারই দুই পক্ষ বেশি কাছাকাছি আসবে। এই যুদ্ধ এরই মধ্যে গাজা থেকে ছড়িয়ে একটি আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ নিয়েছে, এতে ইরান, ইয়েমেন ও লেবানন জড়িয়ে পড়েছে, ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা আরও গভীর হয়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক চেহারা পরিবর্তিত হয়ে গেছে।
এই চুক্তি গাজা ভূখণ্ডে অবিলম্বে অতি প্রয়োজনীয় মানবিক ত্রাণ পাঠানোর পথও করে দিতে পারে। ফিলিস্তিনি ছিটমহলটির পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ দুর্ভিক্ষের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলে অগাস্টে বৈশ্বিক এক অনাহার পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিয়েছিল।
গাজার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুই বছর ধরে চলা ইসরায়েলের অবিরাম নৃশংস হামলায় ভূখণ্ডটিতে ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং অব্যাহত বোমাবর্ষণে ছিটমহলটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]